অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন ও তার নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে গালিগালাজ করে দিনের অধিকাংশ সময় পার করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলের সিনিয়র নেতারা। এমনকি জনস্বার্থমূলক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজের কথা বাদ দিয়ে জাতীয় সংসদেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করা হচ্ছে ডা. কামালকে গালাগালি করে। মঙ্গলবার রাতে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা মুখ দিয়ে যা এসেছে সংসদে দাড়িয়ে ডা. কামালকে তাই বলেছেন। তাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে এটা সংসদের অধিবেশন নয়, যেন আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো বৈঠক চলছে।
এরমধ্যে বুধবার হঠাৎ করেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিভঙ্গির অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন নেতার সমালোচনা করলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে তার বক্তব্য ছিল গঠনমূলক। তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদেরকে বেশ কিছু উপদেশ দিয়েছেন। এমনকি নব গঠিত জোট নির্বাচনে আসলে গণতন্ত্রের ভীত আরও মজুবত হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে হঠাৎ শেখ হাসিনার নরম সুরে দেয়া বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন চলছে। রাজনীতিক বিশ্লেষকরাও তার এই বক্তব্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদেরকে শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা প্রকাশ্যে গালিগালাজ করলেও আসলে তারা উৎকণ্ঠায় আছে। সরকার মনে করছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ডাকে বোধ হয় জনগন সাড়া দেবে না। কিন্তু, সিলেটের সমাবেশ সরকারের সেই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে। কারণ, সিলেটে ছিল নবগঠিত জোটের প্রথম সমাবেশ। এই সমাবেশ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সারাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক কৌতুহল ছিল।
এদিকে, সরকার অনুমতি দিলেও সমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতে সরকারের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও পুলিশের বাধার কারণে বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আসতে পারেনি। অনেক জায়গায় সমাবেশের গাড়িবহর আটকে দিয়েছে সরকারদলীয় ক্যাডার ও পুলিশ বাহিনী। কিন্তু, এরপরও বাধা উপেক্ষা করে সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে জনতার ঢল নেমেছে।
স্থানীয়রা মনে করছেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগ আর পুলিশ যদি বাধা না দিতো তাহলে পুরো সিলেট শহর আজ লোকে লোকারণ্য হয়ে যেতো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের জনতার ঢল দেখে সরকারের টনক নড়ে গেছে। এতদিন ড. কামালকে কোমর ভাঙ্গা আর জনবিচ্ছিন্ন বললেও আজ শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা বুঝতে পেরেছে কামালের ডাকে জনগণ সাড়া দিয়েছে। ভবিষ্যতে তাদের পক্ষে ঢাকা শহরও দখল করা সম্ভব হবে। এজন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যাতে অন্য পথে না গিয়ে নির্বাচনে আসে সেই দিকে নজর দিচ্ছে সরকার। এজন্যই শেখ হাসিনা আজ তাদেরকে স্বাগত জানিয়ে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।