অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপের মুখে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আবারো সোচ্চার হচ্ছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে তারা বড় ধরণের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আন্দোলন ছাড়া যে সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেবে না এটা এখন তারা নিশ্চিত হয়েছেন। আগামী দিনের আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি নেতারা এখন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করছেন।
ছাত্রদলের কমিটি গঠনের পর বিএনপি এখন অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নতুন কমিটি ঘোষণার কাজ করছে। এসব কমিটি গঠনের পরই তারা দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে পর্যায় ক্রমে কর্মসূচি ঘোষণা দেবে।
কিন্তু, ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে নিয়ে বিএনপি যখন সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিক তখনই কথিত ঐক্যের নামে ছলেবলে কৌশলে বিএনপির আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাইছেন ড. কামাল হোসেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐক্যফ্রন্ট যে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। এই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য কথিত ঐক্য প্রতিষ্ঠার নামে বিএনপিকে বড় ধরনের আন্দোলন থেকে সরিয়ে আনা। অনেকেই বলছেন, বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলন থেকে বিএনপিকে সরিয়ে নিতে সরকারের পরিকল্পনার অলোকে এই সমাবেশ থেকে দীর্ঘমেয়াদী কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করবে ড. কামালের তৈরী কথিত ঐক্যফ্রন্ট।
জানা গেছে, আগামী ২২ অক্টোবরের সমাবেশে সরকার বাধা দেবে না। এই সমাবেশের পর কথিত ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা বিভাগীয় ও জেলায় জেলায় সমাবেশ করবে। এসব করে তারা কমপক্ষে ৬ মাস পার করে দেবেন বলে দাবি করছেন সূত্রটি। কর্মসুচি বাস্তবায়নে বিএনপিকে কাজে লাগিয়ে রাজপথে আন্দোলন করা থেকে বিরত রাখতে চায় তারা। অনেকেই বলছেন হয়তো ৩০ ডিসেম্বর তারা রাজধানীতে আরেকটি সমাবেশের ডাক দিতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কথিত এই ঐক্যফ্রন্টের নামে কামালের এসব তৎপরতায় বিএনপি নেতাকর্মীরাও মারাত্মক ক্ষুব্দ। ড. কামাল যে আসলে খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না তৃণমূল নেতাকর্মীরাও এটা এখন বুঝতে পেরেছে।
এদিকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে কামালের গন্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির এক নেতা। তিনি বলেন, নেত্রীকে মুক্ত করতে হলে ড. কামালের গন্ডি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা যখনই নেত্রীর মুক্তির জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নেই তখনই ড. কামাল কথিত ঐক্য প্রতিষ্ঠার নামে ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামেন। তিনি আসলে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মহল মনে করছেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতারা ড. কামালের ফাঁদে পা দিয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামের এক সরকারি ছায়ায় বিএনপি আটকা পড়েছে। ড. কামাল আসলে খালেদার মুক্তি চান না। এজন্য বিএনপি যদি তাদের দলীয় প্রধানের মুক্তি চায় তাহলে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে এসে রাজপথের আন্দোলনের নামতে হবে। অন্যথায় এরশাদের জাতীয় পার্টির মতো একদিন নি:শ্বেস হয়ে যাবে দলটি।