রুদ্র আহনাফ
লাখো মানুষের জীবন ও রক্তের বিনিময়ে ৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতেই মূলত এদেশের মানুষ পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে জীবন দিয়েছিল। মহান মুক্তি যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
এখন প্রশ্ন হল-স্বাধীনতার ৫০ বছর পর কি এদেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার ফিরে পেয়েছে? দেশের মানুষ কি নির্বাচনে স্বাধীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছে? মানুষ কি ফিরে পেয়েছে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার? একজন পাগলও এসব প্রশ্নের জবাবে না বলতে বাধ্য হবে।
১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে এদেশ থেকে স্বৈরাচারী শাসনের অবসান হয়। শুরু হয় গণতন্ত্রের যুগ। কিন্তু এই গণতন্ত্রও বেশি দিন টিকে থাকতে পারেনি। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত গণতন্ত্রের খুটিটা টিকে ছিল। ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন থেকেই দেশটা আবার অঘোষিত স্বৈরাচারের হাতে চলে যায়।
দেখা গেছে, ২০০৮ সালের ৩০ ডিস্মেবরের সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রের লেবাস পরে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন স্বৈরাচারী কায়দায় ভোট ডাকাতি করে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে বিজয়ী ঘোষণা করে। সেদিন থেকেই এদেশের গণতন্ত্র লাইফ সাপোর্টে চলে যায়।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা একদিকে ধীরে ধীরে স্বৈরাচার হতে থাকে, অপরদিকে আক্রান্ত হতে থাকে দেশের গণতন্ত্র। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রের লেবাসধারী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘোষণা করেন।
এরপর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশের গণতন্ত্রের দাফন সম্পন্ন করেন। এরপর থেকে গণতন্ত্রের কথিত মানস কন্যা হয়ে উঠেন একজন বিশ্ব স্বৈরাচার। শেখ হাসিনা এখন পুরোপুরি স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। মানুষ তাদের অধিকারের কথা ভুলেই গেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে দেশে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন চলছে। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ভোট সম্পন্ন হয়েছে। দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ২৫০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হয়ে গেছেন। ২৫০ টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের লোকজন দাড়াতেই পারেনি। কেউ প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করলেই তাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে থামিয়ে দিচ্ছে। কেউ থামতে না চাইলে তাকে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার অবৈধ এমপিদের সাথে এবার যোগ হচ্ছে অবৈধ চেয়ারম্যান-মেম্বার। সহজভাবে বললে-পুরো দেশটাই এখন হাসিনার অবৈধ সন্তানদের হাতে।
Discussion about this post