অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের মধ্যে দুই দিনব্যাপী সংর্ঘের ঘটনার পুরো দায়ভার বিএনপির উপর চাপিয়ে দিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যে দোকান মালিক ও বিএনপি নেতা মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর উস্কানিদাতা হিসেবে যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা সবাই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। সংঘর্ষ পরবর্তী সরকার ও পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে-বিএনপির সাথে ঢাকা কলেজ ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়েছে।
কিন্তু গণমাধ্যম বলছে ভিন্ন কথা। ছাত্রলীগ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের মূল কারণ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। দুই দোকানের কর্মচারীদের মধ্যে প্রথমে ইফতার বিক্রির টেবিল বসানো নিয়ে ঝগড়া হয়। তারা সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই। পরে এক ভাই অপর ভাইয়ের উপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রাতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাদের নিয়ে আসে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আসা ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ব্যবসায়ীরা পাল্টা প্রতিরোধ করলে তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে মিথ্যা কথা বলে সাধারণ ছাত্রদের উস্কানি দেয়। তারা জানায় কেনাকাটা করতে গেলে ব্যবসায়ীরা তাদেরকে মারধর করেছে। যা সম্পুর্ণ বানোয়াট। এরপরই কলেজ ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ীদের উপর হামলা চালায়।
জানা গেছে, ওই দুইটি দোকানের মূল মালিক বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন। তিনি সিটি করপোরেশন থেকে বরাদ্দ নিয়ে ভাড়া দিয়েছেন। এই কারণে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে ওই বিএনপি নেতাকে। আর দুইদিন ব্যাপী সংঘর্ষের উস্কানিদাতা হিসেবে বিএনপির আর ২৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল-তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষে দুইজন মানুষ মারা গেছে। সরকার এই দায়ভার বিএনপির উপর চাপাচ্ছে কেন? বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার ও হয়রানি করছে কেন?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি মাঠের তৎপরতা দেখে অনেকটা আতঙ্কে সরকার। এজন্য তাদেরকে দমন করারও কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা। যার কারণে বিএনপিকে ঘায়েল করতেই এই ইস্যুকে ব্যবহার করছে তারা। তারপর ঈদের পর বিএনপি আন্দোলনে নামবে এমন বার্তাও সরকারের কাছে হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। তাই বিএনপিকে চাপে রাখার জন্য মূলত ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ ও নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনাকে সরকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
রাজনীতি বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ বলছেন, বিএনপি নেতা মকবুল দোকান ভাড়া দিয়েছেন। তিনি নিজে দোকান চালান না। যারা দোকান দুইটি চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। এই সংঘর্ষের দায়ভার বিএনপি নেতা নেবে কেন? এখানে বিএনপি নেতাকর্মীরা কি দোষ করেছে? হয়তো যারা নিউমার্কেটে ব্যবসা করছেন তাদের মধ্যে বিএনপি সমর্থক লোকজনও থাকতে পারে। তাই বলেতো ঘটনর দায় বিএনপির উপর চাপাতে পারে না।
বিশ্লেষকরা কলছেন, এই ঘটনাকে সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করছে। যেটা আওয়ামী লীগ বিগত ১২ বছর ধরেই করে আসছে। দেশে যেকোনো ঘটনা ঘটলেই কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়া সেটার দায়ভার বিএনপি-জামায়াতের উপর চাপিয়ে দেয় সরকার। নিউমার্কেটের ঘটনাকেও সরকার সেইভাবেই কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই বিএনপির উপর চাপাচ্ছে। কারণ, সরকারের উদ্দেশ্য এটা দিয়ে বিএনপিকে ঘায়েল করা।
Discussion about this post