অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সরকারি দালাল খ্যাত বাংলাদেশে সিনিয়র সাংবাদিকদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান। বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীনদের গুনকীর্তন করে বহুবার সমালোচনায় এসেছেন এই সাংবাদিক। সাংবাদিকতা নীতি নৈতিকতা নিয়েও রয়েছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ। এবার ‘গরিবের ডাক্তার’ খ্যাত শহীদ মঈনকে নিয়ে ভিত্তিহীন মিথ্যাচার করে আবারও সমালোচনােয় এসেছেন এই সাংবাদিক। ডা. মো. মঈনউদ্দিনের মৃত্যু নিয়ে তিনি এমন মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও ভুয়া তথ্য দেওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন দালাল বলে অখ্যা দিয়েছেন অনেকেই।
দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে ডা. মাইনুদ্দিন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি হতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু সেখানকার ডাক্তাররা তাকে ভর্তি করেনি। তিনি বাধ্য হয়ে শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি হন। তারপর সেখানে কোনো আইসিইউ ও ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা ছিল না। তিনি ভেন্টিলেটর চাইলেও ওসমানী মেলিকেলের আওয়ামী ডাক্তাররা ইচ্ছে করেই তাকে ভেন্টিলেটর দেয়নি। তারা তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে।
তারপর ডা. মাইনুদ্দিন একটি এয়ার এম্বুলেন্স চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সেটা দেয়নি। এমনকি আইসিইউ সম্বলিত একটি এম্বুলেন্সও দেয়া হয়নি ডাক্তার মাইনুদ্দিনকে। এরপর নিজেদের ব্যবস্থাপনায় একটি এম্বুলেন্স ভাড়া করে সিলেট থেকে ঢাকায় আনা হয় তাকে।
কিন্তু, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান গত বুধবার একটি ভিডিও বার্তায় ডা. মাইনুদ্দিনের চিকিৎসা নিয়ে নানা ভাবে মিথ্যাচার করেছেন। তিনি বলেছেন-মাইনুদ্দিনের ক্ষেত্রে চিকিৎসার কোনো অবহেলা ছিল না। তার মতো এত উন্নত চিকিৎসা আর কেউ পায়নি।
অথচ, ডা. মাইনুদ্দিন যে আইসিউ ও ভেন্টিলেটর চেয়েছিলেন, এই বিষয়গুলো চেপে গেছেন নাঈমুল ইসলাম খান। সরকারের কাছে যে এয়ার এম্বুলেন্স ও আইসিইউ সম্বলিত এম্বুলেন্স চেয়েছিলেন এটাও চেপে গেছেন সরকারের দালাল খ্যাত এই সাংবাদিক।
তার ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর তিব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন তার মনুষত্ব নিয়ে। তারা বলছেন, সাংবাদিক হলেই মানুষ হওয়া যায়না। মানুষ হওয়ার জন্য চাই বিবেক বোধ জাগ্রত করা। নাঈমুল ইসলাম খান সরকারি চাটুকারিতা করতে গিয়ে নিজের বিবেককে মেরে ফেলেছেন। ডা. মাইনুদ্দিনের চিকিৎসার অবহেলা নিয়ে সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমনকি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক নঈম নিজামও প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এটাকে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতা হিসেবেই উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো সরকারি চাটুকার খ্যাত সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান বললেন-ডা. মাইনুদ্দিনের চিকিৎসার নাকি কোনো অবহেলা ছিল না।
এরপর, ডা. মাইনুদ্দিন করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন। এমনকি তিনি করোনা টিমের সদস্যও ছিলেন। অথচ, দালাল নাঈমুল ইসলাম খান বলছেন-মাইনুদ্দিন নাকি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন না। তিনি নাকি তার ব্যক্তিগত প্রাইভেট চেম্বার থেকেও করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন।
নাঈমুল ইসলাম খানের সম্পর্কে এটা আর নতুন কিছু নয়। তিনি সংবাদপত্র জগতের অধিকাংশ মানুষের কাছে একজন ক্যারিশম্যাটিক, মুখোশধারী মানুষ হিসেবে পরিচিত। সংবাদ কর্মীদের বেতন কর্তন করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শোনা যায়, সংবাদপত্র জগতে তিনিই `৩ হাজার টাকায় বা ৪ হাজার টাকায়’ সাংবাদিকদের কিভাবে ১০-২০ হাজার টাকার মুনাফা লুফে নেয়া যায়, এবং কিভাবে সাংবাদিকদের বেতন কর্তন করা যায়, বা বেতন না দেওয়া যায়, এই কৌশলগুলোর আবিষ্কারক এই সাংবাদিক। এছাড়া ইসরাইলের মোসাদ এজেন্ট হিসেবেও কাজ করেন বলে জানা যায়।