সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণায় নেমেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তরুণদের উদ্দেশে এই ভিডিওবার্তায় ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল তাঁদের জেগে উঠতে বলেছেন। তাঁদের ওপর ভরসা করে বলেছেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তরুণেরাই ঠিক করবেন।
গতকাল শুক্রবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক কামাল হোসেন ও মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আলাদা ভিডিওবার্তায় তরুণদের উদ্দেশে কথা বলেছেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রচারণার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেও বেছে নিয়েছে। ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নামক ফেসবুক পেজে এ ভিডিও দুটি দেখা যাচ্ছে।
কামাল হোসেনের ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, দরজা খুলে ধীর পায়ে লাঠিতে ভর করে হেঁটে এগোচ্ছেন তিনি। ভিডিওর ধারা বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ কে? তুমিই তো বাংলাদেশ। আরে বাংলাদেশ তো তুমি। এই যে তুমি ২৫ বছরের ছেলেটা, স্বপ্ন দেখছ নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। আর ওই যে তুমি ২২ বছরের মেয়েটা, জয় করতে চাও এভারেস্ট। আরে তুমিই তো বাংলাদেশ। তুমি হার মাননি, আমি জানি।’
ভিডিওতে আরও বলা হয়, ‘ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ হারবে না। তরুণদের হাত ধরে একাত্তরের ডিসেম্বরের বিজয়, নব্বইয়ের গণতন্ত্র এসেছে।’ ২০১৮–এর ডিসেম্বরেও তরুণেরা জেগে উঠবে বলে আশা করা হয়। ভিডিওটির শেষে কামাল হোসেন বলেন, ‘জেগে ওঠো বাঙালি, তোমার কান্ডারি প্রস্তুত।’
বিএনপি মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুলের ভিডিওতে তিনি প্রথমবারের মতো ভোটার হওয়া তরুণদের উদ্দেশে কথা বলেন। সেখানে তিনি ১৯৭১ সালে নিজের যুদ্ধে অংশ নেওয়ার কথা স্মরণ করেন। ফখরুল বলেন, ‘আমরা শুধু আমাদের মনের কথাটা শুনেছিলাম। শুধু একটা স্বপ্নকে তাড়া করেছিলাম—দেশটা মুক্ত হবে। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে বাংলাদেশ। আমার বয়স এখন ৭০। আমি এই বয়সেও একই স্বপ্ন তাড়া করছি। আমি তো আশায় ভরপুর।’
বিএনপি মহাসচিব ভিডিওতে বলেন, তাঁকে অনেকেই বলে যে আওয়ামী লীগ তাঁদের ভোট খেয়ে ফেলবে। আওয়ামী লীগ তাঁদের তাচ্ছিল্য করে। কিন্তু ফখরুল তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি বলি কি আপনারা দেখিয়ে দিন, আপনারাই বাংলাদেশ। ইউ ম্যাটার, আপনারাই দেশের মালিক। আপনার ভোটেই ঠিক হবে এদেশের ভবিষ্যৎ। আপনার বিবেচনা যাঁকে বলে তাঁকেই ভোট দিন। আমি সেই সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করি।’
তরুণদের সকাল সকাল ভোট দিতে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, যৌবনে এই দেশটার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। বার্ধক্যে এসে আপনাদের কাছে আমি শুধু একটা দিন চাইছি- ৩০ ডিসেম্বর। শুধু একটা দিন। বাংলাদেশের জন্য। ৩০ ডিসেম্বর সকাল সকাল ভোট দিন। দেখিয়ে দিন যে আপনারা শুধু ভোট দিতেই জানেন না, ভোট ডাকাতিও আটকাতে পারেন। গণতন্ত্রটা বাঁচাতে হবে। একটা আলো আমরা খুঁজে পেয়েছিলাম আমাদের যৌবনে। যেটা আমরা আপনাদেরকে দিতে চাই। এ আলোটা আপনারা শুধু আপনাদের সন্তানদের কাছে পৌঁছে দেবেন। তাহলেই হবে। আলোটাকে নিভতে দেবেন না।’
এ ভিডিও বার্তার ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই দুই নেতা প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রচারণার এখন অন্যতম অনুষঙ্গ এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। তাই নেতারাও এ মাধ্যমে সক্রিয় হচ্ছেন।
সূত্র: প্রথম আলো