অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক:
পবিত্র রমজান মাস মুসলমানদের নিকট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। এটাকে ইবাদতের মাস বলা হয়। এ মাসের অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও সওয়াবের কাজ হল ইফতার। সারাদিন রোজা রেখে মুসলমানরা সন্ধ্যায় ইফতারের মাধ্যমে তাদের রোজা ভাঙ্গে। আর এই ইফতারের মধ্যে সবচেয়ে আনন্দ হচ্ছে এক সাথে মিলে ইফতার করা। আর এক সাথে অনেক লোক মিলে ইফতার করার নিয়মটা এদেশে দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে।
এক সময় এদেশে শুধু ইসলামি দলগুলো ইফতার পার্টি বা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতো, কিন্তু অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। তারপর সালাতুল এশার পর সবাই একসাথে তারাবীর নামাজ আদায় করে। রমজান মাসে শুধু মসজিদে নয়, বিভিন্ন অফিস এবং বাসাবাড়িতেও কিছু লোক মিলে তারাবীর নামাজ আদায় করে।
কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় হল-পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশ। এই দেশে আজ চরম ইসলাম বিদ্বেষী শেখ হাসিনার সরকার মুসলমানদের ইফতার ও তারাবীর নামাজ আদায়ের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মুসলমানরা একসাথে বসে ইফতার করতে পারে না। কয়েকজন একসাথে বসলেই এটাকে গোপন বৈঠক আখ্যা দিয়ে হাসিনার পালিত পুলিশ বাহিনী তাদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কোনো অফিসে কিছু লোক মিলে তারাবীর নামাজ আদায় করলে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বাসায় ইফতার করতে গিয়েছিলেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন। কিন্তু শেখ হাসিনার পেটুয়া বাহিনী ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে ওই বাসায় হানা দিয়ে জামায়াত নেতা সেলিম উদ্দিনসহ ৮ জন রোজাদারকে ধরে নিয়ে যায়। লক্ষণীয় বিষয় হলো-ইফতারকে গোপন বৈঠক আখ্যা দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পুলিশ বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। এই রিমান্ডের মূল উদ্দেশ্য নিরপরাধ জামায়াত নেতৃবৃন্দের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো।
এদিকে, গত সপ্তাহে রাজধানীর শাহজাদপুরে একটি ইসলামিক সেন্টারে তারাবীর নামাজ আদায় করা অবস্থায় দুইজন হাফেজসহ ১৬ জন মুসল্লীকে তুলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করেছে আওয়ামী পুলিশলীগ। তাদের অপরাধ হল তারা জামায়াতের সমর্থক।
এখন প্রশ্ন হল-জামায়াতে ইসলামী কি এদেশে কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন? জামায়াতে ইসলামী এদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী রাজনৈতিক দল। জামায়াত কোনো গোপন সংগঠন নয়। জামায়াতে ইসলামি এদেশে গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী শুধু কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্যই কাজ করছে না, এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াত নেতাকর্মীরা অতন্দ্র প্রহরীর ভুমিকা পালন করছে। জামায়াতের লাখ লাখ নেতাকর্মী এদেশেই জন্মগ্রহণ করেছে। তাদেরও সভা, সমাবেশ ও মিটিং-মিছিল করার অধিকার রয়েছে ।
অথচ ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার আজ জামায়াতের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে জামায়াত নেতাকর্মীদেরকে একসাথে বসে ইফতার করতেও দিচ্ছে না। তারাবী নামাজও আদায় করতে দিচ্ছে না। হাসিনার এসব কর্মকান্ড প্রমাণ করে তিনি মুখে ইসলামের কথা বললেও অন্তরে লালন করেন ইসলাম বিদ্বেষ। ইসলামকে সহ্য করতে পারে না বলেই রমজান মাসে রোজাদারদেরকে একসাথে বসে ইফতার করতে বাধা দেয়।
Discussion about this post