অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ততই উত্তপ্ত ও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে কোনো কারণ ছাড়াই বিরোধীজোট তথা বিএনপি জোটের নেতাকর্মীদের ওপর প্রতিদিন হামলা চালাচ্ছে। ভাঙচুর করা হচ্ছে তাদের বাড়িঘর, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গত তিনদিন ধরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা-ভাঙচুরের সঙ্গে যোগ হয়েছে পুলিশের গুলিবর্ষণ।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ‘নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের ২টার্গেট’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, দল, শেখ হাসিনার পরিবার ও সিনিয়র নেতাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ক্ষমতা ধরে রাখা ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ নেই। আর যদি দেখে যে ক্ষমতা ধরে রাখা সম্ভব হবে না তাহলে তারা নিরাপদে সরে যাওয়ার চেষ্টা করবে। প্রয়োজনে ক্ষমতা সেনাবাহিনীকে দিয়ে তারা নিরাপদে চলে যাবে। কিন্তু বিএনপি জোটের হাতে শেখ হাসিনা কখনো ক্ষমতা যেতে দেবেন না।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এসব টার্গেট বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা এখন মাঠ প্রস্তুত করছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নেয়ায় আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসাটা কঠিন মনে করছে সরকার। তাই হামলা-মামলা, ভাঙচুর, গ্রেফতার, নির্যাতন, গুম, হত্যার মাধ্যমে বিএনপি জোটকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।
এদিকে, হামলা, ভাঙচুর, মামলা, গ্রেফতার ও নির্যাতনের পরও নির্বাচন থেকে সরে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট। এই দুই শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এমনকি ভোটের দিন সকাল থেকে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে তারা।
এখন দুই জোটের এই ঘোষণায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়মাী লীগ। জানা গেছে, তারা এখন তৃতীয় শক্তিকে আনার জন্য মাঠ প্রস্তত করছে। এলক্ষ্যেই তারা প্রতিদিন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারে হামলা-ভাঙচুর চালাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণায় সবসময়ই কিছু মারামারি-সংঘর্ষ হয়ে থাকে। কিন্তু এবার যা হচ্ছে তা নজিরবিহীন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থেকে শুরু করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের ওপর পর্যন্ত হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
বলা যায়-বিরোধীজোটের নেতাকর্মীরা এখন দেশের কোথাও মাঠে নামতেই পারছে না। আর নির্বাচন কমিশন এসব দেখেও না দেখার ভান করছে। এসব হামলা-মামলার মাধ্যমে মূলত আওয়ামী লীগ একটি ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা যখন মনে করবে যে ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়, তখনই সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দিয়ে দলবল নিয়ে তিনি নিরাপদে চলে যাবেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদেরকে পিটিয়ে আওয়ামী লীগ এখন সেই মাঠ প্রস্তুত করছে।