অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনলাইন জগতে বিরোধী দলের কার্যক্রমকে দমন করার উদ্দেশ্যে সরকার খুব শীঘ্রই কঠোর কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করতে যাচ্ছে। সাইবার থ্রেট ডিটেকশন বা সাইবার হুমকি চিহ্নিতকরন নামে একটি প্রকল্প সরকার আগে থেকেই নিয়েছিলো যা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল আরো কিছুটা সময় পরে। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী মাসেই সরকার তা চালু করতে যাচ্ছে। সেই সাথে সরকার এমন একটি প্রযুক্তি নিয়ে আসছে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সব ধরনের তথ্য ফিল্টার করতে পারবে এবং সরকারের জন্য নেতিবাচক এমন তথ্যগুলোকে ব্লকও করে দিতে পারবে।
এই প্রযুক্তিটি চালু হচ্ছে আগামী মাসেই। এখানে কর্তৃপক্ষ আগে থেকে কিছু শব্দকে কি-ওয়ার্ড হিসেবে চিহ্নিত করে রাখবে আর সেই শব্দগুলো কেউ ফেসবুকের স্ট্যাটাসে লিখলেই সরকার সংশ্লিষ্ট পোস্টকারীকে চিহ্নিত করে ফেলতে পারবে।
সাইবার থ্রেট ডিটেকশন এন্ড রেসপন্স প্রোজেক্ট নামের এই প্রকল্পের আওতায় সরকার বিরোধী দলীয় ওয়েবসাইটগুলোকেও নিয়ন্ত্রন করতে পারবে। প্রকল্পটি সরকার গ্রহন করেছিল ২০১৭ সালের জুলাই মাসে, আর এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল আগামী বছরের জুন মাসে। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার তড়িঘড়ি করেই প্রকল্পটি চালু করতে চাচ্ছে। আইসিটি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার আজ একটি জাতীয় দৈনিককে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা জানিয়ে আরো বলেন, নিকট অতীতে সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে খুব বিব্রত হয়েছে তাই আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেই ধরনের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি সরকার দেখতে চায়না।
১৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার ২৭০০ জিবিপিএস স্পিডে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে তত্ত্বাবধান করতে পারবে। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশ এই গতির চার ভাগের এক ভাগ গতি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশে ৯ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে আর সরকারী হিসাব মতে ফেসবুক সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করছে ৩ কোটি মানুষ।
আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এই প্রকল্পের অফিস চালু হবে এবং এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য আইসিটি মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান টেকভ্যালীর কর্মকর্তারাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফর করে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন নিয়ে এসেছেন।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য সরকার কেবল এই একটি প্রকল্পের উপরই নির্ভর করছেনা। একটি গোয়েন্দা সংস্থাকেও নিয়মিতভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মনিটর করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা বিআরটিসির সহযোগিতায় বিভিন্ন গেটওয়েতে সংযুক্ত হয়ে এই কাজটি আরো ব্যাপকভাবে করার প্রস্ততি নিয়েছে।
পাশাপাশি সরকার ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সাথেও কয়েক দফা বৈঠক করেছে এবং নির্বাচনের আগে তাদের কাছে আরো বেশ কিছু সহযোগিতা চেয়েছে। আইসিটি মন্ত্রী দাবী করছেন সরকারের সাথে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সম্পর্ক আগের যে কোন সময়ের তুলনায় এখন অনেকটাই ভালো। ফেসবুক অথোরিটিকেও তারা বাংলাদেশের আইন ও প্রচলিত রাজনৈতিক কাঠামো সম্বন্ধে ধারণা দিতে পেরেছেন।
বাংলাদেশে যারা ফেসবুক ব্যবহার করবে তাদের জন্য ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও মোবাইল নাম্বারের ব্যবহার বাধ্যতামুলক করা যায় কিনা সেটা নিয়েও ফেসবুকের সাথে এখন আলোচনা হচ্ছে বলে মন্ত্রী সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন। গতকালও ফেসবুকের কানেক্টিভিটি পলিসির প্রধান আশ্বিনি রানার সাথে আইসিটি মন্ত্রী একটি বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে।