অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেশের রাজনীতি। ড. কামাল হোসেন, আ স ম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মানুষের মধ্যে একটা স্বস্তি ফিরে আসে। সকল শ্রেণি পেশার মানুষ মনে করছিল দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতিতে যে সংকটটা ছিল এবার সেটার নিরসন হবে। এবারের নির্বাচনে সবাই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। কিন্তু, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট যখনই সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানালো, তখনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আবার সেই বাকা পথে হাটতে শুরু করলো।
প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে বিরোধী জোটের প্রার্থীদের প্রচারণায় হামলা-ভাঙচুর চালাচ্ছে। বেছে বেছে সক্রিয় নেতাকর্মীদেরকে বাসা-বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। মারধর ও গুলি করে অনেককেই পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে। হামলা-ভাঙচুর ও মারধরের ভয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রচারের কাজে রাস্তায় বের হতে পারছে না। সরকার সারাদেশে এক আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছে।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উল্টো বিএনপি-জামায়াতের দিকে আঙ্গুল তুলে বলছেন যে তারা প্রচারণায় না নেমে ঘরে বসে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনা বুধবার ও বৃহস্পতিবার বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত যানবাহন ও নিজেদের অফিসে আগুন দিয়ে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপানোর ষড়যন্ত্র করছে। তারা নির্বাচনের দিন মুজিব কোট ও নৌকার ব্যাজ পরে সহিংসতা সৃষ্টি করবে। এছাড় পুলিশের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন শেখ হাসিনা।
তার এ বক্তব্য নিয়ে এখন সারাদেশে তোলপাড়। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে ফুটপাথের চায়ের দোকান পর্যন্ত শুধু শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য নিয়েই পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা হচ্ছে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সবার বক্তব্য একটাই, যারা নির্বাচনী প্রচারণায় রাস্তায় নামতে পারছে না তারা আবার গাড়িতে আগুন দেবে কীভাবে?
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সরকারের ভয়ঙ্কর পরিকল্পনার কথা। বিএনপি-জামায়াতকে ফাঁসাতে সরকার যানবাহন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত, কূটনৈতিক পাড়ায় হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু কর্মকর্তাকে হত্যাসহ বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের দিয়ে। যেমনভাবে ২০১৪ সালে ও ২০১৫ সালের অবরোধের সময় করা হয়েছিল। এসব ঘটনার জন্য পরে দায়ী করা হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি ও জামায়াতকে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, আওয়মী লীগ যদি দেখে যে ক্ষমতায় আসতে পারবে না তাহলে তারা নিজেরাই নির্বাচন বানচাল করে দেবে। এজন্য যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হয় সেটা তারা করবে। আর বিএনপি-জামায়াতকে সাইজ করার জন্য যা করা দরকার আওয়ামী লীগ তাই করবে।
অপরদিকে, রাজনীতিক বিশ্লেষকরাও মনে বলছেন, শেখ হাসিনার বক্তব্য বড় ধরণের কিছুর সংকেত মনে হচ্ছে। অতীতের মতো তারা এবারও গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে বিএনপি জামায়াতের ওপর দোষ চাপাবে।