অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে সুদভিত্তিক ক্ষুদ্র ঋণ যে দুইজন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন এর মধ্যে একজন হলেন ফজলে হাসান আবেদ। তার প্রতিষ্ঠিত এনজিও ব্র্যাকের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ উঠে। দারিদ্র বিমোচনের কথা বলে ফজলে হাসান আবেদ ব্র্যাকের মাধ্যমে সারাদেশে ক্ষুদ্র ঋণের প্রচলন করলেও ব্রাকের ঋণ গ্রহণ হাজার হাজার মানুষ নিঃস্বও হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্র্যাকের ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে অনেকে ভিটেমাটি, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, স্বর্ণালঙ্কারসহ সহায় সম্পত্তি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। এমনকি ২০১৩ সালে জয়পুরহাটের কালাইগ্রামে মোহাম্মদ মোখতার ও মোকাররম নামে দুই ব্যক্তি ব্র্যাকের ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে নিজের কিডনি পর্যন্ত বিক্রি করেছেন।
এরপর সামান্য ঋণ দিয়ে অতিরিক্ত সুদ আদায়তো করছেই। এভাবেই সারাদেশের হতদরিদ্র মানুষের রক্তচুষে সারাবিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছেন ফজলে হাসান আবেদ।
এছাড়া কর ফাঁকি, আড়ং দুধে পঁচা গুড়া দুধ মিশানো, পুরনো বীজ দিয়ে প্যাকেট করে নতুন বীজ বলে কৃষকের মাঝে বিতরণ ও বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে মুরগি এনে ব্র্যাক মুরগি বলে চালিয়ে দেয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে ফজলে হাসান আবেদের প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের বিরুদ্ধে।
শেষোক্ত অভিযোগগুলো করেছেন সম্প্রতি ব্র্যাক থেকে অবসর নেয়া শরীফ তসলিম রেজা নামে এক কর্মকর্তা। তিনি তার ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে এসব বিষয় তুলে ধরেছেন। তিনি তার স্ট্যাটাসে ব্র্যাকের নানান অনিয়ম-দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারি তুলে ধরেছেন। যদিও এখন আর তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো রিটায়ারমেন্ট লেটারটি তিনি পোষ্টের সাথে জুড়ে দিয়েছিলেন। লেটারটি এখানে যুক্ত করে দেয়া হলো-
তিনি তার স্ট্যাটাসে পয়েন্ট আকারে ব্র্যাকের কিছু দুর্ণীতির চিত্র তুলে ধরেছেন। পাঠকদের জন্য সেগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো-
“ব্র্যাকের বছরের বাজেট ৪৫০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত থাকে ১৩০০ কোটি টাকা, সুদের ব্যবসায় লাভ গতবছর ২০০০ কোটি টাকা, এর থেকে কর্মীদের বেতন দেয়া লাগে মাত্র ১০-১২ কোটি টাকা, কিসের অভাব ব্র্যাকের? সকলকে অনুরোধ আমরা এই বয়সে চাকরির জন্য কেন ঘুরবো? পরিবারে, সমাজে, বন্ধুদের কাছে, আত্মীয়স্বজনের কাছে কেন আজ এত ছোট হলাম, কি দোষ ছিল আমার ও আমাদের? ১টা দোষ ব্র্যাক যদি দেখাতে পারে তবে মাথা হেট করে মাফ চাব। তাই সবাইকে অনুরোধ
১. বিনা কারনে ত্যাগী, সৎ কর্মীদের ছাটাই করে আবেদ ভাইয়ের ছেলেমেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের আত্মীয়স্বজন নিয়োগে প্রতিবাদ করুন, কেউর কোন ক্ষমতা থাকলে বন্ধের ব্যবস্থা নিবেন।
২. টেক্স ভ্যাট ফাকি দেয়া গরীব লোকের ৫০০ টাকার জিনিষ ৫০০০ টাকায় বিক্রিত আড়ং এর শপিং আজ হতে বন্ধ করুন।
৩. আমি নিজে দেখেছি, ঘন করার জন্য আড়ং দুধে বস্তাভরা দুই নাম্বার গুড়া দুধ মিশায়। এজন্য ব্র্যাকের কোন কর্মী আড়ং দুধ বিনা পয়সায়ও খায় না। আমার ইচ্ছা ছিল গাজীপুরের আমার দোস্ত ডিসি এসএ আলমকে দিয়ে হাতে নাতে ধরাবো। ও আবার বদলি হয়ে গেল। এটা ধরুন।
৪. পুরাতন বীজ নতুন প্যাকেটে ভরে বেচে। এটা এবার করলে মেজিস্ট্রেট দিয়ে বেধে ধরা হবে।
৫. হাট বাজার থেকে দালাল দিয়ে ব্রয়লার মুরগি কিনে ব্র্যাক মুরগি নামে বেচে। এটা খাবেন না।
আমি বিভিন্ন এম্বাসিতে লেখবো। এখন এই ৪ জনের কাজ হলো মাসে ২০ দিন খালি বিদেশে যাওয়া এবং ব্র্যাকের টাকা পাচার করা, যাতে এদের ভিসা না দেয়।”
Discussion about this post