লেনিন শুভ্র
কোন দিকে যাচ্ছে আমাদের প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশ? অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ও তার দলের লোকেরা জবাব দিবে, বাংলাদেশ এখন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ইউরোপের মতো উন্নত হতে যাচ্ছে। আর হাসিনার ভাষায়তো-বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নয়নের রুল মডেল। হাসিনার মডেলকে এখন অনুসরণ করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু শেখ হাসিনার এই মডেলের শেষ পরিণতি কি হবে? এই বিষয়ে জানতে আমরা একটু শ্রীলংকা ঘুরে আসতে পারি।
শ্রীলংকার রাজা পাকসে দেশটিকে সিঙ্গাপুর বানাতে গিয়ে হাতে নেয় শতশত মেগা প্রজেক্ট! ঋণ আর মূল্যস্ফিতি ব্যালেন্স করতে না পেরে একের পর এক প্রজেক্টগুলোতে ধরা খেতে থাকে। অনেকগুলো মাঝপথেই থমকে যায়! মূলত দেশটি এখন দেউলিয়া! কাগজের অভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। সংবাদপত্র আর ছাপানো যাচ্ছে না। চালের কেজি ৫০০টাকা। দেশটির প্রধান ইনকাম সোর্চ পর্যটন খাত এখন হাহাকার অবস্থা। সবকিছুর খরচ এতটাই বেড়েছে যে কেউ সমুদ্র এলাকায় ঘুরতে যাওয়ার সাহসই করছেন না।
১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকেনা, ইলেক্ট্রিক বাতির পরিবর্তে কেরোসিনের কুপি জ্বালছে ঘরে ঘরে! বেকারত্ব আর আর্থিক দৈন্যদশায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে চলে যাচ্ছেন দেশটির যুব সমাজ। ব্যাংকিং কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে! চীন, ইরান, কোরিয়া, ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশ থেকে ঋণ নিয়ে অর্থনীতি চালু রাখার চেষ্টা করা হলেও শেষ রক্ষা মনে হয় হচ্ছে না। ইতোমধ্যে দেশটি দেউলিয়া ঘোষণার সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে।
যেখানে সিঙ্গাপুর হওয়ার কথা ছিল, সেখানে দেশটি আজ দেউলিয়া হতে যাচ্ছে কেন? কি কারণে এই পতন? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অপরিকল্পিত নগরায়ন, আধুনিকায়ন, মেট্রোরেল, মেগাসেতু, পাতাল রেল, শিল্প কারখানা করতে গিয়ে কোনটাই ব্যাটেবলে তাদের চিন্তা অনুযায়ী মিলেনি। এমনকি অর্গানিক ফুড উৎপাদন করতে গিয়ে কৃষিতেও পিছিয়ে পড়েছে শ্রীলংকা।
এছাড়া সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে সরকারের দুর্নীতি। বলা যায়-দেশটিতে এখন দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। এছাড়া মূদ্রা পাচার, ঋণখেলাপীও দেশটির জাতীয় রিজার্ভকে ঠুনকো করে দিয়েছে।
এমন অপরিকল্পিত মেগা প্রজেক্ট করে ঋণের ফাঁদে পড়ে এর আগে গ্রীস দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল। ইউরোপীয় রাষ্ট্র গুলো গ্রীসকে সেখান থেকে তুলে আনলেও যেই সরকারের অপরিকল্পিত চিন্তার ফসলের জন্য দেশটি দেউলিয়া হয়েছিল নতুন সরকার আসার পরে গ্রীসের জনগণ ধরে ধরে পানিশমেন্ট দিয়েছিল সেই সরকারে থাকা কর্তাব্যক্তিদেরকে।
তাহলে দেখা গেছে, যেসব কারণে শ্রীলংকা আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে, সবগুলো কারণই কিন্তু বাংলাদেশে আছে। বিদেশি
ঋণ নিয়ে শেখ হাসিনা শত শত মেগাপ্রকল্প খুলেছে। সবগুলোই হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে। বলা যায়-পুরো বাংলাদেশ এখন বিদেশিদের দখলে। কারণ হাসিনার সব প্রকল্পের মালিকই বিদেশিরা।
এরপর, দুনীতি, অর্থপাচার ও মূল্যস্ফিতি শ্রীলংকার চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা আরও ভয়াবহ। আসলে সরকারের কোষাগারে এখন আর দেশ চালানোর মতো টাকা নেই। তাই সরকার বিদেশিদেরকে ডাকছে বাংলাদেশে এসে ব্যবসা করতে।
সরকার এখন শুধু চাপার জোরে টিকে আছে। পুরো দেশ এখন চায়নার দখলে। চায়না যদি রশি ধরে টান দেয় তাহলে অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর গায়ে আর রঙ্গিন সাড়ি থাকবে না। সব খুলে যাবে। আর বাংলাদেশের অবস্থাও এখন শ্রীলংকার মতোই হচ্ছে। যেকোনো সময় হাসিনার বায়ুবীয় অর্থনীতি ধসে পড়তে পারে।
Discussion about this post