অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ব্যঙ্গ করে কার্টুন প্রকাশের পর ফ্রান্স বয়কট আন্দোলনে ক্ষোভে ফুঁসছে বিশ্ব মুসলিম। বাংলাদেশেও সেই ঢেউ চলছে। গত কয়েক দিন ধরে সারাদেশে বিভিন্ন বিক্ষোভ থেকে ফ্রান্সের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়ে আসলেও ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ফ্রান্স ইস্যুতে নিরপেক্ষ থাকবে বাংলাদেশ।
এক দিকে রাসুল (সা.) কে নিয়ে কটুক্তি অন্যদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর মন্তব্যের পর মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফরাসি পণ্য বয়কট শুরু হয়েছে। ঠিক তখনই বাংলাদেশ সরকারের এমন সিদ্ধান্ত খুব মর্মাহত বিশ্লেষকরা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন সরকার প্রধানের কি নবীর চেয়েও ম্যাক্রোকে বেশি ভালবাসেন?
তারা বলছেন, বাংলাদেশের সাথে ফ্রান্সের কূটনৈতিক সম্পর্ক খুব বেশি জরুরী নয়। বরং ইসলাম বিদ্বেষী ফ্রান্স সরকারকে বর্জন করা আবশ্যক। দেখা গেছে, বাংলাদেশের কোন সহায়তায় ফ্রান্সকে কাছে পাওয়া যায়নি। এছাড়া ফ্রান্স ছাড়া বিকল্প পন্য ব্যবহারের সুযোগ যেহেতু রয়েছে তাই সরকারকে এ বিষয়ে নিরপেক্ষ না থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কট ফ্রান্স আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।
অনুসন্ধান বলছে, রহিঙ্গা ইস্যুতে ফ্রান্সকে পাশে থাকার কথা বললেও এখনও তাদের কোন সহায়তা পাওয়া যায়নি। এছাড়া কয়েকটি বিষয়ে চুক্তি হলেও তার কোন ফল বাংলাদেশ পায়নি।
অনেকেই বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে একজন ধার্মিক বলে দাবী করে থাকেন। তিনি নাকি সকালে ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদের জন্য জায়নামাজ খুঁজেন। কুরআন তেলাওয়াত না করে নাকি কোনো কাজ করেন না। অথচ, ফ্রন্সে সরকারিভাবে মোহাম্মদ (স)কে অবমাননা করা হলেও তিনি নিরব ভুমিকা পালন করছেন। তাহলে কি মোহাম্মদ (স) এর চেয়ে কি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোর প্রতি হাসিনার ভালবাসা বেশি? নবীর চেয়ে কি হাসিনার কাছে ম্যাক্রোর গুরুত্ব বেশি?
মোহাম্মদ (স) আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ট নবী। তিনি শুধু মুসলমানদের নন, গোটা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত সরুপ। তিনি শুধু মুসলমানদের কাছেই প্রিয় নন, শত শত অমুসলিম বিজ্ঞানী-দার্শনিকও তাকে শ্রেষ্ট মানব বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর একজন মানুষকে মুসলমান হতে হলে আল্লাহর পরই তাকে রাসুলের উপর ইমান আনতে হবে। শুধু ইমান নয়, পরকালে জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি পেতেও দুনিয়ার সব কিছুর চেয়ে রাসুলকে বেশি ভাল বাসতে হবে। তাই মুসলমানরা তাদের জীবনের চেয়েও রাসুলকে বেশি ভালবাসে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো যে একজন চরম ইসলাম বিদ্বেষী সেটা বিশ্ববাসীকে দেখাতেই মূলত মোহাম্মদ (স)এর অবমাননা করেছে। এর আগে ম্যাক্রো বলেছিলেন-সারাবিশ্বে ইসলাম নাকি সংকটে আছে। ম্যাক্রো মনে করেছিল মুসলমানরা হয়তো জোরালো প্রতিবাদ করতে পারবে না।
ম্যাক্রোর এই ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে সারা বিশ্বের মুসলমানরা ক্ষোভে ফুসছে। শুধু মুসলিম বিশ্ব নয়, সব রাষ্ট্রেই মুসলমানরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সরকার প্রধানরা ম্যাক্রোর এই ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে।