অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও ৭৪’র সন্ত্রাসী সংগঠন গণবাহিনীর প্রধান হাসানুল হক ইনুরা বিগত ৫ বছর ধরে বিএনপি-জামায়াতকে আগুন সন্ত্রাসী বলে গালাগালি করে আসছে। সভা-সমাবেশে শেখ হাসিনার ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ থাকে-বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। অথচ বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ যে এজেন্সির লোক দিয়ে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে এটা একাধিকবার প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা তাদের মিথ্যাচার অব্যাহত রেখেছে।
তবে, শেখ হাসিনা যতই মিথ্যাচার করুক না কেন আসলে কারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে মানুষকে হত্যা করে এটা এখন প্রত্যক্ষ দেখেছে দেশ-বিদেশের মানুষ। ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আগুনে পুড়িয়ে যেভাবে হত্যা করেছে তা যেন ইতিহাসের সকল নির্মমতা ও বর্বরতাকে হার মানিয়েছে।
নুসরাতের হত্যাকারী আটক আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা হত্যাকাণ্ড নিয়ে যা বলেছেন তার মধ্যে চুম্বক অংশ হলো, বান্ধবী নিশাতকে মারধর করা হচ্ছে, এমনটা বলার পর ছাদে ছুটে গিয়েছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। সেখানে পাঁচজন মিলে তাঁকে ছাদে চিত করে শুইয়ে ফেলেন। তাঁর পরনের ওড়নাটি দুভাগ করে বেঁধে ফেলেন হাত-পা। এরপর এক লিটার কেরোসিন নুসরাতের গলা থেকে পা পর্যন্ত ঢালা হয়। ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পায়ে। আগুন যখন সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, তখন এই পাঁচজন সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন।
ছাত্রলীগ নেতা আরও বলেছেন, নুসরাতকে মেঝেতে শুইয়ে ফেলার পর জোবায়ের নুসরাতের ওড়না দুই টুকরো করে তাঁর হাত ও পা বেঁধে ফেলেন। জাবেদ তখন নুসরাতের সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেন। এরপর শাহাদাতের চোখের ইশারায় জোবায়ের তার পকেট থেকে দেশলাই বের করে কাঠি জ্বালিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর পাঁচজনই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন। নামতে নামতেই তিনজন ছাত্র তাঁদের বোরকা খুলে শরীর কাপড়ের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলেন। ছাত্রী দুজন মাদ্রাসায়ই তাঁদের পরীক্ষার কক্ষে চলে যান। আর বাকি তিনজন নিজেদের মতো করে পালিয়ে যান।
৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা বাঙ্গালীদেরকে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ইতিহাসে আমরা এমন ঘটনা পড়েছি এবং মুরব্বিদের কাছ থেকে শুনেছি। কিন্তু, এইভাবে মেয়েদেরকে হাত-পা বেঁধে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এমন ইতিহাস আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
নুসরাতের হত্যাকাণ্ডের এসব ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর মানুষ স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে। শরীরের রক্ত শীতল হয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের একটিই প্রশ্ন-এমন নিষ্ঠুর, নৃশংস, নির্মম ও বর্বরোচিত কায়দায় একটি মেয়েকে কিভাবে হত্যা করলো?
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ বলছেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের এই বর্বরতা ৭১ সালের পাক হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে। আর এমনটা শুধু আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষেই সম্ভব। সাপের মত পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে যারা লাশের ওপর নৃত্য করতে পারে তাদের পক্ষে সবই সম্ভব।