জুনায়েদ আব্বাসী
চিকিৎসা শেষ করে দীর্ঘ তিন মাস পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরে এসেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মামলার ভয়ে খালেদা জিয়া দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন, তিনি আর ফিরে আসবেননা মর্মে তিন মাস যাবত সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও সরকারদলীয় নেতারা যে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন, খালেদা জিয়া ফিরে এসে তাদের এই অপপ্রচারকে মিথ্যা প্রমাণ করেছেন।
গত ১৫ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান খালেদা জিয়া। এর একদিন পরই মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রসিকতা করে বলেছিলেন, দেখেন খালেদা জিয়া আর ফিরে আসে কি না। আর নাও আসতে পারে।
১৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নেয়া একজন মন্ত্রী অনির্ধারিত আলোচনায় বলেন, উনি (খালেদা) গেছেন, কিন্তু আসবেন কি না, কেউ জানে না। মন্ত্রীর এমন উক্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেখেন ফিরে আসেন কি না?’
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পরই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক সভায় বলেন যে, মামলার ভয়ে খালেদা জিয়া পালিয়ে গেছেন। তিনি আর দেশে ফিরবেন না। এরপর থেকে ওবায়দুল কাদের খালেদা জিয়াকে কটাক্ষ করে বিগত তিন মাস যাবত নিয়মিত বক্তব্য দিয়ে আসছেন। লন্ডন বসে খালেদা জিয়া শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন এমন অভিযোগও তুলেছেন ওবায়দুল কাদের।
ঠিক একইভাবে তিন মাস যাবত খালেদা জিয়াকে নিয়ে নিয়মিত ধারাভাষ্য দিয়ে আসছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতারা। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তারা বলেছেন, চিকিৎসার জন্য নয়, খালেদা জিয়া লন্ডন গিয়েছেন ষড়যন্ত্র করতে। তিনি তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় বসে বসে সরকার, শেখ হাসিনা ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।
গত ৭ নভেম্বর এক আলোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে খালেদা জিয়া দেশে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। বারবার আসতে চেয়েও তিনি (খালেদা) দেশে আসছেন না। তিনি আদৌও দেশে ফিরবেন কিনা তাও নিশ্চিত নয়।’
তবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও সরকারদলীয় নেতাদের সকল বক্তব্যকে মিথ্যা প্রমাণ করে বুধবার দেশে ফিরেছেন বেগম খালেদা জিয়া।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ বলাবলি করছেন, খালেদা জিয়া দেশে ফিরে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের মুখে চুন-কালি দিয়েছেন। লজ্জা থাকলে খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার এমপি মন্ত্রীরা আর কোনো দিন মিথ্যাচার করবে না।
Discussion about this post