সোমবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

আবরার হত্যা: আলামত সংগ্রহের নামে এ কেমন নাটকীয়তা!

অক্টোবর ১৭, ২০১৯
in Home Post, slide, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter

অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক

আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে যেন নাটকীয়তার শেষ নেই। ডিবি পুলিশের তিনজন সদস্য আবরার হত্যাসংশ্লিষ্ট আলামত সংগ্রহ করছেন—এমন একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে, কোনো গ্লাভস ছাড়াই খালি হাতে তাঁরা বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে বিভিন্ন আলামত নাড়াচাড়া করছিলেন। তাঁদের পায়ে কোনো শু কভারও দেখা যায়নি।

প্রশ্ন উঠেছে আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো এমন একটি স্পর্শকাতর অপরাধের ক্রাইম সিন থেকে আলামত উদ্ধারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এ কেমন অসতর্কতা, অদক্ষতা এবং অপেশাদারি আচরণ?

ফরেনসিক সায়েন্স বলছে, খালি হাতে কোনো আলামত ধরা যাবে না। এটি ফরাসি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং অপরাধবিজ্ঞানী এডমুন্ড লোকার্ড প্রবর্তিত একটি নীতির সঙ্গে এ বিষয়টি জড়িত। এই নীতি অনুসারে একজন অপরাধী যখন অপরাধ করে ক্রাইম সিন থেকে চলে যায়, তখন সে সেখান থেকে কিছু জিনিস তার জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে নিয়ে যায় এবং তার শরীরের কোনো চিহ্ন (চুল, পশম, আঙুল বা পায়ের ছাপ ইত্যাদি) ফেলে যায়। এটাকে বলে প্রিন্সিপল অব এক্সচেঞ্জ।

সে কারণেই অপরাধ সংঘটনের পরপরই ক্রাইম সিনকে আলামত উদ্ধারের আগপর্যন্ত সংরক্ষণ করা হয়, যাতে আলামত উদ্ধারে প্রশিক্ষিত ব্যক্তি ছাড়া সেখানে অন্য কেউ প্রবেশ করতে না পারে। কারণ, তাতে আলামত নষ্ট বা পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। আর তাই তদন্তকারীদের হাতে গ্লাভস, পায়ে শু কভার পরানো হয় প্রয়োজনে বিশেষ ধরনের পোশাকও পরতে হয়, যাতে তাঁদের শরীর থেকে কোনো কিছু ক্রাইম সিনকে ‘দূষিত’ করতে না পারে। এ নিয়ম না মেনে আলোচ্য ভিডিওটিতে যেভাবে আলামত সংগ্রহ করতে দেখা গেছে, তা পৃথিবীর অনেক দেশের আদালতই আলামত হিসেবে গ্রহণ করবেন না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং ফরেনসিক আইন বিশেষজ্ঞ কাজী মাহফুজুল হক।

তিনি প্রথম আলোর একটি কলামে লিখেছেন, যাঁরা আলামত সংগ্রহ করছিলেন, তাঁরা পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে ক্রাইম সিনে এসেছেন বলে মনে হয়নি। কারণ, আলামত বহন করার মতো কোনো এভিডেন্স ব্যাগ তাঁদের কাছে ছিল না। ডিবির একজন সদস্যকে দেখা যায় তিনি কক্ষের জানালার তাক থেকে কিছু ব্যান্ডেজসদৃশ বস্তু এবং ব্যবহৃত টিস্যু পেপার একটি স্বচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যাগকে গ্লাভস হিসেবে ব্যবহার করে একটি নীল রঙের পলিথিন ব্যাগে ভরছেন এবং ওই ব্যাগটি কোনোভাবেই এভিডেন্স ব্যাগ নয়। ক্রাইম সিনে একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের এ ধরনের কর্মকাল অপেশাদারত্বের পরিচয় বহন করে।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, ডিবির তিন সদস্যের সঙ্গে এমন ব্যক্তিদেরও দেখা যাচ্ছিল, যাঁদের ওই সময়ে ওই স্থানে উপস্থিত থাকার কথা নয়। খুব সম্ভবত এঁদের মধ্যে সাংবাদিকও ছিলেন। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে একজন ডিবি সদস্য বলছেন, তাঁরা আলামত উদ্ধার করতে এসেছেন এবং দরকার হলে আবার আসবেন। তার মর্মার্থ হচ্ছে কক্ষটি এখনো ক্রাইম সিন এবং আলামত উদ্ধার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আলামত উদ্ধারে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ছাড়া ওই স্থানে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। আলামত উদ্ধার শেষ না হতেই ক্রাইম সিনে ডিবি পুলিশের উপস্থিতিতে তদন্তসংশ্লিষ্ট নয়—এমন ব্যক্তির উপস্থিতি সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।

