অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ভারত সফররত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে চরমভাবে অপমান করেছে আসামের উগ্রবাদী হিন্দু সংগঠন হিন্দু যুব পরিষদ। আসামের গুয়াহাটির যে পাঁচ তারকা হোটেলে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অবস্থান করছেন সেই হোটেলের সামনে হিন্দুরা তার কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছে। এমনকি ওই সময় তারা রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে ভারত ত্যাগের জন্যও স্লোগান দিয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাষায় ভারত হলো বাংলাদেশের চিরস্থায়ী বন্ধু। কারণ, তারা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। তাদের অবদান কখনো ভুলা যাবে না। যুগ যুগ ধরে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করবে।
আওয়ামী লীগ ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র মনে করলেও স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ কোনো আচরণ করেনি। ৪৫ বছর ধরে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদেরকে পাখির মতো গুলি করে মারছে। ফারাক্কায় বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে। তিস্তার ন্যায্য পানি বাংলাদেশকে দিচ্ছে না ভারত। দখলে নেয়া বেরুবাড়ি ও তালপট্টি ভূখন্ড ফিরিয়ে দিচ্ছে না। বিগত ৪৫ বছরে ভারত বাংলাদেশের ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার করেনি।
আওয়ামী লীগ ভারতকে বাংলাদেশের বন্ধু মনে করলেও ভারত কিন্তু ওইভাবে বাংলাদেশকে বন্ধু মনে করে না। যাকে বলা হয় একতরফা বন্ধু।
ভারতের রাষ্ট্র প্রধান থেকে শুরু করে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বাংলাদেশে আসলে তার কদরে কোনো প্রকার ত্রুটি হয় না। সম্প্রতি ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব বাবু বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। তাকে নজিরবিহীন সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। আদর-যত্নের কোনো ত্রুটি ছিল না। এমনকি তার খাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের হাতে রান্না করেছেন। কিন্তু ভারত করেছে উল্টোটা।
আন্তর্জাতিক সোলার জোটের সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার ভারত গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। তিনি আসামের গুয়াহাটির পাঁচ তারকা হোটেল তাজ ভিভান্তায় উঠেছেন।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম প্রতিদিন টাইমে প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে আসামের উগ্রবাদী হিন্দুদের সংগঠন হিন্দু যুব পরিষদ হোটেলের সামনে বিক্ষোভ ও রাষ্ট্রপতির কুশপুতুল পোড়ায়। বিক্ষোভকারীরা ‘আব্দুল হামিদ গো ব্যাক’ ও ‘বাংলাদেশ হুঁশিয়ার’ শ্লোগান দেয়।
বিক্ষোভকারীরা বলছে, বাংলাদেশের মাটিতে ভারতবিরোধী শক্তি চীন ও পাকিস্তানকে প্রশ্রয় দিয়েছে। আমরা সেটি বন্ধের আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে রংপুর ও সিলেট জেলা এবং ভারত-বাংলাদেশ স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী ১০ হাজার ৬শ একর জমি ফেরতের দাবি জানাই।
বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরই এনিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
বিশিষ্টজনেরাসহ সচেতন মানুষ বলছেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে তার ছবিতে আগুন দিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে অপমান করেছে। উগ্রবাদী হিন্দুরা এ আগুন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের ছবিতে দেয়নি। এ আগুন তারা বাংলাদেশের পতাকায় দিয়েছে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের গায়ে তারা আগুন দিয়েছে।
কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার শক্ত প্রতিবাদ জানানো উচিত।
https://www.youtube.com/watch?v=iQ6sNZrmRzY