অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কথিত দুর্নীতির অভিযোগে সাজা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার টার্গেট ছিল খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রেখে আরেকটি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে নিজের হাতে রাখা। সেই লক্ষ্যে কথিত দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে অনুগত বিচারকের মাধ্যমে দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা দিয়েছে। সর্বশেষ ৩টি আসনে দাখিল করা খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র রোববার বাতিল করা হয়েছে। এখন খালেদা জিয়ার পক্ষে আর নির্বাচনে অংশ নেয়া সম্ভব হবে না। এখন নির্বাচনের মাঠ পুরোটাই শেখ হাসিনার।
খালেদা জিয়ার মামলা, সাজা ও মনোনয়নপত্র বাতিলের ঘটনা সবই প্রশ্নবিদ্ধ। একজন রিকশাচালক পর্যন্ত মনে করে যে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এসব মামলা রাজনৈতিক। রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই মূলত শেখ হাসিনা এসব করছেন।
এখন আইনজ্ঞ, রাজনীতিক বিশ্লেষক, বিশিষ্টজনসহ সচেতন মানুষের মধ্যে একটি বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আর সেটা হলো সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে যদি খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন তাহলে দুর্নীতির দায়ে ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা হাজী সেলিমের মনোনয়নপত্র বৈধ হয় কিভাবে। কারণ, আইনতো সবার জন্য সমান।
জানা গেছে, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী মো. সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় দুদক মামলা করে। এ মামলায় ২০০৮ সালে বিচারিক আদালত হাজী সেলিমকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৩ বছর কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাজী মো. সেলিমকে খালাস দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় দুদক। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আদেশ দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতে দণ্ডিত সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ আসে আপিল বিভাগ থেকে। ওই দণ্ডের বিরুদ্ধে এখনো হাইকোর্টে তার আপিল বিচারাধীন রয়েছে।
কিন্তু এরমধ্যেই ঢাকা-৭ (লালবাগ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাজী মো. সেলিমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
এ ঘটনার পর অনেকেই এখন প্রশ্ন তুলছেন যে আইন কি তাহলে শুধুই বিরোধী দলের জন্য। কারণ হাজী সেলিম আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় তার মনোনয়ন বৈধ হয়ে গেল আর একই অভিযোগে অভিযুক্ত খালেদা জিয়া বিরোধী দলের হওয়ায় তার ওপর আইনের বিধান কার্যকর হলো।