এর আগে সাগর-রুনি হত্যাকালের ক্রাইম সিন নষ্ট করে ফেলার অভিযোগ উঠেছিলো সাংবাদিকদের বিরোদ্ধে। সংগত কারণেই প্রশ্ন উঠতে পারে, ক্রাইম সিন সংরক্ষণের দায়িত্ব কার এবং সে দায়িত্ব ঠিকভাবে পালিত না হলে দায় কার ওপর বর্তাবে?

ফরেনসিক বিজ্ঞানের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হলো প্রিন্সিপল অব প্রগ্রেসিভ চেঞ্জ। এই নীতি অনুসারে অপরাধী, ক্রাইম সিন এবং অপরাধে ব্যবহৃত উপকরণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়। এই বদল কখনো হয় ধীরে এবং কখনো দ্রুত। এ কারণেই যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে আলামত সংগ্রহ করতে হয়, অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে হয়। আলোচ্য ভিডিওটিতে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন ব্যক্তির ক্রাইম সিনে উপস্থিতি, তদন্তকারীদের অপ্রস্তুতভাবে ক্রাইম সিনে আগমন এবং অসতর্কভাবে আলামত সংগ্রহ দেখে মনে হয়েছে, তাঁরা ক্রাইম সিন বা আলামতের পরিবর্তন নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযয়ের এই ফরেনসিক আইন বিশেষজ্ঞ বলেন, সঠিক নিয়মকানুন না মেনে আলামত সংগ্রহ করলেই যে আলামত পুরোপুরি নষ্ট বা দূষিত হয়ে যাবে, এমনটি নয়। আলামতের পাশাপাশি আলামত কীভাবে সংগৃহীত হয়েছে, আদালত তা-ও দেখবেন। আলামত নষ্ট বা দূষিত না হলেও আদালত যদি দেখেন আলামত সংগ্রহের প্রচলিত বৈজ্ঞানিক নিয়মনীতি না মানার কারণে আলামত নষ্ট বা দূষিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, তাতেই সাক্ষ্য দুর্বল হয়ে যাবে। আর দুর্বল সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে করা মামলাও দুর্বল হবে। হত্যাকাণ্ডটির কোনো ভিডিও ফুটেজ নেই, যা আছে তা হলো রুমের সামনের বারান্দা দিয়ে অভিযুক্তদের যাওয়া-আসা। তার চেয়েও বড় কথা হলো, ২০০২ সালের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন এবং আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন—এই দুটি স্পেশাল ফৌজদারি আইন ছাড়া ভিডিও ফুটেজ সাক্ষ্য নেওয়ার সরাসরি কোনো বিধান আমাদের ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনে নেই। এ কারণেই আমরা দেখেছি কিছু কিছু মামলায় নিম্ন আদালতের বিজ্ঞ বিচারকেরা ভিডিও ফুটেজ সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করলেও বেশির ভাগ মামলায় তা গ্রহণ করা হয়নি। এ রকম একটি অবস্থায় ক্রাইম সিনের আলামত খুব গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে। সে জন্য এসব আলামত সংগ্রহে খুবই সতর্ক থাকতে হয়, যা আলোচ্য ভিডিও চিত্রে আমরা দেখি না।

আমাদের দেশে যেভাবে ঢাকঢোল পিটিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়, বিভিন্ন মিডিয়ায় ছবি ছাপিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করা হয়, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়, সেভাবে অভিযুক্তরা আদালতের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হন না। বাংলাদেশ ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে কম।

বিদেশি টিভি চ্যানেল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে এ দেশের খুব সাধারণ মানুষও আগ্রহভরে অপরাধসংক্রান্ত অনুষ্ঠান দেখেন এবং তাঁরা জানেন ক্রাইম সিনে আলামত সংগ্রহ করার সময় গ্লাভস পরতে হয়ে, আলামত এভিডেন্স ব্যাগে ভরতে হয়। আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো এমন একটি স্পর্শকাতর অপরাধের ক্রাইম সিন থেকে আলামত উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এমন অসতর্কতা, অদক্ষতা এবং অপেশাদারি আচরণ সাধারণ জনগণকে সন্দেহের দোলাচলে ফেলতে পারে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • প্রশাসনের লোকদের দুর্নীতির সুযোগ করে দিচ্ছে শেখ হাসিনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD