অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশের সব কিছুই এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণে। কে কি বলবে, কে কি লিখবে সেটাও এখন সরকারের পক্ষ থেকে বলে দেয়া হয়েছে। ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে শেখ হাসিনা তার চারপাশে চীনের প্রাচীর তৈরি করেছে। কেউ যাতে ভেতরে ঢুকতে না পারেন।
এরপরও ভিপি নুরের চিল্লাচিল্লি শিসা ঢালা প্রাচীর ভেদ করে শেখ হাসিনার কানে ধাক্কা লাগছে। ভিপি নুর ও তার সহযোগীদের স্লোগানের মধ্যে যেন একটা বিপদ সংকেত শুনতে পাচ্ছেন শেখ হাসিনা।
এইতো মাত্র দুই বছর আগে নুরুর নেতৃত্বে গড়ে উঠা আন্দোলনের কারণে ভয়ে-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাতেন শেখ হাসিনা। তিনি নিজেই একদিন সকালে বলেছেন যে, রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি। হয়তো সেই বিপদ সংকেত তিনি এখনও পাচ্ছেন।
কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই ভিপি নুরের বিরুদ্ধে একটি ভুয়া ধর্ষণের মামলা করলেন ছাত্রলীগের এক নারী কর্মী। নুরুকে
মামলায় সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেটি সারাদেশের মানুষের ক্ষোভ-সমালোচনা ও হাসির খোরাকে পরিণত হয়। পুলিশও বললো-ভিপি নুরের বিরুদ্ধে কোনো ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়নি।
পরের দিন আবার একই মেয়ে কতোয়ালী থানায় গিয়ে আরেকটি মামলা করে। সেখানে ধর্ষণ, সহযোগী ও অপহরণের কথা বলা হয়েছে। জানা গেছে, তারপর সাইবার আদালতে ওই মেয়ে আরেকটি মামলা করেছে।
এসব মামলার পর সবার প্রশ্ন একটাই-ভিপি নুরের বিরুদ্ধে হঠাৎ করে একের পর এক মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দেয়া হচ্ছে কেন? শেখ হাসিনা আসলে কি চান? তিনি কি কোনো বিপদ সংকেত শুনতে পাচ্ছেন?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ভিপি নুরকেই একমাত্র প্রতিপক্ষ মনে করছেন শেখ হাসিনা। ভিপি নুর রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেয়ার পরই শেখ হাসিনার টনক নড়ে যায়।
গোয়েন্দ রিপোর্টের মাধ্যমে শেখ হাসিনা জানতে পেরেছেন-কয়েকটি বিদেশি দূতাবাস, দেশের সুশীল সমাজের কিছু লোক ও সাবেক অনেক হামলা নুরকে পেছন থেকে সহযোগীতা করছে। তাদের টার্গেট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া। এমন তথ্য পাওয়ার পরই নুরকে কোনঠাসা করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর অংশ হিসেবেই তার নামে একাধিক মামলা করা হয়েছে।
এখন সরকারের টার্গেট হলো-যেকোনো উপায়ে নুরকে গ্রেফতার করা। ছাত্রসমাজ ও জনগণের বড় একটি অংশ নুরের পক্ষে থাকায় সরকার তাকে গ্রেফতার করার সাহস করছে না। তাই সরকার পরিকল্পিতভাবে নুরের বিপক্ষে একটা জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
এ লক্ষ্যে শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ ও কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের সংগঠনটিকে মাঠে নামিয়েছে। আর মেয়েটিকে নুরের গ্রেফতারের দাবিতে অনশনে বসতে বাধ্য করেছে।
দেখা গেছে, ছাত্রলীগ দুইদিন ধরে ভিপি নুরের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাবিতে মিছিল সমাবেশ করছে। আর শনিবার মাঠে নেমেছে কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ব্যানারে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা ভিপি নুরের গ্রেফতার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান করেছে।
জানা গেছে, ভিপি নুরের গ্রেফতার দাবিতে তারা সারাদেশে একটি আন্দোলন ছড়িয়ে দেবে। সারাদেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন করে দাবি তুলবে-ভিপি নুরকে গ্রেফতারের জন্য। এরপরই সরকার নুরুকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নেবে।
এখন প্রশ্ন হলো-যেই বিএনপি, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, ড. কামাল হোসেনদের জন্য ভিপি নুর এত কিছু করছেন, তারা কি নুরকে রক্ষায় মাঠে নামবে? অনেককেই এখন এমন প্রশ্ন করতে শুনা যাচ্ছে।