অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাজারের লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির মতো সরকারের মন্ত্রীরাও এখন লাগামহীন হয়ে পড়ছে। দিন দিন যত যাচ্ছে সরকারের মন্ত্রীদের পাগলামি মনে হয় ততই বাড়ছে। পাগলের মতো যখন যা খুশি তাই বলে যাচ্ছে। নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সরকারের মন্ত্রী অবহিত কিনা সেই প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।
আর ভোটার বিহীন সরকারের মন্ত্রীদের পাগলা নতুন নয়। দিন দিন এখন তাদের পাগলামির মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কখন যে কি বলে ফেলেন তারা মনে হয় নিজেরাও সেটা জানেন না।
সম্প্রতি পররাষ্ট্র, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিন মন্ত্রীর পাগলামীতে দেশের মানুষ শুধু ক্ষুব্ধই হচ্ছে না, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওদেরকে নিয়ে মানুষ চরম রসিকতাও করছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভাইয়ের কোটায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন একে আব্দুল মোমেন। অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক কর্মকান্ডে তার ন্যূনতম কোনো সফলতা নেই বললেই চলে। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতেতো তার সফলতা একেবারে জিরো। কিন্তু পাগলামীতে তিনি একেবারে সামনের সারিতে আছেন। কিছু দিন দালালি করতে গিয়ে বলে ফেললেন-ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক নাকি এখন স্বামী-স্ত্রীর মতো। তার এই বক্তব্য নিয়ে সারাদেশেই হাস্যরসের বন্যা বইয়ে যায়। জানা গেছে, তার বক্তব্যে নাকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিব্রত হয়েছেন।
এরপর গত পরশু তিনি বললেন-আমাদের ৮ হাজার নারী কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ৫৩ জন নারী কর্মীর মৃতদেহ এসেছে। যা খুবই নগণ্য।
নিজেদের সহায় সম্বল বিক্রি করে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে টাকা উপার্জনের জন্য সৌদি যায় নারীরা। কিন্তু দেশটিতে গিয়েই তারা সৌদিদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয় তারা। বিভিন্নভাবে তারা দেশটিতে হত্যারও শিকার হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৫৩ জন নারী শ্রমিকের লাশ এসেছে দেশে। অথচ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন-এই সংখ্যা খুবই নগণ্য। এরপর তিনি খুঁজছেন কেউ আত্মহত্যা করেছে কি না। তার বড় ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল হলমার্কের ৬ হাজার কোটি টাকাকে বলেছিল- এটা কোনো টাকা না। আর এখন তার ছোট ভাই-৫৩ নারী শ্রমিকের মৃতদেহকে বলছেন-এটা কোনো সংখ্যা না।
শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। দেশে এখন সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে পেঁয়াজ। ৪০ টাকা কেজির পেঁয়াজ এখন ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। বাজারে পেঁয়াজের দাম যখন ২০০ টাকা কেজি তখন সংসদে দাড়িয়ে তিনি দাবি করেছেন, ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় বাজারে অস্থিতিশীল অবস্থা হলেও সরকার অতিসত্ত্বর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। তার কথায়- পেঁয়াজের বাজার এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে।
কিন্তু, তার এই বক্তব্যের পর পরের দিন সকালে বাজারে পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা কেজি। ৪০ টাকা কেজির পেঁয়াজ যখন ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হয় তখন এটাকে নিয়ন্ত্রণ বলে কোন যুক্তিতে? শিল্পমন্ত্রীর এই বক্তব্যে মানুষ শুধু ক্ষুব্ধ হয়নি, অশালীন ভাষায় তাকে গালাগালিও করছে। মন্ত্রীপরিষদে পাগল-ছাগলে ভরে গেছে বলেও মন্তব্য করছেন অনেকে।
রেলমন্ত্রী
এরপর, আরেক পাগলামী শুরু করেছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। সিরাজগঞ্জের ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ বৃহস্পতিবার সকল গণমাধ্যমে এসেছে। ট্রেনটি উল্লাপাড়া স্টেশনে ঢোকার কথা ছিল দুই নম্বর লাইন দিয়ে। কিন্তু স্টেশনমাষ্টার সিগন্যাল দিয়েছিল এক নম্বর লাইনে। যার কারণে ট্রেনের ৮টি বগি লাইচ্যুত হয়ে কয়েকটি বগিতে আগুন ধরে যায়।
কিন্তু, এখানেও বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র দেখছেন রেলমন্ত্রী। এর আগে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীনরা রেল লাইনে আগুন দিয়ে এর দায় বিএনপি-জামায়াতের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল। এখন তারা দুর্ঘটনার দায়ও চাপাচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের ওপর।
দেখা যায়-সরকারের এমন কোনো মন্ত্রী নেই যার মধ্যে মাতলামি-আর পাগলামির লক্ষণ দেখা যায়নি। মন্ত্রীরা এখন পাগলের মতোই আচরণ করছেন। অনেকেই মনে করেন, সরকারের মন্ত্রীপরিষদ এখন পাগল মেলায় পরিণত হয়েছে। কারণ, এখানে আর কোনো সুস্থ মানুষ নেই।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ এখন পাগলের কারখানা!