অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিগত ১২ বছর ধরেই শেখ হাসিনা বলে আসছিলেন যে, কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন তিনি করবেন না। হেফাজত নেতাসহ কওমী আলেমদেরকে গণভবনে ডেকে নিয়েও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সরকার ইসলাম বিরোধী নয়। তিনি কুরআন-হাদীসের বিপক্ষে যাবেন না। প্রয়োজনে তিনি মদীনা সনদ অনুযায়ী দেশ চালাবেন।
কিন্তু, দেশবাসীসহ সমগ্র বিশ্ববাসী কি দেখতে পেল? শেখ হাসিনা তার বাবা মুজিবকে প্রতিষ্ঠিত করতে সরাসরি কুরআনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। কুরআন যেটাকে মুসলমানদের জন্য হারাম ঘোষণা দিয়েছে, শেখ হাসিনা আদালতের মাধ্যমে সেটাকে জায়েজ করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
দেখা গেছে, ২০০০ সালেও শেখ হাসিনার শাসনামলে ফতোয়াকে নিষিদ্ধ করে আদালত রায় দিয়েছিল। ওই সময় মুফতি আমিনী, শায়খুল হাদীস আজিজুল হক ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে এদেশের সর্বস্তরের আলেম সমাজসহ তাওহিদী জনতা গর্জে উঠেছিল। রাজপথে স্মরণকালের তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে। যেটি পরে শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নৌকা ডুবে সাগরের তলদেশে চলে গিয়েছিল।
এখন প্রশ্ন হলো-পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তর মুসলিম দেশ বাংলাদেশে এভাবে কুরআনের বিধান অপব্যাখ্যা করে আদালতের রায় নিয়ে দেশের আলেম সমাজ কি ভাবছেন? যারা মূর্তি বা ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনে নেমেছেন তারা এখন কি করবেন? জেল-জুলুমের ভয়ে তারা কি কুরআনপরিপন্থী এই রায় মেনে নেবেন? নাকি সকল বাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করে তাদের চেতনায় বলিয়ান হয়ে অবৈধ রায় পরিবর্তনের জন্য মাঠে নামবেন?
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ মনে করছেন, চলমান অবস্থায় দেশের আলেম সমাজকে পিছু হটার কোনো সুযোগ নাই। কুরআনপন্থী আইন করার পরও যদি আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে না পারে তাহলে সরকারের আর কোনো অপকমর্রে প্রতিবাদ তারা করতে পারবে না। সরকার দেশে যখন যেটা করবে সেটাই তাদেরকে মেনে নিতে হবে। তারা কখনো মাথা উচু করে দাড়াতে পারবেন না। এমনকি ওয়াজ মাহফিলগুলোতেও কুরআন-হাদীস বাদ দিয়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বয়ান করতে হবে। গণতন্ত্রের মতো দেশে ইসলামও নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়বে।
তাদের মতে, আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকর্মী ছাড়া এদেশের সকল মানুষ এখন সরকার বিরোধী। বিশেষ করে ভাস্কর্য ইস্যুতে এদেশের মুসলমানরা সরকারের উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তারা শুধু ডাকের অপেক্ষায় আছে। আন্দোলনের ডাক দিলেই মানুষ পঙ্গুপালের মতো রাস্তায় নেমে আসবে। দেশের আলেম সমাজ এখন কি করে সেটাই দেখার বিষয়।