হিদায়াত বড় অমূল্য সম্পদ। আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের এই সম্পদ দান করেন। সারাজীবন নাস্তিকতা লালন করে জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে হিদায়াতের দেখা পাওয়া বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। এমন ভাগ্যবান আমাদের বিশ্বাসের কবি ‘কবি আল মাহমুদ’।
আল মাহমুদ (১৯৩৬-২০১৯) আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কবি। অসংখ্য কবির ভিড়ে তিনি স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সনাক্তযোগ্য একজন কবি হিসাবে আধুনিক বাংলা কবিতার সমৃদ্ধ ভুবনে নিজের আসন চিহ্নিত করে স্বকীয়তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তাঁর কবিতায় আধুনিকতার সাথে সনাতন ঐতিহ্য ও গ্রাম-বাংলার প্রকৃতি ও পরিবেশের এক স্বচ্ছন্দ সংমিশ্রণ ঘটেছে। যে কারণে তাঁর কবিতার আবেদন হয়েছে অনেকটা সর্বজনীন ও যুগান্তকারী।
বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়াংশে সক্রিয় থেকে যিনি আধুনিক বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে, চেতনায় ও বাক্ভঙ্গীতে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি কবি আল মাহমুদ। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবিও তিনি। তাঁর প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। একাধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক তিনি।
প্রত্যেক মৌলিক কবিরই একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে। এ বৈশিষ্ট্য সবসময় এক রকম হয় না। কিন্তু যার যে রকম বৈশিষ্ট্যই থাক না কেন, প্রত্যেকের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগত স্বাতন্ত্র্যের কারণে আমরা সহজে তাঁকে চিহ্নিত করতে পারি। গোলাপ, বেলী, বকুল- প্রত্যেকেই তার নিজস্ব রং, গঠন ও গন্ধেই সুপরিচিত। প্রত্যেক কবিও তেমনি তাঁর নিজস্ব ভাব, ভাষা, শিল্পনৈপুণ্য ও কাব্যিক আবেদনের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র মহিমায় সমুজ্জল। আল মাহমুদ তাঁর নিজস্ব ভাষা-রীতি, শিল্প-নৈপুণ্য, উপমা-রূপকল্পের ব্যবহার ও বিষয়-ভাবনার দিক থেকে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়ে উঠেছেন।
বাংলা কাব্যে আল মাহমুদের আবির্ভাব ঊনিশ শতকের ষাটের দশকে। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মৌড়াইলের মোল্লাবাড়িতে ১৯৩৬ সনের ১১ জুলাই তাঁর জন্ম। পিতার নাম মীর আবদুর রব, মাতা রওশন আরা মীর। পিতামহ মীর আবদুল ওয়াহাব আরবি, ফারসি, সংস্কৃত ভাষা জানতেন। তিনি গ্রামের মসজিদের ইমামের নিকট ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন। পাশাপাশি তিনি ব্রাক্ষণবাড়িয়ার এম. ই. স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়নের পর জর্জ হিক্সথ হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। অতঃপর ব্রাক্ষণবাড়িয়া হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার আগেই তিনি বামপন্থী আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন ও গৃহত্যাগ করেন।
বিভিন্ন স্থানে ঘুরেফিরে অবশেষে তার ঠাঁই হয় ঢাকায়। ১৯৫৪ সাল থেকে কালক্রমে এটাই হয়ে ওঠে তাঁর স্থায়ী আস্তানা। ঢাকায় আসার আগেই স্কুল-জীবনে তিনি কবিতা লেখার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কবিতা লেখার কলা-কৌশল জানার জন্য তিনি দীর্ঘপথ অতিক্রম করে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার অন্য আরেকজন খ্যাতনামা এবং তাঁর অগ্রজ কবি মোহাম্মদ মাহ্ফুজ উলাহর সান্নিধ্যে যান এবং বাংলা কবিতার ছন্দ সম্পর্কে তাঁর নিকট তালিম গ্রহণ করেন। আল মাহমুদ তাঁর আত্মজীবনীতে এ প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন। ঢাকায় এসে তিনি ওমর আলী, শহীদ কাদরী, শামসুর রাহমান, ফজল শাহাবুদ্দিন, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, জিয়া হায়দার, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান প্রমুখ কবিদের সাথে পরিচিত হন এবং তাঁদের সান্নিধ্যে কবিতা চর্চায় মেতে উঠেন।
ঢাকায় এসে আল মাহমুদ ১৯৫৪ সনে প্রথমে ‘দৈনিক মিলাত’ পত্রিকায় প্রুফ রীডার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৫ সনে মিল্লাত ছেড়ে তিনি ‘কাফেলা’য় যোগ দেন সহ-সম্পাদক হিসাবে। সেখান থেকে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’এ প্রুফ রীডার হিসাবে যোগ দেন ১৯৬৩ সনে। পরে সেখানে তিনি মফস্বল সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সনে সাময়িকভাবে ‘ইত্তেফাক’ বন্ধ হলে তিনি চট্টগ্রামে ‘বই ঘর’-এর প্রকাশনা কর্মকর্তা হিসাবে যোগ দেন। এ সময়ই অর্থাৎ ১৯৬৮ সনের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁর বিখ্যাত ‘সোনালী কাবিনে’র সনেটগুলো রচিত হয়। অতঃপর দৈনিক ইত্তেফাক পুনরায় চালু হলে তিনি তাতে সহ-সম্পাদক হিসাবে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতে গিয়ে তৎকালীন মুজিবনগর সরকারের ৮ নং থিয়েটার রোডে প্রতিরক্ষা বিভাগের স্টাফ অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সনে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি গ্রুপ ঢাকাস্থ র্যাঙ্কিং স্ট্রীট অফিসে ‘দৈনিক গণকন্ঠ’ প্রকাশ করলে আল মাহমুদ তার সম্পাদক নিযুক্ত হন। গণকন্ঠ পত্রিকার লোকেরা দৈনিক সংগ্রাম অফিস দখল করে পত্রিকা চালু করে। যাই হোক সরকার-বিরোধী র্যাডিক্যাল পত্রিকা হিসাবে গণকন্ঠ মুজিব সরকারের রোষানলে পতিত হয় এবং আল মাহমুদ কারারুদ্ধ হন। এর তিন দিন পর গণকন্ঠও বন্ধ হয়ে যায়। দশ মাস জেলে থাকার পর তৎকালীন সরকার প্রধান শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭৫ সনে নিজে উদ্যোগী হয়ে তাঁকে শিল্পকলা একাডেমীতে সহকারী পরিচালক নিযুক্ত করেন।
১৮ বছর চাকরি করার পর তিনি ১৯৯৩ সনের ১০ জুলাই শিল্পকলা একাডেমীর গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। ইতোমধ্যে তিনি তার গন্তব্য সম্পর্কে অবহিত হন। নাস্তিক থেকে হয়ে ওঠেন বিশ্বাসের কবি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি নিসর্গরাজি অর্থাৎ প্রকৃতির মধ্যে এমন একটা সংগুপ্ত প্রেমের মঙ্গলময় ষড়যন্ত্র দেখতে পাই যা আমাকে জগত-রহস্যের কার্যকারণের কথা ভাবায়। এভাবেই আমি ধর্মে এবং ধর্মের সর্বশেষ এবং পূর্ণাঙ্গ বীজমন্ত্র পবিত্র কোরানে এসে উপনীত হয়েছি।” (আল মাহমুদঃ কবিতার জন্য বহুদূর, পৃ. ৩২-৩৩)।
সরকারি চাকুরি থেকে অবসরের পর তিনি ‘দৈনিক সংগ্রামের’ সহকারী সম্পাদক হিসাবে কয়েক বছর কাজ করেন। একদা যে সংগ্রামের সম্পত্তি কবি দখল করেছিলেন সেই সংগ্রামেই কবির ঠাঁই হয়। একটি কবিতায় ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু কথা থাকায় দৈনিক সংগ্রাম থেকে কবির চাকুরি চলে যায়। তবে বিশ্বাসীদের পত্রিকা দৈনিক সংগ্রাম কবির পাশে ছিলো কবির মৃত্যু পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম থেকে জামায়াত সমর্থিত ‘দৈনিক কর্ণফুলি’ প্রকাশিত হলে সম্পাদক হিসাবে সেখানেও কাজ করেন তিনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন পত্রিকার লেখক ও কলামিস্ট হিসাবে তিনি কাজ করেন। সমকালীন বাংলা কাব্যে তিনি অন্যতম প্রধান শক্তিমান কবি হিসাবে পরিচিত। তবে কবি হিসাবে সমধিক পরিচিত হলেও গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ সাহিত্যেও তাঁর উলেখযোগ্য অবদান রয়েছে। আধুনিক বাংলা সাহিত্যে আল মাহমুদ এক অপরিহার্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
কবি খুবই স্পষ্ট ভাষায় তাঁর বিশ্বাস ও প্রত্যয়ের কথা উচ্চারণ করেন,
“…আমি ইসলামকেই আমার ধর্ম, ইহলোকেই আমার ধর্ম, ইহলোক ও পারলৌকিক শান্তি বলে গ্রহণ করেছি। আমি মনে করি একটি পারমাণবিক বিশ্ববিনাশ যদি ঘটেই যায়, আর দৈবক্রমে মানবজাতির যদি কিছু অবশেষও চিহ্নমাত্র অবশিষ্ট থাকে তবে ইসলামই হবে তাদের একমাত্র আচরণীয় ধর্ম। এই ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্যই আমার কবিস্বভাবকে আমি উৎসর্গ করেছি। … আল্লাহ প্রদত্ত কোন নিয়মনীতিই কেবল মানবজাতিকে শান্তি ও সাম্যের মধ্যে পৃথিবীতে বসবাসের সুযোগ দিতে পারে। আমার ধারণা পবিত্র কোরানেই সেই নীতিমালা সুরক্ষিত হয়েছে। এই হলো আমার বিশ্বাস। আমি এ ধারণারই একজন অতি নগণ্য কবি।” (পূর্বোক্ত, পৃ.৩৩)।
কবি অন্যত্র বলেন, “আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি জীবনের একটি অলৌকিক কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়ম হিসেবে। মার্কসবাদ সম্বন্ধে বীতশ্রদ্ধ হয়ে। (আল মাহমুদ : কবির আত্মবিশ্বাস, পৃ ১১)।
আধুনিক বিভিন্ন মতবাদ, প্রচলিত প্রধান ধর্মসমূহ ইত্যাদি গভীর অভিনিবেশ সহকারে অধ্যয়ন করে ঐশী গ্রন্থ আল কুরআনের সাথে তা মিলিয়ে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্ধি করতে সক্ষম হন কবি। তাই প্রচলিত ধারণা ও অন্ধবিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে নয়, গভীর প্রত্যয়ের সাথে মুক্ত মন ও উদার যুক্তিপূর্ণ মানসিকতা থেকেই তিনি ইসলামকে একমাত্র সত্য ধর্ম হিসাবে গ্রহণ করেছেন। তাই তিনি অবিচল বিশ্বাস ও প্রত্যয়ের সঙ্গে ‘আমাদের মিছিল’ কবিতাটি লিখতে পারেন। বলতে পারেন
“আমাদের হাতে একটি মাত্র গ্রন্থ আল কুরআন,
এই পবিত্র গ্রন্থ কোনদিন, কোন অবস্থায়, কোন তৌহীদবাদীকে থামতে দেয়নি।
আমরা কি করে থামি?”
– আমাদের মিছিল
অন্য কবিতায় তিনি বলেন,
উদিত নক্ষত্র আমি। শূন্যতার বিরুদ্ধগামী, পূর্ণ করে তুলেছি বিস্তার।
আমি আলো, দীপ্ত করে তুলেছি পৃথিবী।
আমি তাল মাত্রা বাদ্যযন্ত্র ছাপিয়ে ওঠা আত্মার ক্বেরাত।
আরম্ভ ও অস্তিমের মাঝখানে স্বপ্ন দেখি সূর্যের সিজদারত নিঃশেষিত
আগুনের বিনীত গোলক।
নবী ইব্রাহিমের মত অস্তগামীদের থেকে আমি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি।
আমিও জেনে গেছি কে তুমি কখনো অস্ত যাও না।
কে তুমি চির বিরাজমান। তোমাকে সালাম। তোমার প্রতি
মাথা ঝুঁকিয়ে দিয়েছি। এই আমার রুকু, এই আমার সেজদা।
(হে আমার আরম্ভ ও শেষ : দোয়েল ও কবিতা)
এখানে কবির বিশ্বাস ও প্রত্যয়দীপ্ত আত্মসমর্পিত চিত্তের গভীর আকুতি নিঃসংশয় প্রার্থনার মত অভিব্যক্ত হয়েছে। কবির এ বিশ্বাস ও প্রত্যয় তাঁর জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে, অন্তরের একান্ত গভীর উপলব্ধি থেকে সঞ্জাত। অতএব, ধরে নেয়া যায় তা নিখাদ ও অকৃত্রিম। কবির বিশ্বাসের সাথে বিষয়, বিষয়ের সাথে ঐতিহ্য-চেতনা ও বিষয়-বৈভবের দিক থেকে তাঁর পূর্বসূরী নজরুল-ফররুখের সাথে ঘনিষ্ঠ অন্বয় থাকলেও কবি-কল্পনা ও প্রকাশভঙ্গীর দিক থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র, ভিনড়ব স্বাদ ও মেজাজের। এ বৈশিষ্ট্যের গুণেই আল মাহমুদকে সহজে চেনা যায়। ঐতিহ্য ধারণ করে ঐতিহ্যের ছড়ে নতুন ঝংকার সৃষ্টি করার মধ্যেই মৌলিকতার প্রকাশ। আল মাহমুদের মধ্যে সে মৌলিকতা সুস্পষ্ট।
কবি আল মাহমুদ শুধুমাত্র কবি হিসেবেই নয়, তিনি একাধারে একজন শক্তিমান গাল্পিক,ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, গবেষক, সাংবাদিক ও কলাম লেখক। সাহিত্যের অনেক শাখাতেই তার অবাধ বিচরণ। ১৯৭৫ সালে তার প্রথম ছোটগল্প গ্রন্থ পানকৌড়ির রক্ত প্রকাশিত হয়। ১৯৯৩ সালে বের হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘কবি ও কোলাহল’। তার সৃষ্টির পরিধি সাহিত্যের বিশাল এলাকা জুড়ে। কিন্তু এত কিছু ছাড়িয়ে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন কবি এবং শুধুই কবি। একজন সাধারণ পাঠক হিসাবে বলতেই পারি, বাংলা কবিতা মানেই আল মাহমুদ, আর আল মাহমুদ মানেই বাংলা কবিতা।
বাংলা কবিতা যাঁদের হাত ধরে আধুনিকতায় পৌঁছেছে, কবি আল মাহমুদ তাঁদের অগ্রগণ্য। আল মাহমুদের কলম বাংলা সাহিত্যকে করেছে আরো উর্বর। সাহিত্যের সকল শাখাতেই তাঁর সমান পদচারণা। তাঁর লেখনীর ব্যতিক্রম স্বাদের জন্য তিনি বারবার আলোচিত হয়েছেন। হয়েছেন অসংখ্যবার পুরস্কৃত। ১৯৬৮ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন সাড়া জাগানো কাব্যগ্রন্থ ‘সোনালি কাবিনের’ জন্য।
কবি আল মাহমুদের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা অনেক। কবিতা, গল্প,উপন্যাস সহ শ’খানেকের মতো গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে তাঁর। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে-
কবিতা : লোক লোকান্তর, কালের কলস, সোনালী কাবিন, মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো, প্রহরান্তরের পাশ ফেরা, আরব্য রজনীর রাজহাঁস, মিথ্যেবাদী রাখাল, আমি দূরগামী, বখতিয়ারের ঘোড়া, দ্বিতীয় ভাঙন, নদীর ভেতর নদী, উড়াল কাব্য, বিরামপুরের যাত্রী, বারুদগন্ধী মানুষের দেশ, তুমি তৃষ্ণা তুমিই পিপাসার জল, অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না, ইত্যাদি।
গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে পানকৌড়ির রক্ত, সৌরভের কাছে পরাজিত, গন্ধবনিক, ময়ূরীর মুখ, নীল নাকফুল, কলংকিনী জ্যোতির্বলয়, গন্ধ বণিক, সৌরভের কাছে পরাজিত, আল মাহমুদের গালগল্প, ইত্যাদি।
উপন্যাস : কাবিলের বোন, উপমহাদেশ, চেহারার চতুরঙ্গ, নিশিন্দা নারী, ইত্যাদি। ল
শিশুতোষ : পাখির কাছে ফুলের কাছে
প্রবন্ধ : কবির আত্মবিশ্বাস, কবির সৃজন বেদন, আল মাহমুদের প্রবন্ধসমগ্র
ভ্রমণ : কবিতার জন্য বহুদূর, কবিতার জন্য সাত সমুদ্র।
আত্মজীবনী- যেভাবে বেড়ে উঠি।
পুরস্কার : বাংলা সাহিত্যে বিশেষ করে বাংলাকাব্যে অনবদ্য বহুমাত্রিকতার সৃজনশীলতার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য কবি আল মাহমুদ দেশের জাতীয় পদকসহ বেশ কয়েকটি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। সেগুলো হলো- বাংলা একাডেমী পুরস্কার, একুশে পদক, জয়বাংলা পুরস্কার, হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার,ফররুখ স্মৃতি পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কার, সুফী মোতাহের হোসেন সাহিত্য স্বর্ণপদক, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, সমান্তরাল (ভারত) কর্তৃক ভানুসিংহ সম্মাননা পদক, লেখিকা সংঘ পুরস্কার, হরফ সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার, নতুন গতি পুরস্কার ইত্যাদি।
২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কবি পাড়ি জমান মহাকালে, যে কালের কোনো অন্ত নেই। মহান প্রভুর দয়া ও সান্নিধ্যে আমাদের বিশ্বাসের কবি সালামতে থাকবেন ইনশাআল্লাহ। কবির জন্য দোয়া, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।
Discussion about this post