অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
খুন-গুম-হত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সাত কর্মকর্তাসহ র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিগত কয়েক বছর ধরেই দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন মহল থেকে র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে। কিন্তু শেখ হাসিনাও তার মন্ত্রীরা এসব অভিযোগকে মোটেও পাত্তা দেয়নি। একটা পর্যায়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লো র্যাব।
বিশিষ্টজনসহ সাধারণ মনে করেছিল-মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর র্যাবের কর্মকান্ডে পরিবর্তন আসবে। খুন-গুমসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কর্মকান্ড থেকে ফিরে আসবে সংস্থাটি। কিন্তু বিশিষ্টজনদের এসব ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার পর র্যাব তাদের কর্মকান্ড থেকে চুল পরিমাণও দূরে সরেনি। বরং মনে হচ্ছে-র্যাব এখন মানুষের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ নিচ্ছে।
দেখা গেছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর কয়েকদিন চুপচাপ ছিল র্যাব। কোনো বন্দুক যুদ্ধ বা হত্যাকান্ঘডের টনা ঘটেনি। কিন্তু খুন-গুম আর হত্যা যাদের নেশা তারা কি আর এসব থেকে বিরত থাকতে পারে? আগে বন্দুকযুদ্ধের নামে গুলি করে মানুষকে হত্যা করতো। আর এখন জীবন্ত মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা শুরু করেছে।
জানা গেছে, রাজধানীর অদূরে টঙ্গিতে শনিবার আসাদুল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে হানা দেয় র্যাবের একটি দল। র্যাবের দাবি আসাদুল মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। কিন্তু আসাদুল বার বার বলছে-তিনি মাদকের সাথে জড়িত নয়। তার স্ত্রী-সন্তানও বলছে-আসাদুল এসবের সাথে জড়িত নয়।
মাদকের স্বীকারোক্তি নেয়ার জন্য র্যাব এক পর্যায়ে আসাদুলের উপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করে। এমনকি নির্যাতনের সময় আসাদুলের ছেলেকে অন্য একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। টানা চার ঘন্টা নির্যাতন করে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে গাড়িতেই সে মারা যায়। পিটিয়ে হত্যা করে র্যাব গণমাধ্যমকে জানিয়েছে-তাদের সাথে ধস্তাধস্তি করে আসাদুল মারা গেছে।
এদিকে, দেশের গণমাধ্যমগুলোতে র্যাবের নির্যাতনে আসাদুলের মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর র্যাবকে নিয়ে আবার শুরু হয়েছে সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নেটিজনরা র্যাবের এই কর্মকান্ডের কঠোর সমালোচনা করছেন।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ বলছেন-র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সরকারের লোকজন বার বার অস্বীকার করছে। সরকারের এসব অস্বীকারের কারণে র্যাব দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তা না হলে নিষেধাজ্ঞার পরও একজন জীবন্ত মানুষকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করতে পারতো না। র্যাব যা করছে সবই সরকারের আশকরায় করছে।
Discussion about this post