অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে প্রতিদিন যে ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে থাকেন তার গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা হলো-বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে দেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের কাছে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। রাষ্ট্রের সম্পত্তি লুটপাট, আত্মসাত ও দুর্নীতি করতে তারা ক্ষমতায় আসে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়। জনগণ উন্নত জীবন পায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সুনাম বাড়ে।
শেখ হাসিনা জোর গলায় আর যে কথাটি বলে বেড়ান সেটা হলো-আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছে। দুর্নীতি-লুটপাটের জন্য আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে না। আমাদের অর্থ-সম্পদের দরকার নাই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি বন্ধ করেছে। দেশ এখন আর দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয় না।
এভাবেই প্রতিদিন শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা সভা-সমাবেশে গিয়ে জনগণের সামনে কথিত উন্নয়নের ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাচ্ছেন আর নিজেদের দুর্নীতিকে চাপা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।অথচ শেখ হাসিনার বিগত ১৬ বছরের শাসনামল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে দুর্নীতি-লুটপাটের এত মহোৎসব অতীতে আর হয়নি। শেয়ারবাজার ও ব্যাংক লুটের ঘটনা অতীতে ঘটেনি। আর বাণিজ্যিক খাতের প্রত্যেকটি ব্যাংক সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসব ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বাণিজ্যিক খাতের ব্যাংকগুলো এখন চরম অর্থসংকটে ভুগছে। এছাড়া রাষ্ট্রের এমন কোনো সেক্টর নেই যেখান থেকে ক্ষমতাসীনরা অর্থ আত্মসাত করেনি।
বর্তমানে দেশের প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই লুটেপুটে নিচ্ছে। বলতে গেলে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি ও প্রশাসনের আওয়ামী কর্মকর্তারা মিলে মিশে রাষ্ট্রের কোষাগার একেবারে ফোকলা করে দিয়েছে। একেকজন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। সর্বশেষ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর, ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, বরিশালের ডিআইজি হাসান, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা, এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমান, ফয়সাল ও বদরুন্নাহারের ঘটনায় বাংলাদেশের ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে দুর্নীতির যেসব তথ্য ও চিত্র বেরিয়ে এসেছে সেগুলো বর্তমান সরকারের শাসনামলের দুর্নীতির খন্ডচিত্র মাত্র। বর্তমানে প্রশাসনের পিয়ন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পদের কর্মকর্তা পর্যন্ত দুর্নীতি-লুটপাটে জড়িত। আর সরকারই তাদেরকে এসব দুর্নীতি-লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে। আর সরকার যে কথিত উন্নয়নের আড়ালে রাষ্ট্রের অর্থ লুটেপাটে খাচ্ছে সেটাই এখন প্রমাণিত হচ্ছে। বেনজীর, আসাদ, আজিজ, মতিউর ও ফয়সালের ঘটনা প্রমাণ করে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বে রোল মডেল। সরকার উন্নয়নের যে রেকর্ড বাজাচ্ছে এগুলো যে আসলে আষাড়ে গল্প সেটা এখন প্রমাণিত হয়েছে।
Discussion about this post