সাংবাদিকসহ অংশীজনদের আপত্তি উপেক্ষা করে বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল আজ জাতীয় সংসদে পাস হতে যাচ্ছে। এ আইনটি পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে পড়বে বলে বিভিন্ন মহল থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ এরই মধ্যে আইনটি প্রত্যাখ্যান করেছে। সাংবাদিক ইউনিয়নও আইনটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে।
আইনে ঔপনিবেশিক আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট অন্তর্ভুক্ত করে এর পরিধি আরো বাড়ানো হয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যমে কেউ ওই অ্যাক্ট ভঙ্গ করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার সাজা হবে। এর সর্বোচ্চ সাজা ১৪ বছরের কারাদণ্ড। আইনে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার ও তল্লাশির ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে।
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম আইনটির ব্যাপারে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রস্তাবিত এ আইনটিতে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী যেসব বিষয় ছিল, সেগুলো রয়ে গেছে। কোন পরিবর্তন আসেনি। স্বাধীন সাংবাদিকতার সুযোগ আর রইল না। অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টকে অন্তর্ভুক্ত করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক এই আইন এখন আর ব্যবহৃত হয় না। আস্তাকুঁড় থেকে এই আইনটিকে আবার সামনে আনা হলো।
তিনি বলেন, সংবাদপত্র, টেলিভিশনসহ সব ধরনের সংবাদমাধ্যমকে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করতেই হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগগতভাবে সব ধরনের গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষমতা রাখে।
গত ২৯শে জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। তখন থেকেই আইনটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। সম্পাদক পরিষদ এই আইনের ৮,২১,২৫,২৮,২৯,৩১,৩২ ও ৪৩ ধারা নিয়ে আপত্তি জানায়। এছাড়া, ১০টি পশ্চিমা দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা আইনের ২১,২৮,৩২ ও ২৫ ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। সংসদীয় কমিটি সম্পাদক পরিষদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সংসদীয় কমিটি। কমিটি প্রতিবেদন দিতে তৃতীয় দফায় ১১ই সেপ্টেম্বর এক মাসের সময় নিয়েছিল। কিন্তু পরদিনই তারা প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। এই প্রতিবেদনে অংশীজনদের মতামতের তেমন কোন প্রতিফলন ঘটেনি।
সূত্র: মানবজমিন