অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সরকারি অর্থায়নে গুজব ছড়ানো বেশ পুরোনো। এর আগে গুজব ছড়ানোর দায়ে কয়েকবার বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট বন্ধও করেছে ফেসবুক কতৃপক্ষ। শুধু ফেসবুক নয় সে সময় টুইটারসহ বিভিন্ন ভূয়া ওয়েবসাইট তৈরী করে গুজব ছড়িয়েও ধরা খায় ক্ষমতাসীনরা।
এবার আবারও সরকারের গুজবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে ফেসবুক।
জানা গেছে, ব্যবহারকারীদের একাউন্ট হ্যাকিং ও ঝুঁকিগ্রস্থ করার অভিযোগে বাংলাদেশী একটি হ্যাকার গ্রুপের সদস্যদের একাউন্ট ও পেজ বন্ধ করে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। ১০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক বার্তায় ফেসবুকের সিকুইরিটি পলিসি হেড নাথানেইল গ্লেইচার ও সাইবার থ্রেট ইন্টেলিজেন্স ম্যানেজার মাইক ডিভিলয়ানস্কি জানিয়েছেন “সাইবার এস্পিওনাজ” রোধের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামে দুইটি পৃথক হ্যাকার গ্রুপের বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন।
বার্তার বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভিত্তিক গ্রুপটি স্থানীয় ও প্রবাসী একটিভিস্ট, সাংবাদিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করে, তাদের একাউন্টগুলো ঝুঁকির মুখে ফেলতো এবং ফেসবুকের কম্যুনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভঙ্গ করার ছুতোয় সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতো।
নেত্র নিউজের অনুসন্ধানে এই কাজের সাথে জড়িত দুইটি অলাভজনক সংগঠনের নাম উঠে এসেছে: ডনস টিম (যেটি ডিফেন্স অফ নেশন নামেও পরিচিত) এবং ক্রাইম রিসার্চ এন্ড এনালিসিস ফাউন্ডেশন (ক্র্যাফ)। এরা বেশ কয়েকটি ইন্টারনেট সেবা মাধম্যেই তাদের কার্যকলাপ চালায়।
ডনস টিম এবং ক্র্যাফ একে অপরের সহযোগিতায় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের কম্যুনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভঙ্গের মিথ্যা-মনগড়া অভিযোগে রিপোর্ট করতো, যার মধ্যে ছিল ভুয়া পরিচয়, মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন, নগ্নতার প্রদর্শন ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ। তারা মানুষের ফেসবুক একাউন্ট ও পেজ হ্যাকিং করতো, এবং সেই হ্যাক করা একাউন্টগুলো নিজেদের কন্টেন্ট প্রচারসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতো। অন্তত একটি ঘটনা এমনও হয়েছে যে, একটি ফেসবুক পেজের একটি অ্যাডমিন একাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তারা ওই পেজের অন্য অ্যাডমিনদের সরিয়ে দিয়ে পেজটি দখলে নিতে ও বন্ধ করে দিতে সক্ষম হয়। আমাদের অনুসন্ধানে এমনটি প্রতীয়মান হচ্ছে যে, এই টার্গেটেড হ্যাকিংগুলো ফেসবুক প্ল্যাটফর্মের বাইরে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে করা হয়েছে — যার মধ্যে আছে [ব্যবহারকারীর] ইমেইল ও ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং আমাদের একাউন্ট পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার অপব্যবহার।
এহেন কার্যকলাপ বন্ধ করতে আমরা এর সাথে জড়িত ফেসবুক একাউন্ট ও পেজগুলো অপসারণ করেছি। এই গ্রুপ সংক্রান্ত তথ্য আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রি পার্টনারদেরকেও দিয়েছি যাতে তারাও এদের সনাক্ত ও প্রতিহত করতে পারে। আমরা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকতে ও তাদের একাউন্ট সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করি, সন্দেহজনক কোনও লিংকে ক্লিক করা এবং অবিশ্বস্ত কোনও উৎস থেকে সফটওয়ার ডাউনলোড করা পরিহার করতে হবে কারণ এতে তাদের ডিভাইস ও তাতে সংরক্ষিত তথ্যাদি ঝুঁকির মুখে পড়ে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ সরকারের গুজবের বিরুদ্ধে একাট্টা ফেসবুক-টুইটার