রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

দিল্লি থেকে কি বিজেপি শিক্ষা নিতে পারবে?

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২০
in Home Post, slide, মতামত
Share on FacebookShare on Twitter

মিরাজ খন্দকার

দিল্লিতে বিধান সভার নির্বাচন হয়ে গেলো। বরাবরের মতোই কেজরিওয়াল আবারো নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে বিজেপি ভূমিধস পরাজয়ের শিকার হয়েছে। রাজ্য বিধান সভাগুলোতে ভারতের ক্ষমতাসীন গেরুয়া দলটির এটি ছিল টানা ষষ্ট পরাজয়।

যে দিল্লিতে অবস্থিত ভারতীয় পার্লামেন্টে বিজেপির প্রায় একচ্ছত্র আধিপত্য, সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও মন্ত্রী ও রাজ্য পর্যায়ের নেতাদের বিশাল বহরও তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। আবার তাদের সবচেয়ে প্রবল অস্ত্র তথা উদ্ধত সাম্প্রদায়িকতার আশ্রয় নেয়া সত্ত্বেও এমনটা ঘটেছে। দিল্লিতে সাম্প্রদায়িকতা সুস্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এটাও নিশ্চিত করেছে মানুষ বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। দিল্লির ভোটাররাতাই গেরুয়া দলটির প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

দিল্লি অনেকটা আমাদের ঢাকার মতো। এটা কারো নগরী নয়, আবার সবার নগরী। জীবন ও জীবীকার সন্ধানে এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ একত্রিত হয়ে আছে। সারাদেশ থেকেই এখানে মানুষের ঢল নামছে। তাই এখানে অমুক শক্তিশালী অথবা অমুক দূর্বল এটা ভাবার কারণ নেই। দিল্লিতে বিজেপির ব্যাপকভিত্তিক পরাজয় (তারা ৭০টির মধ্যে আসন পেয়েছে মাত্র ৮টি, বাকিগুলো পেয়েছে আপ) এই প্রমাণ দেয় যে দলটি তার চরম অবস্থানে পৌঁছে গেছে এবং এখন পতনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপির ধারাবাহিক পরাজয়েও ভালো নয় কংগ্রেসের অবস্থান। দিল্লিতে কংগ্রেস একটি আসনও পায়নি।

অনেক পণ্ডিত এই যুক্তি দিতে পারেন যে ভারতীয় ভোটারেরা স্মার্ট এবং দিল্লির ভোটারেরা আরো স্মার্ট। তারা পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিজেপিকে ব্যাপকভাবে ভোট দিয়েছে। ওই নির্বাচনে আপ পেয়েছিল মাত্র একটি আসন (সেটিও দিল্লিতে নয়, পাঞ্জাবে)। কিন্তু রাজ্য বিধান সভার নির্বাচনে তারা বিজেপিকে শাস্তি দিয়েছে এবং সরকারি স্কুলের মানোন্নয়ন, স্কুল ফি হ্রাস করা, সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা (এবং তা ভারতের মধ্যে সবচেয়ে সস্তায়), সরকারি হাসপাতালের মান বাড়ানো ইত্যাদি কাজে দারুণ দক্ষতার জন্য কেজরিওয়ালকে পুরস্কৃত করেছে।

কেজরিওয়াল জাতিকে বিভক্ত করার বিরুদ্ধে ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পক্ষে বার্তা দিয়েছেন। তার বার্তাগুলো কঠিন হলেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল : কিভাবে কথা কম বলে কাজ বেশি করতে হয় তা আমাদের কাছ থেকে শিখুন। আমাদের জনগণকে বিভক্ত না করে ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করুন। আপনি হয়তো দুর্নীতির তথ্য উদঘাটনের জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে বিরোধী রাজনীতিবিদদের ভীতি প্রদর্শন করতে পারেন, কিন্তু আমাকে ভয় দেখাতে পারবেন না, কারণ আমি দুর্নীতিবাজ নই এবং আমি জানি এসব সংস্থা কিভাবে কাজ করে।

দিল্লির শাহীনবাগে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মুসলিম নারীদের প্রতিবাদ এবারে দিল্লির নির্বাচনে একটা বড় ইস্যু হয়ে উঠেছিল। রাস্তা আটকে শাহীনবাগ দিল্লিবাসীকে যে অসুবিধায় ফেলছে, সেটাকে কাজে লাগিয়ে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের অজস্র চেষ্টাও করেছিলেন যোগী আদিত্যনাথ-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা। শাহীনবাগ যে ওখলা কেন্দ্রে অবস্থিত, সেখানে থেকে রেকর্ড ব্যবধানে জেতা আপের আমানাতুল্লা খান বলছেন, “এই ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা আজ হেরে গেছে, জিতেছে উন্নয়ন।” “এটা তো বুঝতেই পারছেন, ওখলার হিন্দু ভাইরাও আমাকে ভোট না-দিলে আমি এত বড় মার্জিনে জিততেই পারতাম না।”

বিজেপি মুখপাত্র বিবেক রেড্ডি অবশ্য মনে করছেন, “স্থানীয় পর্যায়ে কেজরিওয়ালের জুৎসই কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী তুলে ধরতে না-পারা এবং তার সরকারের বিনি পয়সায় জল-বিদ্যুৎ বিলোনোর রাজনীতিই বিজেপির পরাজয়ের কারণ।” রাজ্য পর্যায়ে বিজেপির নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। সবাই নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের ছায়ায় বাস করছে। আর এটিই গেরুয়া ব্রিগেডকে আক্রান্ত করতে শুরু করেছে, ঠিক যেমন কংগ্রেসের ‘হাই কমান্ড কালচারের’ ক্ষেত্রে ঘটেছিল।

দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৬৩ শতাংশ। আগের নির্বাচনের চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ কম। আরও অতীত নির্বাচনী ইতিহাসের সঙ্গেও এটা বেশ বেমানান। ভোটের কমতি হয়তো এটা রাজ্য ভোট বলে। বিধানসভার নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের উত্তেজনা কম থাকে বলেই ৩৭ শতাংশ ভোটার হয়তো উৎসাহবোধ করেননি কেন্দ্রে যেতে। অথবা ভোটারদের একটা অংশ হয়তো দ্বিধান্বিত ছিল কাকে ভোট দেবে, সে বিষয়েও।

তবে কৌতূহলোদ্দীপক দিক হলো কম ভোটের এই নির্বাচনেই তুলনামূলকভাবে বেশি ভোট পড়েছে সংখ্যালঘু ভোটার বেশি আছে—এমন এলাকায়। দিল্লির মুস্তফাবাদ, মাটিয়ামহল ও সিলামপুরের মতো মুসলমান–অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় ৬৫ থেকে ৬৬ শতাংশ করে ভোট পড়েছে। এর মানে দাঁড়ায়, সংখ্যালঘু ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে বেশি আগ্রহী ছিলেন।

রাজ্যের ভোটে সংখ্যালঘুদের এই উৎসাহের মূলে ছিল জাতীয় রাজনীতির বিবেচনা। অনেকেই বলছেন, দিল্লির ভোট কেবল দিল্লির ছিল না। ভারতের সাম্প্রতিক প্রতিটি ভোট উৎসব এখন ‘বিজেপি বনাম অন্য’দের লড়াইয়ে পরিণত হচ্ছে। সেটা ছাত্র সংসদ, কলকারখানার সিবিএ ইউনিয়ন, বিধানসভা কিংবা লোকসভা নির্বাচন—যেটাই হোক।

আয়তনে ছোট হলেও দিল্লিতেই রয়েছে ভারতের সব অঞ্চলের মানুষ। দিল্লি এক অর্থে ‘মিনি ভারত’। ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন তাই এক অর্থে ভারতীয় রাজনীতির একটা ‘মিনি গণভোট’ ছিল। তাতে মোদি-অমিত শাহ জুটি হেরে গেছে। আবার আম আদমি পার্টি (এএপি) একা জিতেছে, সেটাও বলা যায় না। ভারতের মতো বিশাল দেশে নানা পরিচিতি জীবনের বাস্তবতা এবং ফেডারেলবাদই হতে পারে মোদির কেন্দ্রীভূতকরণের মোদি-শাহ জুটির পদক্ষেপের একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক বিকল্প। মোদি-শাহের কর্মপদ্ধতি পার্লামেন্টে কাজ করতে পারে, কিন্তু রাজ্য বিধান সভায় নয়।

সিএএ-এনআরসিবিরোধী তরুণদের পক্ষেই দিল্লিবাসী রায় দিয়েছে। নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে এসে একের পর এক এমন সব পদক্ষেপ নিয়েছে, যা ভারতে সামাজিক বিভক্তি বাড়িয়ে চলেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) কেন্দ্র করে ছাত্র-তরুণদের বিক্ষোভ। দীর্ঘস্থায়ী ও প্রথাবিরোধী এই জন-আন্দোলন আরএসএস-বিজেপির রাজনীতিকে সামাজিক পরিসরে বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। ফল হিসেবে ভারতের আর্থসামাজিক পরিসরের সবকিছুতে এখন ‘জাতীয়’ মাত্রার রাজনীতির প্রতিদ্বন্দ্বিতা। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার কথা এএপি ও বিজেপির মধ্যে। নির্বাচনী ইস্যু হওয়ার কথা ‘স্থানীয় বিষয়’। আঞ্চলিক দল এএপি বা আপ বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এখানে। তারপরও নির্বাচনটি হয়ে গেছে বিজেপি বনাম ‘সবার’ মধ্যে। দিল্লির জনজীবন আগামী পাঁচ বছর কে পরিচালনা করবেন, তার চেয়েও নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে কে সিএএ-এনআরসির সমর্থক আর কে নয়। ফলাফল সেভাবেই হয়েছে।

বিজেপির পরবর্তী বড় লড়াই হবে ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে। এখানেও বিজেপিকে লৌহমানবী মমতা ব্যানার্জির সামনে পড়তে হবে। মমতার আছে বাঙালির গর্ব আর গ্রাম উন্নয়নের বিপুল রেকর্ড। মমতা যদি তার রাজ্যে বড় কিছু শিল্প বিনিয়োগ নিয়ে আসতে পারেন তবে এখানেও ২০১৯ সালের লোকসভার নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি করা বিজেপির জন্য খুবই কঠিন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে একটি অপশনই খোলা থাকবে। আর তা হলো বিভাজন নয়, ঐক্যের রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। কিন্তু বিজেপি কি শিক্ষাগ্রহণ করবে তার টানা ষষ্ঠ পরাজয়ে?

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • ‘হেল্প সেল’ এর তৎপরতা বন্ধ করতেই ছাত্রদল নেতা নুরুকে হত্যা?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD