অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ভয়, আতঙ্ক, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর শঙ্কা ততই ঝেকে বসেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ঘাড়ে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে বিনাভোটে নির্বাচিত হওয়া এমপি-মন্ত্রীদের নিয়ে খুবই উৎকণ্ঠায় আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে কয়েকটি দলীয় সভায় প্রধানমন্ত্রী তার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা প্রকাশও করেছেন। এমনকি মন্ত্রীপরিষদ বৈঠকেও এনিয়ে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
সম্প্রতি সংসদীয় দলের সভায় বিনাভোটের এমপিদের সতর্ক করে বলেছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। আগামী নির্বাচনে আর কারো দায়িত্ব নেবো না। এরপর গতকাল সোমবার মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে বিনাভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদে আসা এমপি-মন্ত্রীদের ওপর প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অনেক নতুন এমপি-মন্ত্রী আছেন ভোট যে কি জিনিস তা তারা জানেন না। তারা বুঝেই উঠতে পারেননি যে কিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। আগামী নির্বাচন কিন্তু এমন হবে না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। জনগণের ভোটে পাস করে আসতে হবে। অপরদিকে, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও প্রতিদিনই দলীয় এমপিসহ নেতাকর্মীদেরকে সতর্ক করছেন।
জানা গেছে, সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জানতে পেরেছেন যে, বর্তমান সংসদের অধিকাংশ এমপি-মন্ত্রীই নিজ নিজ এলাকায় গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারা দুর্নীতি-লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, সাধারণ মানুষের জমি দখল, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি, এমনকি অনেক নেতাকর্মী চুরি-ডাকাতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তথ্য আছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের যেকোনো প্রার্থীর কাছেই তারা পরাজিত হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন। এসব কারণে প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে খুবই উদ্বিগ্ন বলে জানা গেছে। এজন্য তিনি প্রতিদিন দলীয় এমপিদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এসব বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। আগামী নির্বাচনে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলেও কেউ কেউ মনে করছেন।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিগত সাড়ে আট বছর সরকার বিএনপি-জামায়াতসহ সাধারণ মানুষের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে ক্ষমতার শেষ মুহূর্তে এসে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছে তারা জনকল্যাণমূলক কোনো কাজ করেনি। বিভিন্ন প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে সবই লুটপাট করেছে। রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ আত্মসাত করে এমপি-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা সম্পদের পাহাড় গড়েছে। বিগত আট বছরে জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন না হলেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ভাগ্য খুলেছে। আগামী নির্বাচনে নৌকার ভোট চাইতে গেলে অবশ্যই জনগণ এসবের জবাব চাইবে।
Discussion about this post