অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
করোনাভাইরাস সঙ্কটে জনগণকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া দেশের প্রথম চিকিৎসক ডা. মো. মঈন উদ্দিনকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন দেশের সর্বস্তরের মানুষ। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকল রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ তার অসামান্য অবদানকে স্মরণ করেছেন। শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানিয়েছেন সমবেদনা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: আবুল কালাম আজাদ তাঁকে করোনায় চিকিৎসক সমাজের সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসাবে অভিহিত করেছেন।
জানা গেছে, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন ডা. মঈন। তিনি সিলেটের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী। গত ৫ এপ্রিল আইইডিসিআর থেকে তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। গত ৩০ মার্চ থেকে তিনি তার বাসায় কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ৭ এপ্রিল সিলেট নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনা আইসোলেশনে সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। ৮ এপ্রিল পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে এ্যম্বুলেন্সযোগে দ্রুত ঢাকায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চলছিল। সোমবার সকাল থেকে তাকে আইসিইউ(ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট)-এ নেয়া হয়। আইসিইউকে থাকা অবস্থায় বুধবার সকালে পৌনে ৭টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কে এই ডা. মঈন?
করোনাযুদ্ধে চিকিৎসক সমাজের প্রথম শহীদ ডা: মো: মঈন উদ্দিন ১৯৭৩ সালের ২ মে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নাদামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের স্কুল থেকে পাঠশালা পাশের পর তিনি ধারণ নতুন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি এবং ১৯৯০ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। একই বছর ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। সেখান থেকে ১৯৯৮ সালে কৃতিত্বের সাথে এমবিবিএস পাস করেন। এরপর তিনি এফসিপিএস ও এমডি কোর্স সম্পন্ন করেন।
২২তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ স্বাস্থ্য ক্যাডারে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৪ সালের ২০ মে তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজে মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে যোগ দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ পদে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুতে কেবল তাঁর জন্মমাটি ছাতক নয়, পুরো সিলেট বিভাগে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার মৃত্যুর বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
ডা: মঈনুদ্দিনের স্ত্রী ডা: রিফাত জাহান সিলেটের বেসরকারি পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও এ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (চলতি দায়িত্ব)। তার বড় ছেলে জিহাদের বয়স ১২ বছর। আর ছোট ছেলে জায়ানের বয়স ৭ বছর। তারা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা করছে।
তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ৫ম ডা: মঈন উদ্দিনের বড় ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী শফিক উদ্দিন বছর খানেক পূর্বে সেখানে মারা গেছেন। মার মেঝভাই সিরাজ উদ্দিনও মারা যান কয়েক বছর পূর্বে। তার তিনবোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।
ডা. মঈন উদ্দিন সিলেটে করোনা যুদ্ধে প্রথম সারির যোদ্ধা ছিলেন। ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উদ্যোগে গঠিত সিলেট করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। এর আগে তিনি এ হাসপাতালের ডেঙ্গু প্রতিরোধ কমিটিসহ আরো কয়েকটি কমিটির দায়িত্ব পালন করেন।
গরীবের ফি নিতেন না শহীদ ডা. মঈন
মঈন ছিলেন একজন ভদ্র, বিনয়ী ও মানব দরদী চিকিৎসক। সর্বমহলে তিনি মানবিক ও ‘গরীবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার পিতা মুনসী আহমদ উদ্দিন ছিলেন একজন পল্লী চিকিৎসক। মৃত্যুর আগে ছেলেকে বলেছিলেন এলাকার অসহায় রোগীদের যেন নিয়মিত সেবা দেন। পল্লী চিকিৎসক পিতার কথা রেখেছেন ডা. মঈন উদ্দিন। প্রতি শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে সিলেট থেকে সুনামগঞ্জের ছাতকের নাদামপুরে ছুটে আসতেন তিনি। বিনামূল্যে গরিব অসহায়দের ব্যবস্থাপত্র দিতেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পও করেছেন তিনি। এলাকার মুরুব্বী সোহেল আহমদ বলেন, ডা. মঈনুদ্দিন শুধু গরিবের ডাক্তার ছিলেন না। এলাকার কোন রোগী তার সিলেট চেম্বারে গেলেও তিনি তাদের ফ্রি দেখতেন।
চিকিৎসা না পাওয়ায় প্রতিবাদের ঝড়
ডা. মো. মঈন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। অথচ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক হয়েও তিনি পাননি নিজের প্রতিষ্ঠানের আইসিইউ, পাননি সরকারের অ্যাম্বুলেন্স। সিনিয়র এই চিকিৎসক নিজ কর্মস্থলসহ সিলেটে চিকিৎসা না পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এই ঘটনায় ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি উঠেছে।
মানবিক ডাক্তার হিসেবে পরিচিত করোনা যুদ্ধে শহীদ হওয়া ডা. মঈন ছিলেন ভদ্র ও বিনয়ী। তিনি গরীব মানুষের ফি নিতেন না।
ওমর ফারুক লিখেছেন, ‘‘ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। করোনা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এই বীর সৈনিকের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। সেই সাথে মহান আল্লাহ যেন তাকে শহীদের মর্যাদা দান করেন সেই প্রার্থনা করছি।’’
এহসান নুর লিখেছেন, ‘‘বলতেই হয় শহীদ। ডাক্তার মঈন স্যারকে জেনে বুঝে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। বরং যতটা দ্রুত মৃত্যু নিশ্চিত করা যায় সেই কাজ করেছে ওসমানী মেডিক্যালের মহাপরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।’’
রেজা তামিম লিখেছেন, ‘‘নিজ কর্মস্থলেই চিকিৎসা পাননি ওসমানী মেডিকেলের ডা. মঈন ভাই। এই জবাব তো প্রথম সেই মেডিকেল কলেজের পরিচালককে দিতে হবে। চিকিৎসক কমিউনিটি আঙ্গুল ঐইদিকে দেখান আগে।’’
মিজানুর রহমান লিখেছেন, ‘‘আল্লাহ তা’য়ালা ভাইকে শহীদ হিসেবে কবুল করে জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান করে নিন। তার শোকাহত পরিবারকে সবরে জামিল করার তাওফিক দিন। তাঁর সন্তান কে নিয়ে বাবার যে আশা ছিল আপনি তা কবুল করে নিন। আল্লাহুম্মা আমীন।’’
কাজী বেলায়েত হোসেন লিখেছেন, ‘‘এটাকে কেবল মৃত্যু বলবো না, এটা একটা সিস্টেম্যাটিক কিলিং। রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনার শিকার হয়েছেন গরীবের চিকিৎসক খ্যাত এই মেধাবী মানুষটি।’’
লাভলু সেলিম লিখেছেন, ‘‘একজন সিনিয়র চিকিৎসক হয়ে যদি চিকিৎসা না পান, তাহলে সাধারণ জনগণের কি অবস্থা হবে ভাবতে পারছেন?
তারিক খান লিখেছেন, ‘‘দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য জীবন দেওয়াটা হয়তো অন্যায় তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হয়েছে…হায়রে কপাল আমাদের মূল্যবান মানুষের কদর আমরা বুঝিনা।’’
এবিএস সোহেল লিখেছেন, ‘‘একজন মানুষ ৫০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন তার বড় সন্তানের বয়স কতো যানেন? ১২ বছর হ্যা ১২ বছর।অর্থাৎ তার প্রথম সন্তান যখন হয় তখন তার বয়স ৩৮ বছর। কি একটু হলেও বেমানান লাগে না? এবার তার নামের পাশের ডিগ্রীগুলো দেখুন এফসিপিএস, এমডি। হ্যাঁ এমন ডিগ্রী অর্জন করে আপনাদের জন্য যোগ্য ডাক্তার হতে গিয়ে এমন অনেক ডাক্তার দম্পতির জীবনের আনন্দময় অনেকটা সময় চলে যায় পড়ার টেবিলে।আজ তিনি মারা গেলেন COVID 19 এ আক্রান্ত হয়ে। যানেন তিনি কিভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন? তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন রোগীর সেবা দিতে গিয়ে। কারন তখনো তাকে সুরক্ষা পোষাক দেয়া হয়নি। অসুস্থ হলে তাকে রাষ্ট্র থেকে দেয়া হয়নি সামান্য ঢাকা আনার আধুনিক ব্যবস্থা! এখন বীর বলেন আর যাই বলেন ফিরিয়ে দিতে পারবেন ঐ ১২ আর ৮ বছরের ছেলেদুটোকে তাদের বাবাকে? কি বলবেন তাদেরকে যখন তারা জানবে যে তাদের বাবা আক্রান্ত হয়েছে আপনাদের অদক্ষতায়, মৃত্যুর আগে পেয়েছে আপনাদের অবহেলা! আর বীর বীর কইরেন না ঘেন্না লাগে!’’
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
ডা. মঈন উদ্দিনের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ রাজনৈতিক মহলের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
জামায়াত আমীর শোকবাণীতে বলেন, “ডা. মঈন উদ্দিন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম করোনা যোদ্ধা যিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে নিজেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবন দিলেন।
তিনি গত ৫ এপ্রিল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের একটি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের লোকজন তাকে ঢাকায় নিয়ে আসার চেষ্টা করলেও যথাসময়ে এ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি এবং সরকারের পক্ষ থেকে এয়ার এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়নি।
তিনি সিলেটের একজন জনপ্রিয় ডাক্তার ছিলেন যাকে সবাই মানবিক ডাক্তার বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। মানবতার সেবায় তিনি সদা তৎপর ছিলেন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সেবা দিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করার মাধ্যমে তিনি একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবার ইতিহাসে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। জাতি তাকে করোনা যোদ্ধা হিসেবে স্মরণ করবে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করার কারণে তাকে জাতীয় বীর ঘোষণা করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। তার অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। আমি মহান আল্লাহর নিকট আন্তরিকভাবে দোয়া করছি তিনি যেন তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করেন। তার জীবনের সকল নেক আমল কবুল করেন।
আমি তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।
অপর এক বিবৃতিতে বিশিষ্ট চিকিৎসক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের বলেন, ডা: মঈন উদ্দিন বাংলাদেশের প্রথম চিকিৎসক যিনি করোনা আক্রান্ত রোগীর সেবা দিতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাকে করোনা যোদ্ধা হিসেবে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়ার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। ডা: মঈন চিকিৎসা সেবায় নিজের জীবন দিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তা এ পেশায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের যুগ যুগ ধরে অনুপ্রেরণা যোগাবে। তার পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব নেয়ার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। আল্লাহ তাকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন।”
ডা. মঈন একজন বীর হিসেবেই জাতির নিকট বিবেচিত হবেন বলে জানিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, নিজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ডা. মঈন উদ্দীন রোগীদের সেবার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা চিকিৎসক সমাজের জন্য এক অনুকরণীয় শিক্ষা হিসেবে পরিগণিত হবে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের ছোবলে বাংলাদেশও আক্রান্ত। এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার এই অবিস্মরণীয় আত্মদান জাতি কোনোদিনই বিস্মৃত হবে না।
ফখরুল বলেন, ডা. মঈন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিছু হটেননি, তিনি নির্ভয়ে রোগীদের সেবা করেছেন। মানবসেবাকেই ডা. মঈন জীবনে অঙ্গীভূত করেছিলেন বলেই রোগীদের সেবা করতে গিয়ে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুতরাং এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডা. মঈন একজন বীর হিসেবেই জাতির নিকট বিবেচিত হবেন।
বাবা ও মায়ের পাশে চির নিদ্রায় শায়িত
চির নিদ্রায় শায়িত হলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. মঈন উদ্দিন।বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৮টায় সুনামগঞ্জের ছাতক ছাতক উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের নাদামপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর বাবা ও মায়ের কবরের পাশে মঈন উদ্দিনকে দাফন করা হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, প্রশাসনের তত্বাবধানে মুসলিম ধর্মীয় রীতি মেনে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা ও মায়ের কবরের পাশে শায়িত করা হয়েছে ডা. মঈন উদ্দিনকে।পাঁচজন মুসল্লির অংশ গ্রহনে অনুষ্টিত জানাযার নামাজে ইমামতি করেন ডা. মঈন উদ্দিনের চাচাতো ভাই পোস্ট মাস্টার ইসরাইল মিয়া।জানাজায় অংশগ্রহনবারীর মধ্যে তিনি (ওসি) ছাড়াও ছিলেন ছাতকের এএসপি সার্কেল বিল্লাল হোসেন, ছাতক উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা তাপস শীল প্রমুখ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অনেক মানুষের ইচ্ছা ছিল জানাজায় অংশ নেওয়ার। কিন্তু করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে তাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। মরদেহ ঢাকা থেকে নিয়ে আসার পর পরই জানাজার নামাজ পড়ে দ্রুত লাশ কবরস্থ করা হয়।