অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
রাস্তার পাশ থেকে এক তরুণীকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে ধর্ষণচেষ্টাকালে জনতার হাতে ধরা পড়ে ধর্ষকের গণধোলাই খাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় ধর্ষণচেষ্টাকারী ব্যক্তিকে জনতা আপত্তিকর অর্ধউলঙ্গ অবস্থায় ধরে গণধোলাই দিচ্ছে। এসময় ঐ ব্যক্তির সাথে তার গাড়ির ড্রাইভারকেও আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায় এবং তাকেও জনতা গণধোলাই দেয়।
অবশেষে গণধোলাইয়ের শিকার সেই ধর্ষকের পরিচয় মিলেছে। ধর্ষকের নাম রণি হক। তিনি ধানমণ্ডি থানা ১৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুবলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে তার সরব উপস্থিতি এবং ঢাকা ১০ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে তার কয়েকটি ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে যুবলীগ নেতার এমন কাণ্ডে ফেসবুক জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। পবিত্র রমজান মাসে প্রকাশ্য রাস্তা থেকে তরুণীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালানোকে সবাই জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে তুলে ধরে অবিলম্বে ধর্ষক রণির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ধারণ করেছেন রাফি আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। তিনি ভিডিওটি শেয়ার করে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন-
“আজ অফিস থেকে ফেরার পথে মোহাম্মদপুর, কলেজ গেট সিগনালে ঠিক আমার সামনের গাড়িটাতে লক্ষ্য করে দেখি ভেতরে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে ধস্তা-ধস্তি করছে এবং গাড়ির ড্রাইভার এর গাড়ি চালানোর ভঙ্গিমা দেখে মনে হচ্ছিলো যে সে গাড়িটা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে দুর্ভাগ্য তাদের, রাস্তায় তীব্র জ্যাম থাকায় গাড়িটি বেশি দূর যেতে পারেনি। এমতাবস্তায় আমি আমার গাড়ি থেকে নেমে সামনে যেতে যেতে দেখি আরো কিছু লোক গাড়িটির দিকে লক্ষ্য করে এগুচ্ছে। তখনও ভাবতে পারিনি এতটা নিচ ও নিকৃষ্ট ঘটনার চাক্ষুষ প্রমান হতে যাচ্ছি।
আমি গাড়িটির কাছে যেতেই দেখি ছেলেটি মেয়েটিকে ধর্ষণ করছে। গাড়ির দরজা খুলে প্রথমে আমরা মেয়েটিকে বাইরে বের করে নিয়ে আসি পরে অপর পাশের দরজা খুলতেই দেখি অতিপরিচিত সেই ছেলেটি অর্থাৎ বড়লোক বাবার বখে যাওয়া নষ্ট সন্তান। ছেলেটিকে বাইরে বের করতে গিয়ে সহ্য করতে হয়েছে বাজে মদের গন্ধ। আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না, অতঃপর বসিয়ে দিলাম ওই জানোয়ারের কানের নিচে আমার বাম হাতের পাঁচ আংগুলের চিহ্ন। এরপর ক্ষুব্ধ জনতা চিলের মতো করে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের বাকি দায়িত্ব পালন করলো।
পরে মেয়েটির কাছ থেকে জানতে পারলাম, ওই নর-পিচাশটা মেয়েটিকে রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে এসেছে।”
https://www.youtube.com/watch?v=TvQhWYxbHRU
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী রণি হককে আটক করেছে পুলিশ। শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিজি বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আটক ব্যক্তির নাম রনি হক। ঘটনার সময় সে মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে স্বীকার করেছে। তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনও নির্যাতনের শিকার মেয়েটির কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত রনির প্রাইভেট কারটি জব্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ধর্ষক রণি হক ধণাঢ্য পরিবারের ছেলে। ঘরে তার বিয়ে করা স্ত্রী রয়েছে। এমনকি তার ছোট দুটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। বেসরকারি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের এই সাবেক ছাত্র পেশায় ব্যবসায়ী।