অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ইস্যুর রাজনীতিতে এদেশে আওয়ামী লীগ ও দলটির প্রধান শেখ হাসিনা বরাবরই প্রথম স্থান অর্জন করেছে। একটি ইস্যুকে চাপা দিতে নতুন করে আরেকটি ইস্যুর জন্ম দেয়ার জন্য তারা খুবই দক্ষ ও অভিজ্ঞ। বিগত ১১ বছরে শেখ হাসিনা যত ইস্যুর জন্ম দিয়েছেন, স্বাধীনতার পর থেকে কয়েক সরকারের সবগুলো ইস্যু মিলিয়েও তার সমান হবে না। তবে, হাসিনার জন্ম দেয়া অধিকাংশ ইস্যুগুলোই ছিল খুন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট-দুর্নীতি, গুম, অপহরণের ঘটনাগুলোকে চাপা দেয়ার জন্য।
প্রাণঘাতী করোনা এসে শেখ হাসিনার কথিত উন্নয়নের ফুলানো বেলুনকে ফাটিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাত নিয়ে এতদিন ধরে শেখ হাসিনা ও তার চেলেরা যে ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে আসছিল, করোনা এসে সব কিছু খুলে দিয়েছে।
একেবারে সর্বশেষ স্বাস্থ্যখাতের যে চিত্রটি দেশবাসীর কাছে দৃশ্যমান হয়েছে সেটা হল ঢাকা মেডিকেল কলেজের ২০ কোটি টাকার খাওয়া-থাকার বাজেট। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও ঢামেক পরিচালক নাসিরুদ্দিন বিষয়টিকে অস্বীকার করলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনিয়মের সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।
দেখা গেছে, হোটেলে না থেকেও তারা হোটেলে থাকার খরচ দেখিয়েছে। ঢামেকের কেন্টিন থেকে খাবার খেয়ে হোটেলে খাওয়ার ভাউচার দিয়েছে। এভাবে কৌশলে তারা সরকারি কোষাগারের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে।
ঢাকা মেডিকেলের এই ২০ কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে যায়। কঠিন এক বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে শেখ হাসিনা ও তার সরকার। কিন্তু শেখ হাসিনা এটাকে চাপা দিতে জন্ম দিলেন আরেক ইস্যু। বেছে নিলেন সদরঘাটে লঞ্চডুবির ঘটনাকে। সাজালেন এক জীবিত উদ্ধার নাটক।
পানির নিচে ডুবে থাকা লঞ্চ থেকে সুমন ব্যাপারী নামে এক লোককে জোর করে ধরে নিয়ে রাতের আধারে পানিতে নামিয়ে দিয়ে ফায়ার সার্ভিস দিয়ে তাকে উদ্ধার করলেন। গণমাধ্যমকে জানানো হলো-১৩ ঘণ্টা পর একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে নিয়ে ভর্তি করা হলো সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে।
হাসপাতালের ডাক্তাররাও বললেন-পানিতে ডুবে থাকার কোনো লক্ষণ তারা তার মধ্যে পাননি। কিন্তু হাসিনার অনুগত পুলিশ সদস্যরা দাবি করছেন তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তারপর, সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি কথা বলেছে উদ্ধার হওয়া সুমন ব্যাপারীর সাথে। তাদের সঙ্গেও সুমন ব্যাপারী একেক সময় একেক কথা বলেছেন। তার বক্তব্যে কোনো মিল পাননি তদন্ত কমিটি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ মনে করছেন, সুমনের ঘটনা আরেক রেশমা নাটক। ঢাকা মেডিকেলের দুর্নীতির ঘটনাকে চাপা দিতেই সরকার পরিকল্পিতভাবে এই নাটক সাজিয়েছে।