অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা জোর করে নির্বাচনে জিততে চান না। জনগণকে খুশি করেই নির্বাচনে জিতেন। শনিবার বিকেলে রাজধানীতে এক সমাবেশে দলের নেতাকর্মীদেরকে সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়ে এসব কথা বলেন।
কিন্তু, বিগত দিনের সিটি নির্বাচনের দিকে তাকালে দেখা যায়-শেখ হাসিনা শুধু জোর করেননি, নজিরবিহীন ভোটডাকাতির মাধ্যমে সিটি নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে দলের প্রার্থীদেরকে বিজয়ী করেছেন।
২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন এবং উত্তর সিটিতে প্রার্থী ছিলেন ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক। আর বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দক্ষিণে মির্জা আব্বাস ও উত্তরে তাবিথ আওয়াল।
সেই নির্বাচনের ভোটের দৃশ্যটা কেমন ছিল? এদেশের জনগণ নিশ্চয় সেদিনের ভয়াবহ ভোট ডাকাতির কথা ভুলে যাননি। সেদিন দলীয় প্রার্থীদেরকে জেতানোর জন্য শেখ হাসিনার গুন্ডা-পান্ডারা শুধু ভোট কেন্দ্রই দখল করেনি, বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীদের এজেন্টদেরকেও কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়া সাধারণ ভোটাররাতো সেদিন ভোট কেন্দ্রের কাছেই যেতে পারেনি।
ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট, ব্যালট ছিনতাই, সাংবাদিকসহ বিএনপি-জামায়াতের এজেন্টদেরকে মারধর করাসহ এমন নজিরবিহীন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল যে, বেলা ১১ টার পরই বিএনপির দুই প্রার্থী ভোট বর্জন করতে বাধ্য হন। এরপরও ওবায়দুল কাদের বললেন-তার নেত্রী শেখ হাসিনা নাকি নির্বাচনে জোর করে জিততে চান না। এর চেয়ে নির্লজ্জতা আর কী হতে পারে?
এরপর অনুষ্ঠিত হলো বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা, গাজীপুর, রংপুর ও সিলেট সিটি নির্বাচন। এসব নির্বাচনে শেখ হাসিনার গুন্ডা-পান্ডারা প্রায় সব কেন্দ্রই দখল করে নিয়েছিল। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে শুধু বিএনপি নয়, মেয়র পদের প্রায় সব প্রার্থীই ভোট বর্জন করতে বাধ্য হয়েছিল।
এসব ভোট ডাকাতি নিয়ে দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার ও সামাজিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি বিদেশিরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। আর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের কথাতো না বললেই চলে।
তাই ওবাইদুল কাদেরের এমন উক্তিতে সচেতন মহল বলছেন, ওবায়দুল কাদের নির্লজ্জের মতো অবলিলায় বলে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা নাকি জনগণকে খুশি করে নির্বাচনে জিতে। ওই যে কথায় বলে-চুরের মায়ের বড় গলা। ভোট চুরি করে এখন তারা বড় গলায় কথা বলছেন।