অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত দুইদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরদের সড়ক অবরোধ অব্যাহত আছে। সোমবারের মতো আজ রোববার ও তারা বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ, গাড়ি ভাঙচুর করেছে। দুই দিন ধরে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস, ট্রাক কিংবা মাইক্রোবাস চাপায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ মারা যাচ্ছে। কোনো বড় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ বা তাদের ছেলে মেয়ে মারা গেলে এনিয়ে সামান্য একটু উচ্চবাচ্য হয়। হয়তো চালকের শাস্তির দাবিতে সহকর্মীরা একটি মানববন্ধন করে। সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের দাবিতে হাইকোর্টে একটি রিট। আর সরকারের পক্ষ থেকে শাস্তির আশ্বাস দেয়া হয়।
কিন্তু, গত রোববার দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার পর নৌমন্ত্রীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দুইদিন ধরে রাজধানীতে ব্যাপক বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটছে। কিছু লোক এটাকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হিসেবে দেখছেন। আন্দোলন বাড়তে থাকায় অনেককেই খুশী খুশী দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন আসলে সরকারের পরিকল্পনার আলোকেই হচ্ছে। আর এই আন্দোলনটিকে টিকিয়ে রাখার মূল টার্গেট হলো সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের ভোট ডাকাতির ঘটনা চাপা দেয়া।
কারণ, গতকাল সোমবার ৩ সিটিতে ব্যাপক ভোট ডাকাতির মধ্যদিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে এমন কোনো অপকর্ম বাদ নেই যা আওয়ামী লীগ করেনি। তারপর সবচেয়ে নাটকীয় ঘটনার জন্ম দিলো সিলেটে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু দেখাতে দলীয় প্রার্থী কামরানকে বলি দিয়ে মেয়রের পদটি দিলো বিএনপির আরিফুলকে। ৩ সিটি নির্বাচনে সরকারের এসব অপকর্ম নিয়ে যখন মানুষ ক্ষুব্ধ, দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠছে। তখন রাজধানীতে শুরু হয়ে গেল ছাত্রবিক্ষোভ। নির্বাচন থেকে জনগণের চোখ চলে আসলো রাজধানীর ছাত্রবিক্ষোভে।
মিডিয়াগুলোও নির্বাচনের খবর বাদ দিয়ে প্রচার করছে ছাত্রবিক্ষোভের খবর। সোমবার সারাদিন মিডিয়াগুলো এনিয়েই ব্যস্ত ছিল। মনে করা হচ্ছে, ছাত্রদের এই আন্দোলন আরও দুইদিন চলতে পারে। অর্থাৎ-সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী থেকে মানুষের দৃষ্টি ফেরাতে যে কয়দিন প্রয়োজন হবে সরকার সেই কয়দিনই শিক্ষার্থীদেরকে দিয়ে এই আন্দোলন টিকিয়ে রাখবে। সরকার চাইলে বিষয়টি সেদিনই শেষ করতে পারতো।
কয়লার নীচে যেমন ভল্টের সোনা গায়েবের ঘটনা চাপা পড়েছে, ঠিক তেমনি ছাত্রবিক্ষোভের নীচে চাপা পড়তে যাচ্ছে ৩ সিটির নির্বাচনের ভোট গায়েবের ঘটনা।