অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিগত ১১ বছরে আ.লীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতারা যে পুরো ঢাকা শহরকে জুয়া ও মদের আসরে পরিণত করেছে তার একটি খন্ড চিত্র কিছু দিন আগে দেখা গেছে। ঢাকা শহরের প্রতিটি ক্লাবই ছিল তাদের মদ ও জুয়ার আসর। এসব জুয়ার আসরে অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোটি কোটি টাকা ও মাদক উদ্ধার করেছে। আওয়ামী লীগের এসব জুয়ারি নেতাদের বাসাগুলোও একেকটা ছিল ব্যাংকের মতো। তাদের ঘরের সিন্দুক ছিল টাকায় ভরপুর। ক্যাসিনো নামের ডিজিটাল জুয়ার আসর বসিয়ে তারা মানুষের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশ পাচার করেছে। তাদের এসব কাণ্ড প্রকাশিত হওয়ার পর গোটা জাতি বিস্মিত হয়ে যায়।
ক্যাসিনো কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বেরিয়ে এল এক যুবলীগ নেত্রীর পতিতালয়ের খবর। পাপিয়ার অপরাধ কর্মকাণ্ড যেন ক্যাসিনো কাণ্ডকেও হার মানিয়েছে। ঢাকা শহরের ভিআইপি হোটেলগুলোকে যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া অভিজাত পতিতালয়ে পরিণত করেছে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে থাইল্যান্ড পালানোর সময় জাল টাকাসহ যুবলীগ নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়া, তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন, তাদের সহযোগী সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা (২২) কে আটক করে র্যাব। আটকের পরই র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে পাপিয়ার অপরাধ জগতের ভয়াবহ চিত্র।
পাপিয়ার মূল কাজ ছিল সুন্দরী নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো। আর এ দেহ ব্যবসার জন্য ব্যবহার করতেন পাঁচতারকা হোটেল ওয়েস্টিন সহ রাজধানীর আরও একাধিক ভিআইপি হোটেল।
জানা গেছে, সমাজ সেবার নাম করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নারীদের ধরে এনে অবৈধ কাজে লিপ্ত করতেন। অধিকাংশ সময় রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেল ভাড়া করে এই ব্যবসা চালাতেন। বিশেষ করে এই ব্যবসা পরিচালনার জন্য ঢাকা এবং নরসিংদিতে দামী হোটেল এবং দামী গাড়ি ভাড়া করে রাখতেন। তারা রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল ওয়েস্টিন ভাড়া করে গত কয়েক মাসে ৮৮ লাখ টাকা ভাড়া দিয়েছে। প্রতিরাতে ওয়েস্টিনের পুরো বারটি বুক করে রাখতেন। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে হোটেল ও বারের বিল আসত এক কোটি ত্রিশ লাখ টাকা।
এভাবে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর অভিজাত হোটেল গুলোকে কেবিন ভাড়া নিয়ে এগুলোকে পতিতালয়ের মতো ব্যবহার করতেন। আর এসব পতিতালয়ে খদ্দের হিসেবে নিয়ে আসা হতো সুন্দরী নারীদেরকে। এসব সুন্দরী নারীদের সঙ্গে ফূর্তি করতে আসতো সরকারের মন্ত্রী-এমপি, ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা ও ব্যবসায়ী।
পাপিয়ার এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড প্রকাশের পর সাধারণ মানুষ অবাক হয়ে গেছে। তারা বলছেন, যুবলীগ নেতা সম্রাট ঢাকা শহরকে পরিণত করেছে জুয়ার আসরে, আর পাপিয়া ঢাকার ভিআইপি হোটেলগুলোকে পরিণত করেছে অভিজাত পতিতালয়ে। ঢাকা শহর জুড়েই যেন যুবলীগ নেতা নেত্রীদের অভয়ারণ্য।