রুদ্র আহনাফ
মানুষের বয়স বাড়লে নাকি ভাল কাজের মাধ্যমে জীবনে করা পাপগুলো মোচনের চেষ্টা করে। অপরাধীরাও বয়স বাড়লে মৃত্যুর কথা চিন্তা করে অপরাধ থেকে বিরত থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো পথে হাটছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বয়স বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধ কর্মকাণ্ডও। তার অপরাধের মাত্রা সাধারণ না। একেবারে মানুষ হত্যা। তিনি যেন সারাদিনই খুনের নেশায় বিভোর থাকেন। কখন কাকে হত্যা করা যায়, অপহরণ করা যায়, গুম করা যায়, কথিত বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলানো যায়।
ক্ষমতায় আসার আগেই শেখ হাসিনা প্রথম হত্যাকাণ্ডটি ঘটান রাজধানীর পল্টনে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে সরাসরি শেখ হাসিনার নির্দেশে তার দলীয় গুন্ডারা সাপের মতো পিটিয়ে জামায়াত-শিবিরের ৬ জন নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। হাসিনার গুণ্ডাবাহীনি শুধু হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, লাশের নৃত্য পর্যন্ত করেছে। নরপশুদের এসব কর্মকান্ড দেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের লোকজন পর্যন্ত বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
এরপর, ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সহযোগিতায় ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই ইতিহাসের জঘন্য ও নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় পিলখানায়। প্রতিবেশি দেশ ভারতের নির্দেশে শেখ হাসিনা ৫৭ জন দেশপ্রেমিক ও সাহসী সেনাকর্মকর্তাকে তার বাহিনী দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটাকে দুর্বল করতেই এসব সেনাকর্মকর্তাদেরকে হত্যা করা হয়।
এরপর-২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের ২০০ নেতাকর্মীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে রাতের আধারে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যা চালায় শেখ হাসিনা। সেদিন কত লোক মারা গিয়েছিল সঠিক তথ্যটি আজ পর্যন্ত জানা যায়নি। রাতের আধারে র্যাব-পুলিশ-বিজিবি অনেক লাশ গুম করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তারপর, কথিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে জামায়াতের নিরপরাধ শীর্ষনেতাদেরকে ফাসিতে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে শেখ হাসিনা।
এরপর, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহ আমান আযমী, মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমান, কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির নেতা অলিউল্লাহ ও আল মোকাদ্দেস, বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলীসহ বিরোধীদের বহু নেতাকর্মীকে গুম করেছে শেখ হাসিনা। আজ পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিগত ১২ বছরে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে বিএনপি-জামায়াতের কয়েকশ নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করেছে।
সর্বশেষ গত তিন দিনে গুলি করে আবার হেফাজের ১৭ জন লোককে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা এখন খুনের নেশায় মাতোয়ারা। ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি প্রয়োজনে আরও খুন করবেন। মানুষ খুন এখন তার কাছে ডাল-ভাত। তবে সব কিছুরই একটা শেষ আছে। শেখ হাসিনার এসব কর্মকাণ্ডেরও একদিন শেষ হবে। প্রতিটা খুনের জন্য হাসিনাকে একদিন জবাবদিহী করতে হবে। হাসিনার বিচার একদিন হবেই।
Discussion about this post