আইন মেনে সবার প্রতি সমান আচরণ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের সমন্বয়ক কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। অলি আহমেদ বলেন, দেশ ক্রমেই রক্তপাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য দায়ী সরকার।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনের ২০-দলীয় জোটের প্রার্থীদের উপস্থিতিতে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অলি আহমেদ ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান সেখানে বক্তব্য দেন।
অলি আহমেদ দাবি করেন, দেশে এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা স্বাধীন বাংলাদেশে ছিল না। পাকিস্তান আমলেও ছিল না। এটার সঙ্গে তুলনা হয় হিটলারের জার্মানির। তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তাদের কাছে ফোন করলে তাঁরা ধরছেন না। প্রার্থী হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ফোন করতেই পারি। কিন্তু তাঁরা ভয়ের মধ্যে আছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা আমাদের ফোন ধরছেন না। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় ২০-দলীয় ঐক্যজোটের নেতা-কর্মীদের হয়রানিমূলক গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মামলা দেওয়া হচ্ছে।’
অলি বলেন, সবার উচিত ন্যায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। দেশকে ধ্বংস এবং অরাজকতার দিকে ঠেলে দেওয়া নয়। শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়া কোনো অবস্থায় কাম্য নয়। জনগণ সচেতন এবং সর্বত্র টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। সরকারি কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়ে অলি আহমেদ বলেন, ‘২০-দলীয় জোট বা ঐক্যফ্রন্ট কারও বিরুদ্ধে নয়। আমরা প্রতিশোধমূলক বা প্রতিহিংসামূলক কাজে বিশ্বাসী নই। আমরা চাই জনগণ যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে অলি আহমেদ বলেন, ‘আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া আপনার দায়িত্ব। কেউ চিরদিন বেঁচে থাকবেন না। একদিন সবাইকে বিদায় নিতে হবে। সেই বিদায় যেন সম্মানজনক হয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি দল প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে প্রচারণায় নেই। সরকারি দল আইন মানছে না।’
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, মিডিয়া (গণমাধ্যম) আগের মতো দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। ১০০ ভাগ না পারুক, ৮০ ভাগ প্রকাশ পেলে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন গ্রেপ্তার হচ্ছে, অভিযান চলছে। কিন্তু কী কারণে এসব হচ্ছে, তা যেন মিডিয়ায় আসে। দলীয় নেতা-কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে নোমান বলেন, ‘আর পিছু হটার সময় নেই। মামলা-হামলা তো হচ্ছে। কিন্তু আমাদের ভয় নেই। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেব।’
সূত্র: প্রথম আলো