অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশের সকল সুশীল ও রাজনীতিবিদদেরকে ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই মূলত ভিপি নুরের উত্থান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি করতে গিয়ে শেখ হাসিনার ক্ষমতার মসনদ কাপিয়ে দিয়েছিল ভিপি নুর। সেই আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোতে এমনও সময় গেছে শেখ হাসিনা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।
এরপর থেকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন থেকে শুরু করে ছাত্রসমাজের সকল ন্যায়সংগত আন্দোলনে শুধু সমর্থন নয়, মাঠে নেমে জোরালো ভূমিকা পালন করেছেন নুর ও তার সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার রক্ষা ফোরামের নেতাকর্মীরা।
এসব আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেন ভিপি নুরুল হক নুর। এ পথ ধরেই তিনি ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন। তবে, শেখ হাসিনা তার ছাত্রলীগ নামের লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে ভিপি নুরকে দমনের চেষ্টা করেছেন একাধিকবার। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা একাধিকবার তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করেছে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই নয়, তার নিজ বাড়ি পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিপি নুর ও তার সহযোগিদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা।
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের ভিপির ওপর বার বার হামলা ও মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগকে নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, সাধারণ মানুষও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। অভিযোগ উঠে যে, সরকারের মদদেই ছাত্রলীগ বার বার এ হামলা চালাচ্ছে। সরকারের নির্দেশ ছাড়া ডাকসুর ভিপির ওপর এভাবে নৃশংস হামলা-নির্যাতন ছাত্রলীগ চালাতে পারে না।
এরপরই ভিপি নুরকে দমনে ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে নতুন পথ বেছে নেন শেখ হাসিনা। আর সেই পথ হলো-কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মূলত এই মঞ্চের সঙ্গে যারা আছে সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। শেখ হাসিনার টার্গেট হলো-কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের লোকদের দিয়ে ভিপি নুরদের ওপর হামলা-নির্যাতন করালে দায়ভার আর ছাত্রলীগের ওপর যাবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি ভিপি নুর ও তার সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা যে হামলা নির্যাতন করেছে সেটা সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশেই হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ব্যানারে মূলত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাই ভিপি নুরদের ওপর হামলা করেছে। সরকারের টার্গেট হলো-ছাত্রলীগ নিয়ে যাতে আর বিতর্ক সৃষ্টি না হয়।
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ভিপি নুর তার সহযোগিদের ওপর হামলা-নির্যাতন করেই ক্ষ্যান্ত থাকেনি। হয়রানি করার জন্য এখন তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দিচ্ছে।
প্রথমে ভিপি নুরসহ সাধারন ছাত্র অধিকার রক্ষা ফোরামের ২৯ জনের বিরুদ্ধে দিয়েছে চুরি ও হত্যাচেষ্টা মামলা। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ডাকসু ভবনের দরজা বন্ধ করে লাইট অফ করে ভিপি নুর ও অন্যদেরকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে। স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নৃশংস ঘটনা আর ঘটেনি। এমন কি ঢাবি প্রশাসন সরাসরি হামলাকারীদেরকে সহযোগিতা করেছে। এরপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদেরকে যাতে চিহ্নিত করা না যায় সেইজন্য সিসিটিভির ফুটেজগুলোও তারা গায়েব করেছে। এসব সন্ত্রাসীদের বিচার না করে সরকার এখন হামলার শিকার ভিপি নুরের বিরুদ্ধে হাস্যকর চুরির মামলা দেয়াচ্ছে।
এরপর, শনিবার ভিপি নুর ও রাশেদ খানের বিরুদ্ধে ধর্মীয় উস্কানির অভিযোগ এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে এক ছাত্রলীগ নেতা।
এসব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলার ঘটনায় সর্বত্রই ক্ষোভ বিরাজ করছে। ওরা মাইরও খেল আবার মামলাও খাচ্ছে। রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মহল বলছেন-শেখ হাসিনা এখন বিএনপি-জামায়াতের পর ভিপি নুরকেই প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করছেন। নুরকে এখন তিনি বড় ধরণের হুমকি হিসেবেও দেখছেন। এজন্যই তাকে দমাতে একের পর এক হামলা-মামলা ও নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছেন।