শনিবার, অক্টোবর ১১, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

সর্বাগ্রে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা চাই

ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
in slide, Top Post, সম্পাদকের কলাম
Share on FacebookShare on Twitter

ছোটবেলায় মানুষখেকো ডাইনীর গল্প কে শোনেনি? ডাইনী থাকতো শহরের বাইরে পাহাড়ের ওপাশে। সে মাঝে মধ্যেই খপ করে একজন দুজন মানুষ ধরে নিয়ে যেত। এরপর আর সেই মানুষগুলোর কোন খবর পাওয়া যেত না। রূপকথার সেই ডাইনী ভর করেছে এখন বাংলাদেশে। হুট করে হারিয়ে মানুষের তালিকা দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে অথচ সরকারের কোন কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। প্রায়ই হারিয়ে যাচ্ছে মানুষ। হারানো মানুষের তালিকায় আগে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের দেখা গেলেও এখন এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে সব শ্রেণি পেশার মানুষ। বেশিরভাগ গুমের ঘটনায় সুনির্দিষ্টভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেলেও এই ব্যপারে সরকারবেশ উদাসীনই বলা চলে। প্রধানমন্ত্রী বেশ দায়সারাভাবেই সংসদে বলেছেন,‘গুমনতুনকিছুনয়।গুমঅনেকভাবেহচ্ছে।কেউফেরতওআসছে।

বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া গুমের ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা বিশেষ মিল লক্ষ্য করা যায়। প্রায় সবক্ষেত্রেই দেখা গেছে কেউ বাসা থেকে বা অফিস থেকে বেরিয়েছিলেন। কেউ বাসাতেই স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মায়ের সঙ্গে ছিলেন। কখনো সাদাপোশাকে, কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁদের তুলে নিয়ে গেছে। ব্যাস তারা হারিয়ে গেল। কিছু কিছু সৌভাগ্যবান অবশ্য ফিরেছেন। যারা ফিরেছেন তারাও সবাই একই আচরণ করছেন। প্রত্যেকেই তাদের মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কালে হারিয়ে যাওয়ারাজনৈতিক কর্মী, সন্দেহভাজন জঙ্গি বা অপরাধী, সাংবাদিক, গবেষক, প্রকাশক, ব্যবসায়ী এবং ছাত্রদের প্রায় প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এই অদ্ভুত মিল দেখা যাচ্ছে। কথিত বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের মতই একই ধরনের ঘটনা সবার ক্ষেত্রে দেখা যায়। যাঁরা গুম হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই আলামতগুলো একই রকম, ঘটনাও একই রকম।

যারা ফিরেছেন, যাদের লাশ পাওয়া গিয়েছে এবং যাদের এখনো পর্যন্ত কোন হদিস নেই প্রত্যেকের অপহৃত হওয়ার বর্ণনা প্রায় একই রকম। তাদের তুলে নেওয়ার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট।যারা তুলে নিয়ে গেছেন, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েই তা করেছেন। গতকাল নিখোঁজ হয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এমমারুফজামান।  অতি সম্প্রতি সাংবাদিক উৎপল দাস ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মোবাশ্বার হাসানের হারিয়ে যাওয়া বেশ রহস্যজনক। কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে তাঁরা হারিয়ে গেলেন তার বর্ণনাই পাওয়া যাচ্ছে না। এই নিয়ে গত আগষ্ট থেকে ১৩ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি হারিয়ে গেলেন। এর মধ্যে মাত্র ৪ জনের হদিস পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে ব্যাংক কর্মকর্তা শামীম আহমেদ ও সর্বশেষ অনিরুদ্ধ রায় ফিরে এসেছেন। বিজেপির দুই নেতাকে পরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গুম হওয়াএসব ব্যক্তির নাম অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস কমিশনের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। এই তালিকায় সাবেক সাংসদ, রাজনীতিক নেতা ও কর্মীদের পাশাপাশি সম্প্রতি যুক্ত হয়েছেন রাষ্ট্রদূত, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পুস্তক প্রকাশক, ব্যবসায়ী ও ব্যাংক কর্মকর্তা।

হংকংভিত্তিক এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন (এএইচআরসি) ও দেশীয় মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের হিসাব অনুযায়ী, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আট বছর নয় মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৩৯৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে তাঁদের মধ্য থেকে ৫২ জনের লাশ পাওয়া গেছে। ফিরে এসেছেন ১৯৫ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১৪৮ জন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের সংখ্যা আরও বেশি। এর মধ্যে অনেক ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জড়িত বলে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা বিভিন্ন সময় অভিযোগ তুলেছেন। এর মধ্যে টাকার জন্যও মানুষ গুম ও খুনের ঘটনা আছে। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা এর বড় উদাহরণ।

সরকারের পক্ষ থেকে মানুষ গুম হওয়ার অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেছেন, গুম বলে কিছু নেই। অনেকে মামলার আসামি, গ্রেপ্তার এড়াতে নিজ থেকে আত্মগোপন করেন। পরিবার তা গুম বলে প্রচার করে। অথচ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওয়েবসাইটে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৫২ জন গুম হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।

এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩৯৫ জন গুমের ঘটনার মধ্যে ১৪৮টিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে র‌্যাবের বিরুদ্ধে। পুলিশের ৪৬ জনকে, র‌্যাব ও ডিবি যৌথভাবে ১১ জনকে, ডিবি ১০৬ জনকে, শিল্প পুলিশ ও আনসার ১ জন করে এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ৮২ জনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে।

একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের সূচক পরিমাপের অনেকগুলো প্যারামিটার থাকে। সবগুলো প্যারামিটারে একটি রাষ্ট্র তার উন্নতি দেখালেও যদি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা না থাকে তবে সব উন্নয়নই বৃথা। উন্নয়নতো মানুষের জন্য। সরকারকে যে কোন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করলেই একটি ছকবাঁধা বক্তব্য পাওয়া যায়। বিদ্যুতে উন্নয়ন হচ্ছে, অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে, পদ্মাসেতু হচ্ছে ইত্যাদি। কিন্তু যে দেশে কথা বলার স্বাধীনতা নাই, গণতন্ত্র নাই, জীবনের নিরাপত্তা নাই সে দেশে এসব উন্নয়ন কেবল শাসক শ্রেণীর জন্য। জনগণ এখানে কেবলই শোষিত।

বাংলাদেশে মানুষের জীবন ক্রমেই দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সরকার যদিও উন্নয়নের গল্প বলে জনগণকে ভোলাতে চাইছে তবে সেটা ধোপে টিকছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে কমার কোন লক্ষণ নেই। যেখানে আগের সরকারগুলো জ্বালানীতে ভুর্তুকি দিত সেখানে বর্তমান সরকার প্রতি লিটারে ২০-৩৫ টাকার মত লাভ করছে। বিদ্যুৎ, গ্যাসের দাম দিন দিন বাড়াচ্ছে। সব ধরনের কর বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন নতুন করারোপের খাত আবিষ্কার করছেন অর্থমন্ত্রী। নাগরিক জীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠছে।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামছাড়া দামে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। পদে পদে ঘাঁটে ঘাঁটে চাঁদাবাজি করছে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা। গোশত বিক্রেতারা দাবী করেছেন শুধু চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারলেই তারা অর্ধেক দামে গোশত বিক্রী করতে পারবেন। শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা, সন্ত্রাস কেবলই বাড়ছে। ধর্ষনতো এখন প্রায় নিয়মিত ঘটনা। সারা দেশের আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে।

গণতন্ত্র, জীবনের নিরাপত্তা এগুলো কখনোই উন্নয়নের প্রতিপক্ষ নয়। “কম গণতন্ত্র, অধিক উন্নয়ন” এমন ধারণা ইতিহাসখ্যাত স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের আবিষ্কার। উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। জনগণ উন্নয়নের বিনিময়ে নিজের নিরাপত্তা বিলিয়ে দিতে পারে না। যদি জীবন যাত্রার উন্নয়ন না হয়, যদি জীবনের নিরাপত্তাই না থাকে তবে এই উন্নয়ন দেশের কোন কাজেই আসবে না। তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে আগে জনগণকে বাঁচতে দিন। দেশের জনগণ স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চায়।

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • ‘হেল্প সেল’ এর তৎপরতা বন্ধ করতেই ছাত্রদল নেতা নুরুকে হত্যা?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD