অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটকে বহনকারী দূতাবাসের একটি গাড়িতে হামলার ঘটনায় দেশে ও দেশের বাইরে বেশ আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম নিয়েছে। এরই মধ্যে এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ জানিয়েছে। পাশাপাশি বার্নিকাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
জানা যায় গত শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি নৈশভোজ শেষে ফেরার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ সাত্তারের পরিকল্পনায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
গত শনিবার নাগরিক অধিকার সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় নৈশভোজে অংশ নেন মার্শা বার্নিকাট। ওই একই দিনে রাজধানী জুড়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত কোমলমতি কিশোরদের আন্দোলনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতা-কর্মীরা। এসময় হেলমেট পরিহিত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর প্রকাশ্যে গুলিও চালায়। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার রেশ না কাটতেই রাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের ওপর হামলার খবর পাওয়া যায়। সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় নৈশভোজ শেষে রাষ্ট্রদূতের বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেল আরোহীসহ একদল সশস্ত্র লোক শনিবার রাত ১১টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পথরোধ করে তার গাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীদের অধিকাংশই হেলমেট পরিহিত ছিল। তাদের কারো কারো কাছে লাঠিসোটা, আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র ছিল। তবে নেতৃত্বে থাকা কয়েকজনের মাথায় হেলমেট ছিল না।
হামলাকারীরা গাড়িবহরের দিকে এগোনোর সময় তাদের বাধা দেওয়া হলে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের দুই সদস্যকে উপর্যূপরি ঘুষি মারে হামলাকারীরা। এসময় রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের সদস্যরা হামলাকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পেরেছেন বলে মার্কিন তরফে দাবি করা হয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দলের হাইকমান্ডের প্রত্যক্ষ নিদের্শেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। মোহাম্মদপুরের কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বেই এ হামলা চালানো হয়। যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এম. এ. সাত্তার।
মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান রাসেল এর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় বার্নিকাটের গাড়িতে। হামলায় নেতৃত্বে থাকা অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- একরাম চৌধুরী, প্রতিক হাসান শুভ প্রমুখ।
এদিকে পুলিশের সহযোগিতায় বার্নিকাট নিরাপদে সরে পড়ার পর সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার পর বদিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাসায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠান ছিল।
বাসা থেকে তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় তার গাড়িতে হামলার চেষ্টা করা হয়। এরপর আমার বাড়িতে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। তারা বাড়ির দরজা-জানালা ভাংচুর করেছে। বদিউল আলম মজুমদার রোববার মোহাম্মদপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগটি জিডি আকারে নেয় পুলিশ। অবশ্য ওই ঘটনায় বদিউল আলম মজুমদার রোববার যে জিডি করেছেন, এতে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি।