অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সারাদেশ থেকে মানুষ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করাতে এখানে আসে।কিন্তু করোনাকালীন এই কঠিন সময়ে ঢাকা মেডিক্যাল এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে নতুন খোলা করোনা ইউনিট করোনা রোগীসহ সাধারণ মানুষের জন্য এক ভয়াবহ আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। মানুষ সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে অসুস্থ ও লাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে।
জানা গেছে, শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে নর্দান মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা: আনিসুর রহমানসহ ২৮ জন মারা গেছেন। আর গত ২ মে থেকে করোনা ইউনিটে এ পর্যন্ত ৮৯ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
এ দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিয়েও নানা অনিয়ম হচ্ছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের যে ভাবে চিকিৎসা বা সেবা দেয়া দরকার তার ছিটে ফোঁটাও নেই করোনা ইউনিটে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দায়সারাভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে রোগী ও তার স্বজনদের।
এ দিকে করোনা ইউনিটের অনিয়ম নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মেডিক্যালের করোনা ইউনিটে কর্মরত একজন নার্স ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই ইউনিটে কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। যার যা মনে ধরছে সে সেটাই করছে। কেউ কারো কথা শুনছে না। অনেক জনবল সঙ্কট নিয়ে চলছে এই ইউনিট। সব জায়গাতে অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনা।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, করোনা আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে যে সব রোগী মারা যাচ্ছেন, সেই লাশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মাস্টার, কর্মচারী ও বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স চালকরা মিলে তাদের আত্মীয়স্বজনদের সাথে বাণিজ্য করছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জন মারা যাওয়ার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর মানুষের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এনিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
অনেকেই বলছেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এখন আর চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান নয়। এটা এখন মানুষের জন্য মরণফাদে পরিণত হয়েছে। মরার ভয়ে এখন আর কেউ ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে না।