বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২৩, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

হাসপাতালের বিভীষিকাময় চিত্র: ‘বিছানার কাছেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাশ পড়ে ছিল’

এপ্রিল ২৩, ২০২০
in slide, Top Post, জাতীয়
Share on FacebookShare on Twitter
  • করোনাভাইরাস: কোভিড-১৯ রোগীর ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসার বিভীষিকাময় বর্ণনা

শাহাদাত হোসেন বেসরকারি চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের একজন সিনিয়র রিপোর্টার। গত মাসের একদম শেষের দিকে একটু জ্বর উঠেছিল।

খুব সামান্যই তাপমাত্রা ছিল। এরপর একটি প্যারাসিটামল খাওয়ার পর এক রাতেই জ্বর সেরে গিয়েছিল। এরপর তিনি পেশাগত দায়িত্বও পালন করেছেন।

কিন্তু বাড়িতে তার শ্বশুর কয়েকদিনের মধ্যে ব্যাপক জ্বর ও মাথাব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়ার পর ভাবলেন নিজেও একটু পরীক্ষা করিয়ে নেবেন।

দেখা গেল তার কোন উপসর্গ না থাকলেও তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর তার শ্বশুর সহ পুরো পরিবারের সবাই আক্রান্ত হয়েছেন। শাহাদাত হোসেন বলছেন, হাসপাতালে ভর্তির পর তার মনে হয়েছে জীবনে এতটা অসহায় কোনদিন বোধ করেননি।

‘ওয়ার্ডে মরদেহ পড়েছিল ২৪ ঘণ্টা’
তিনি বলছেন, করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ এটি জানার পর শুরুতে তিনি খুব আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। কী করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না।

সহকর্মীদের সহায়তায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার ভাষায়, “হাসপাতালে চরম প্রতিকূলতার মধ্যে নয়দিন পার করেছি আমরা। ওখানে মনে হয়েছি রোগীরা একেবারে অভিভাবকহীন। আমি খুবই অসহায় বোধ করেছি।”

“দেখতাম চোখের সামনে রোগীরা মারা যাচ্ছে। লাশ ওয়ার্ডেই পড়ে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা”, তিনি বলেন।

তিনি বলেন, ”যেহেতু নির্দিষ্ট ব্যক্তি লাশ দাফন করেন হয়তো তাদের সংখ্যা কম কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, সেকারণে হয়তোবা। কিন্তু এতে একজন অসুস্থ রোগী যে এমনিতেই ভয়ে আছে তার মনের অবস্থা কী হয়?”

তিনি হাসপাতালে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলছিলেন ২৪ ঘণ্টায় একজন চিকিৎসক আসতেন। অনেক দূর থেকে কথা বলে চলে যেতেন।

নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে একটি মানুষকেও পাওয়া যায় না। এরকমও হয়েছে যে নার্স আসেনি বলে একবার সকালের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া হয়নি। চিকিৎসক দিনে একবারও আসেনি সেটিও হয়েছে।

তিনি বলছেন, “কিন্তু একজন চিকিৎসকের কথায় আমার ভরসা পাওয়ার কথা। তার কথায় আমার মনোবল বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখানে মানসিক সাপোর্ট দেয়ার কেউ ছিল না।”

অন্যান্য সুবিধাদির বর্ণনা দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, তিনি যে ওয়ার্ডে ছিলেন সেখানে একশো মতো রোগী ছিল। এতজন রোগীর জন্য মাত্র তিনটি টয়লেট, তিনটি গোসলখানা।

শাহাদাত হোসেন এক পর্যায়ে রোগী বাড়তে শুরু করার পর চিকিৎসকদের অনুরোধ করে তার শ্বশুরসহ বাড়ি চলে আসেন।

আর একটি হাসপাতালের চিত্র

দেশে সবচেয়ে প্রথম যে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সাংবাদিক শনাক্ত হয়েছিলেন সেটি ছিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের। সেখানে ভিডিওগ্রাফার হিসেবে কর্মরত আশিকুর রহমান রাজু আক্রান্তদের একজন।

তিনি বলছেন, শনাক্ত হওয়ার পর যখন কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে যান শুরুতেই ঘাবড়ে গিয়েছিলেন কারণ সবাই পিপিই পরে অনেক দূরে দাড়িয়ে আছেন।

তিনি তার প্রথম অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, তাকে একজন ওয়ার্ড বয় একটা পলিথিন ব্যাগে বিছানার চাদর, বালিশ, বালিশের কাভার, টয়লেট টিস্যু আর একটা সাবান দেয়।

তিনি জানান, ”এগুলো দিয়ে ওয়ার্ড বয় কেচিগেট তালা মেরে চলে গেল। নিজের বিছানাও নিজে গুছিয়ে নিতে হল,”।

তিনি বলছিলেন, প্রথম দিন তার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে কেউ আসেনি। চিকিৎসকদের ফোন করে তিনি সেটি জানানোর পর সাড়ে চারটার দিকে তার জন্য একটি বক্সে করে খাবার এসেছিল। কোন প্লেট দেয়া হতো না। সেখানে পানি গরম করা থেকে শুরু করে সবকিছুই নিজেকে করে নিতে হয়েছে।

এমনকি জ্বর হলে যে মাথায় পানি দিতে হয়, সেসময়ও সহায়তা দেয়ার কেউ ছিল না। একটা বালতি, মগ কিছুই ছিল না, এসব অভিযোগ তিনি করেছেন।

“খাবার রেখে যাওয়া হতো কেঁচি গেটের বাইরে। তারপর হ্যান্ডমাইকে সেটা জানানো হতো,” বলে জানান তিনি।

মি. রহমান বলেন, ”অসুস্থ লোকদের গিয়ে সেই খাবার নিয়ে আসতে হতো। ওয়ার্ডে একজন নতুন বয়স্ক রোগী এসেছিলেন। তিনি এই তথ্যটা জানতেন না। তিনি একরাত ও পরের সকাল না খেয়ে ছিলেন”।

আশিকুর রহমান বলছিলেন, জ্বর নিয়ে যে কয়দিন বাসায় ছিলেন তার মনোবল চাঙ্গা ছিল। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথেই সেটি হারাতে শুরু করেন।

যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার শাহাদাত হোসেন ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ভিডিওগ্রাফার আশিকুর রহমান রাজু

‘যেন কোন পাপ করে ফেলেছি’

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি, যারা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছেন তারা ও তাদের পরিবার এবং তাদের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়জিত ব্যক্তিরা সামাজিকভাবে ব্যাপক হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন এমন বেশকিছু অভিযোগ উঠেছে।

একসময় কুষ্ঠ আক্রান্ত রোগীদের যেভাবে সমাজ পরিত্যাগ করতো যেন সেরকম এক ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে। তার একটি বর্ণনা পাওয়া গেল এই দুই সংবাদকর্মীর ভাষায়।

অন্য আরও বেশ কয়েকজন সেরে ওঠা ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা হলেও সামাজিক সমস্যার ভয়ে তারা কথা বলতে রাজি হননি।

আশিকুর রহমান রাজু বলছেন, যেসময় ভয়াবহ শরীর ব্যথা, জ্বর, মাথাব্যথা ও কাশি শুরু হয় সেই সময় তিনি বাড়িতে একাই ছিলেন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা এমন সন্দেহ হলে আইইডিসিআরে যোগাযোগ করেন। তার শরীর থেকে যখন স্বাস্থ্যকর্মীরা নমুনা সংগ্রহ করতে আসেন তখন এলাকার লোকজন ও বাড়িওয়ালার চরম ক্ষোভের মুখে পরেন তিনি।

“কেন আমি ওদের ডাকলাম, এইটা তারা বলছে। যেন আমি ওনাদের ডেকে কোন অন্যায় করছি,” তিনি বলেন।

”ওরা কেন আসছে, সেজন্য বাড়িওয়ালা আমার দরজা পিটাইতেছিল। এলাকার লোকজন এসে বাড়িওয়ালাকে ধরেছে।

মি. রহমান বলেন, ”আমি তাদের বুঝিয়ে বললাম যে সাবধানতা হিসেবে চেকআপের জন্য আসছে। পরীক্ষা হলে আপনাদের জন্যই ভালো হবে।

এরপর যেদিন করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবর পেলেন সেদিন তিনি অ্যাম্বুলেন্স বাড়ির কাছে আনতে সাহস করেননি। অসুস্থ অবস্থায় হেঁটে গিয়ে দূর থেকে অ্যাম্বুলেন্স উঠেছিলেন।

সেরে ওঠার পর যেদিন গ্রামের বাড়িতে গেছেন চেনা পরিচিত লোকেরাও তার খবর নেননি।

“আমি আসতেছি এটা দেখেই বাড়ির কাছে পুরো রাস্তা খালি হয়ে গেল। আমি যেন ভিন গ্রহের কেউ এরকম মনে হচ্ছিল,” তিনি বলেন।

শাহাদাত হোসেন বলছেন, তার ফ্ল্যাটের লোকজনের কাছ থেকে চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন তিনি ও তার পরিবার। রীতিমতো একঘরে করে ফেলার অবস্থা।

“মনে হয় যেন অসুস্থ হয়ে আমি বড় কোন পাপ করে ফেলেছি,” তিনি বলেন।

”হাসপাতালে আমার সাথে ছিলেন তাদের একজনকে দেখেছি অসহায়ত্বের কারণে কাঁদছেন। করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে জানার পর তার পরিবারকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার হুমকি পেয়েছেন,” বলেন মি. হোসেন।

‘আপনি হাসপাতালের দায়িত্ব নেবেন?’
হাসপাতাল সম্পর্কে যে অভিযোগ করছিলেন সেরে ওঠা এই দুইজন সেনিয়ে কথা বলেছি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদের সাথে।

তিনি বলছেন, “বাইরে থেকে কেউ বুঝবে না যে আমরা কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।”

চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, দেশে এ পর্যন্ত ১৩০ জন চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। একজন মারাও গেছেন।

“চিকিৎসকেরা কাছে না গেলে তারা আক্রান্ত হলেন কিভাবে?” তিনি প্রশ্ন করেন।

”এখানে সবমিলিয়ে ৬০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী। যারা সংসার, ছেলে-মেয়ে রেখে দিনের পর দিন দুরে থাকছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন।

”তাদের আমরা এন-৯৫ মাস্ক দিতে পারিনি। যিনি চিকিৎসা করবেন তিনি যদি আক্রান্ত হন তাহলে আপনি হাসপাতালের দায়িত্ব নেবেন?” ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ বলেন।

‘এটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’
করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন উপায় হচ্ছে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। স্বাস্থ্যকর্মীরা সেটাই করছেন বলে তিনি বলছেন।

হাসপাতালে মরদেহ ওয়ার্ড ফেলে রাখা অভিযোগ তিনি ‘অস্বাভাবিক’ বলে বর্ননা করেন।

”দিনে দুইবার অন্তত ডাক্তারদের রাউন্ড হয়। তিনি কি কাউকে তথ্যটা দিয়েছিলেন?” তিনি প্রশ্ন করেন।

” অসুস্থ অবস্থায় মানুষজন অনেক আবেগপ্রবণ থাকে। করোনাভাইরাসকে হয়ত তারা অন্য রোগের সাথে তুলনা করেছেন। কিন্তু বিষয়টাতো তা নয়,” ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ বলেন।

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যে অভিজ্ঞতা তাদের হচ্ছে সেটিকে তিনি যুদ্ধের সাথে তুলনা করে বলেন যে, সারা বিশ্ব এটি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।

”যেসব দেশে সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা রয়েছে তারাও ভেঙে পরছে। এটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ,” তিনি বলেন।

কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সূত্র: বিবিসি

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অসুরের মুখে দাঁড়ি-টুপি : মুসলিম বিদ্বেষে সীমা ছাড়াল ভারত

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আল্লামা সাঈদী রহ.-কে ৪ বার গুলি করে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছিল

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD