অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দিন যত যাচ্ছে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ততই ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে। সরকার যে হিসাব দিচ্ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি। গত এক মাস ধরে সারাদেশে সর্দি, কাশি ও জ্বর নিয়ে যারা মারা গেছে, তাদের সবাই করোনায় আক্রান্ত ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় হাসপাতালগুলো মৃত্যুর আগে তাদের পরীক্ষা করেনি। আর মৃত্যুর পর যাদের নমুন সংগ্রহ করা হয়েছে সবগুলোর রিপোর্ট পজেটিভ আসলেও প্রকাশ না করে উল্টো নেগেটিভ বলে প্রচার করছে ক্ষমতাসীনরা।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো-প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা চাপা দিতে শেখ হাসিনা এবারও দেশের সব গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেছে। গণমাধ্যমগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে অঘোষিত নোটিশ দেয়া হয়েছে।
একাধিক গণমাধ্যমের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে বলে দেয়া হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে তথ্য দেয়া হবে, গণমাধ্যমগুলোকে শুধু সেটাই প্রকাশ করতে হবে। কোনো গণমাধ্যম যদি করোনায় আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা নিয়ে সরকারি হিসাবের বাইরে কোনো সংবাদ প্রকাশ করে তাহলে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সরকারের এই গোপন নির্দেশনা পাওয়ার পরই গণমাধ্যমগুলো করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে অতিরিক্ত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করছে না। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ছর্দি, কাশি বলে প্রচার করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়ার সংবাদিক জানান, সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য গণমাধ্যমের কাছে থাকলেও কেউ প্রকাশ করছে না। নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা ও পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ার ভয়ে এগুলো তারা প্রকাশ করতে পারছে না বলে জানান এই সাংবাদিক।
একাধিক সূত্র বলছে, করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা চাপা দিতে শেখ হাসিনা চীনের নীতি অনুসরণ করছেন। চীন করোনায় মৃতের যে সংখ্যা প্রকাশ করেছে সেটা মোটেও সঠিক নয়। আরও কয়েকগুন বেশি মানুষ মারা গেছে বলে দাবি করছেন তারা। তারা বলছেন, চীন সরকার নির্দেশে সে দেশের গণমাধ্যমগুলো এসব প্রকাশ করছে না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও করোনা চাপা দিতে চীনের নীতি অনুসরণ করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতাসীনরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে আগে থেকেই সাংবাদিকদের কোণঠাসা করে রেখেছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় অপপ্রচার বন্ধের নামে সংবাদ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রন করছে তারা। এভাবে তথ্য গোপন করে মিথ্যাচার করলে চীনের মত ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়বে বাংলাদেশ। চীন সরকার প্রথম দিকে তথ্য গোপন করতে গিয়ে ভয়াবহতা আরও বেড়ে যায়। তাই করোনা নিয়ে মিথ্যাচার না করে সঠিক তথ্য প্রচারের জন্য দাবি রাখেন তারা।