অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
গত শনি, রোব ও সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিত হামলা ও নির্যাতন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। এসব হামলার ভিডিও ও ছবি দেশের সব গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও এসব হামলার ছবি প্রকাশ করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এনিয়ে সারাদেশে চলছে সমালোচনা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও কঠোর ভাষায় সরকারের সমালোচনা করছে।
কিন্তু, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় চরম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন যে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী কেউ ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী না। তারা অনুপ্রবেশকারী। এরা শিবির ও ছাত্রদলের।
ওবায়দুল কাদের ও জয়ের এ বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সচেতন মহলে বড় একটি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তা হলো রামপুরায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ওপর গত সোমবার পুলিশের সঙ্গে মিলে লুঙ্গি আর ছেড়া প্যান্ট পরে লাঠি হাতে যারা হামলা করেছে তারা কারা?
কাদের এবং জয়ের দাবি অনুযায়ী হামলাকারীরা যদি অনুপ্রবেশকারী ও শিবির-ছাত্রদলের হয় তাহলে পুলিশ তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে কেন? আর পুলিশের সামনে যখন এসব ছেলেরা ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সিসি ক্যামেরা, গেট ও নামফলক ভাঙচুর করে তখন পুলিশ তাদেরকে আটক করেনি কেন?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রোববার রামপুরায় রাস্তা দখলে নিতে গিয়েছিল বাড্ডা থানার যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের শক্ত প্রতিরোধের মুখে তারা মেরুল বাড্ডা থেকেই পিছু হঠতে বাধ্য হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের ইটের আঘাতে ২১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি হিরাসহ ৭ জন আহত হয়। এরপর রোববার সন্ধ্যায় তারা যৌথ সভা করে সোমবার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে।
তাদের পরিকল্পনার অন্যতম দিক ছিল, ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের যারা এলাকায় পরিচিত তারা সামনে থাকবে না। সামনে থেকে হামলা ও গুলি করার জন্য বাড্ডা এলাকার বিভিন্ন বস্তি থেকে বখাটে ছেলেদেরকে টাকা দিয়ে ভাড়া নেয়। এরপর সোমবার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করার জন্য ভাড়াটে এই গুন্ডাদেরকে সামনে দিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা থাকে পেছনে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, হামলার সময় আওয়ামী লীগের লুঙ্গি বাহিনীকে পুলিশ সঙ্গে রাখতে আপত্তি করলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের চাপের মুখে এদেরকে মাঝে রাখতে বাধ্য হয়।
শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে এভাবেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা কোথাও সরাসরি হামলা করেছে আবার কোথাও ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা করিয়েছে।