বুধবার, অক্টোবর ১৫, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home কলাম

আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।

জুলাই ১, ২০২৪
in কলাম, জাতীয়
Share on FacebookShare on Twitter

আজ ১ জুলাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ১৯২১ সালের এই দিনে তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ কলেজের (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) ডিগ্রি ক্লাসে অধ্যয়নরত ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। শুধু ছাত্র নয়, শিক্ষক এবং লাইব্রেরির বই ও অন্যান্য উপকরণ এই দুই কলেজ থেকে নিয়ে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় চালু করে। ইংরেজরা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় মোটেই আন্তরিক ছিল না। নওয়াব আলী চৌধুরীর নেতৃত্বে মুসলিম নেতাদের চাপে তারা এটি করতে বাধ্য হয়।

১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজ ইংল্যান্ডের একটি ব্যবসায়ী কোম্পানি ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির’ কাছে পরাজিত হয়েছেন তার প্রধান সেনাপতি ও এখানকার মুশরিক সম্প্রদায়ের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে। ঐ কোম্পানির ব্যবসায়িক ব্যবস্থা কোলকাতা বন্দরকে ঘিরে ছিল। তাই তারা কোলকাতাকে রাজধানী করে। এরপর তারা ধীরে ধীরে বাংলাকে ছাড়িয়ে পুরো ভারতকে যখন নিজেদের অধিকারে আনে তখনও রাজধানী ছিল কোলকাতা। ১৭৫৭ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত ১৫৪ বছর ভারতের রাজধানী ছিল কোলকাতা।

ভারত পরিচালনা করতে গিয়ে ইংরেজরা সবচেয়ে বেশি শোষণ করেছে ও প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে বাংলা বিশেষত পূর্ব বাংলা থেকে। এই প্রেক্ষিতে পূর্ব বাংলায় তাদের শাসন আরো জোরদার করার লক্ষ্যে ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের ঘোষণা দেন। বাংলাকে ভেঙ্গে দুটি প্রদেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় ইংরেজ সরকার। নতুন প্রদেশের নাম করা হয় ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম’। ত্রিপুরা, ঢাকা, রাজশাহী, চটগ্রাম, মালদা ও আসাম নিয়ে এই প্রদেশ গঠিত হয়। এর রাজধানী করা হয় ঢাকাকে এবং ২য় রাজধানী করা হয় চটগ্রামকে।

মুসলিম রাজনীতিবিদেরা এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানান। তারা ভেবেছেন এর মাধ্যমে ঢাকা পুনর্গঠন হবে। এখানকার মুসলিমরা চাকুরি ও ব্যবসায় উন্নতি করতে পারবে। মুসলিম অধ্যুষিত দুইটি এলাকা শহরে পরিণত হবে। মুসলিমদের জীবনমান উন্নত হবে। সেসময়ে পূর্ববঙ্গের মুসলিম নেতা ছিলেন নবাব সলিমুল্লাহ, নবাব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ও তরুণ নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। তারা ঢাকাকে নতুন শহরে রূপ দিতে কাজ শুরু করেছিলেন ইংরেজদের সাথে।

ইংরেজদের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারে নি কোলকাতার হিন্দু সমাজ। ১৭৫৭ সাল থেকেই ইংরেজরা কোলকাতায় একটি বুদ্ধিজীবী সুবিধাগোষ্ঠী সমাজ তৈরি করে যাদের সবাই ছিল হিন্দু। তারা শত বছর ধরে ইংরেজ শাসনের সুবিধাভোগী ও ইংরেজদের সকল কাজের বৈধতা দানকারী ছিল। কিন্তু বঙ্গভঙ্গের ফলে যখন তারা ভেবেছে মুসলিমদের উন্নতি হবে তখনই তারা এর ঘোর বিরোধীতা করতে শুরু করে। ইংরেজদের দালালরাই ইংরেজদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সহিংস আন্দোলন শুরু করে।

ইংরেজরা হিন্দুদের এমন আচরণে থমকে যায়। তারপরেও তারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অটল থাকে। মুসলিমরাও বুঝেছে ইংরেজদের চাইতে তাদের বড় শত্রু এদেশীয় মুশরিকরা। তাই ১৯০৬ সালে মুসলিম নেতারা নিজেদের জন্য রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ‘মুসলিম লীগ’ গঠন করে। ইংরেজরা তাদের সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত অটল থাকতে পারেনি। ৬ বছর পর ১৯১১ সালে তারা তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করে। পুরো বাংলা, আসাম, বিহার ও উড়িষ্যা নিয়ে আবার আগের মতো বঙ্গ প্রদেশ গঠিত হয়। রাজধানী থাকে আগের মতোই কোলকাতা।

তবে ইংরেজরা এই ঘটনায় মারাত্মক শকড হয়। তাদের তৈরি দালাল শ্রেণি তাদের বিরুদ্ধে ব্যাকফায়ার করেছে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা ভেবেছে যদি কোলকাতা ভারতবর্ষের রাজধানী থাকে তবে এই দালালশ্রেণি তাদের পদে পদে বাধা তৈরি করবে। তাই তারা বঙ্গভঙ্গ রদ করার পাশাপাশি এও ঘোষণা দেয়, কোলকাতা এখন থেকে শুধু বঙ্গের প্রাদেশিক রাজধানী হয়েই থাকবে। ভারতবর্ষের নতুন রাজধানী হবে দিল্লী।

কোলকাতার এতো বড় ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও কোলকাতা কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী ও তাদের অনুসারীরা সারা কোলকাতায় আবির উৎসব করেছে। তাদের উৎসবের একমাত্র হেতু ঢাকা আর রাজধানী থাকছে না। মুসলিমদের কোনো শহর হচ্ছে না বাংলায়। নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গ করার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে থাকবে এটি।

১৯১১ সালে ২৯ আগস্ট ঢাকার কার্জন হলে ল্যান্সলট হেয়ারের বিদায় এবং চার্লস স্টুয়ার্ট বেইলির যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৃথক দুটি মানপত্রে নবাব সলিমুল্লাহ ও নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি লর্ড হার্ডিঞ্জের ঢাকায় অবস্থানকালে নওয়াব সলিমুল্লাহ ও নওয়াব আলীসহ ১৯ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বঙ্গভঙ্গ রদের ফলে মুসলমানদের যে সমূহ ক্ষতি হয়েছে সে কথা তুলে ধরেন। সেখানে শেরে বাংলাও ছিলেন।

তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। এ লক্ষ্যে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নাথান কমিটি গঠিত হলে নওয়াব আলী চৌধুরী এর অন্যতম সদস্য হন। এর অধীনে ছয়টি সাব কমিটি গঠিত হলে তিনি ৬ টি বিভাগের সদস্য নিযুক্ত হন।

সৃষ্টির শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়ে। কোলকাতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে হিন্দুরা। এর নেতৃত্ব দেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় আর রাজনীতিক সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী। ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ১৯১২ সালে তাঁর ঢাকা সফর শেষে কলকাতা প্রত্যাবর্তন করলে ১৯১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ড. রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল তার সাথে সাক্ষাৎ এবং ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধিতামূলক একটি স্মারকলিপি পেশ করে।

এছাড়া ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ইংরেজরা এই বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নিতে রাজি হয় না। এর মধ্যে ১৯১৫ সালে নবাব সলিমুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অনিশ্চয়তার দিকে চলে যায়। সবচেয়ে বড় কথা হলো হার্ডিঞ্জ ক্ষুব্দ মুসলিম নেতাদের খুশি করতে তাদের দাবির প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক একটি ঘোষণা দেয়। এটি ইংরেজ সরকার থেকে আসেনি। ফলে ইংরেজরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়।

এর ফলে পূর্ব বাংলার মানুষ হতাশা প্রকাশ করে। ১৯১৬ সালে নবাব বাহাদুর নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাবি প্রতিষ্ঠার জন্য জোর তৎপরতা শুরু করেন। তিনি ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সভায় নওয়াব আলী চৌধুরী ইংরেজ সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশ করার আহ্বান জানান। এই নিয়ে সেখানে তিনি জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তার অব্যাহত প্রচেষ্টায় ১৯২০ সালের ১৮ মার্চ ভারতীয় আইনসভায় নওয়াব আলী চৌধুরীর উত্থাপিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল অ্যাক্টে পরিণত হয় এবং ২৩ মার্চ তা গভর্নর জেনারেলের অনুমোদন লাভ করে। এই আইনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি।

এরপরেও হিন্দুদের চাপে ইংরেজরা নানান টালবাহানা করতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সব বাধা প্রতিরোধ করেন। এদিকে কোলকাতার দালালরা আন্দোলন ও অসহযোগ অব্যাহত রেখেছেই। অবশেষে আশুতোষের সাথে ইংরেজদের সাথে এই মর্মে সমঝোতা হয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে তার ভূমিকা থাকবে এবং কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি বিভাগ সৃষ্টি হবে। এভাবে ঢাবিতে সৃষ্টির শুরুতেই এখানে ব্রাহ্মন্যবাদীদের প্রভাব সৃষ্টি হয়।

এবার ইংরেজ সরকারের নতুন অজুহাত, তাদের কাছে যথেষ্ট ফান্ড নেই। এরপরেও দমে যাননি নওয়াব আলী চৌধুরি। তিনি তার নিজ জমিদারীর একাংশ বন্ধক রেখে এককালীন ৩৫০০০ পাউন্ড প্রদান করেন। এই টাকা তিনি আর ফেরত পাননি। তিনি খরচ কমানোর জন্য সদ্য বিলুপ্ত হওয়া প্রদেশ ‘পূর্ববঙ্গ ও আসামের’ জন্য ব্যবহৃত সরকারি ভবনগুলোকে ঢাকা ভার্সিটির সম্পদ হিসেবে প্রস্তাব করেন। ইংরেজরা সেই ভবনগুলো ও ঢাকা কলেজ থেকে কার্জন হল নিয়ে নতুন কোনো ভবন তৈরি করা ছাড়াই ঢাবি প্রতিষ্ঠা করে।

১৯২১ সালের ১ জুলাই তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ কলেজের (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) ডিগ্রি ক্লাসে অধ্যয়নরত ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। শুধু ছাত্র নয়, শিক্ষক এবং লাইব্রেরির বই ও অন্যান্য উপকরণ এই দুই কলেজ থেকে নিয়ে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় চালু করে। এর দ্বারা প্রমাণিত হয়, ইংরেজরা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় মোটেই আন্তরিক ছিল না। নওয়াব আলী চৌধুরীর নেতৃত্বে মুসলিম নেতাদের চাপে তারা এটি করতে বাধ্য হয়।

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
কলাম

কোটা, কোটা আন্দোলন ও এর ইতিহাস

জুলাই ১৫, ২০২৪
Home Post

আওয়ামী আইনে বদলিই দুর্নীতির শাস্তি!

জুলাই ৮, ২০২৪

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • ‘হেল্প সেল’ এর তৎপরতা বন্ধ করতেই ছাত্রদল নেতা নুরুকে হত্যা?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD