অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমকে গতকাল রোববার রাতে তাঁর ধানমণ্ডির বাসা থেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ। খবর প্রথম আলোর।
রেহনুমা আহমেদ বলেন, গতকাল ধানমণ্ডির ৯/এ সড়কের বাসার চারতলা থেকে শহিদুলকে ধরে নিয়ে গেছে ডিবি পরিচয় দেওয়া একদল লোক।
গতকাল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরায় বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন নিয়ে শহিদুল আলমের সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। জিগাতলায় সংঘর্ষের ছবি তোলার সময় ছাত্রলীগ তার উপর হামলাও চালায়।
শহিদুলের সহকর্মী এ এস এম রেজাউর রহমান বলেন, শহিদুল যে বাসায় থাকেন, তার নিচতলার নিরাপত্তাকর্মী মো. জালাল তাঁকে বলেছেন, সাড়ে আটটার দিকে ১৫টির মতো গাড়ি বাসার আশপাশে এসে দাঁড়ায়। তখন পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল, তাই জালাল ভেবেছিলেন, এসব গাড়ি সেখানেই এসেছে। একটু পরে ওসব গাড়ি থেকে লোকজন নেমে জালালকে ফটক খুলতে বাধ্য করেন। বাড়িটির গাড়ি বারান্দায় তাঁরা জোর করে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস ঢুকিয়ে দেন। জালালকে আটকে রাখা হয়। তখন জালাল অনুপ্রবেশকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে তাঁরা নিজেদের ‘ডিবি’ বলে দাবি করেন এবং তাঁদের কোথাও ঢুকতে বাধা দিলে সমস্যা হবে বলেও জালালকে সতর্ক করেন। এরপর লোকগুলো সিঁড়ি দিয়ে চারতলায় উঠে যান। বাসায় শহিদুল একাই ছিলেন, স্ত্রী রেহনুমা তিনতলায় এক সহকর্মীর বাসায় দাওয়াতে গিয়েছিলেন। ওই বাসায় শহিদুলেরও দাওয়াত ছিল, তিনি স্ত্রীকে রেখে কিছু আগে নিজের ফ্ল্যাটে ঢোকেন। সেখান থেকেই লোকগুলো শহিদুলকে নিয়ে লিফট দিয়ে নিচে নামেন। এ সময় শহিদুলের চিৎকার শুনে রেহনুমাও তিনতলার বাসা থেকে বের হয়ে আসেন। তবে নামতে নামতে শহিদুলকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান লোকগুলো। গাড়িটির গায়ে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লেখা ছিল। তাঁরা বাড়ির সিসি ক্যামেরা অচল করে দেন। ক্যামেরার ফুটেজ যেখানে সংরক্ষণ করা হয়, সেই ডিভিআর বক্সও নিয়ে যান।
শহিদুলের স্ত্রী রেহনুমা জানান, তাঁরা ধানমণ্ডি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল দেখে গেছে। তিনি থানায় গিয়ে অপহরণের মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি জানান, চলমান ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে শহিদুল সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন।
রাতে ধানমণ্ডি থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মহিদুল ইসলাম বলেন, শহিদুল আলমের স্বজনেরা থানায় আছেন। তাঁরা অভিযোগ লিখছেন।
এদিকে গতকাল রাতে ইউটিউবার সালমান মুক্তাদীরকে তেজগাঁওয়ের একটি টিভি চ্যানেলের কার্যালয় থেকে একদল লোক ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। কিছুক্ষণ পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সালমানের মা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ওই টিভি চ্যানেলের কার্যালয়ে গিয়ে গাড়ি পার্কিংয়ের সময় সাদাপোশাকের কিছু লোক সালমানকে নিয়ে যায়। ঘণ্টা খানেক পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখা থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।