অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
অত্যন্ত সুন্দর, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও শতভাগ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে পেশাদার সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যকরী কমিটির নির্বাচন। সচেতন সাংবাদিকরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে এক বছরের জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন করেছেন। ডিআরইউ’র সদস্যরা সচেতন থাকায় আওয়ামীপন্থীরা কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। এমনকি ডিআরইউ থেকে বিএনপি-জামায়াতপন্থীদেরকে বিদায় করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের কথিত চেতনাধারীরা নিজেরাই চরম ভরাডুবির শিকার হয়েছে।
নির্বাচনে রফিকুল ইসলাম আজাদ সভাপতি ও রিয়াজ চৌধুরী সেক্রেটারি নির্বাচিত হয়েছে। তারা দুইজনই সাংবাদিক মহলে আওয়ামী বিরোধী হিসেবে পরিচিত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাকী যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আওয়ামীপন্থী সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বিজয়ী হয়েছেন। আর বাকী সবাই আওয়ামী বিরোধী বলে জানা গেছে।
ডিআরইউ দখলে নেয়ার জন্য আওয়ামীপন্থী সাংবাদিকরা কয়েক মাস ধরেই সুক্ষ পরিকল্পনা করে এগুচ্ছিল। সাংবাদিকরাও এনিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। বিশেষ করে নির্বাচনের অল্প কয়েকদিন আগে ডিআরইউর একটি ভবন উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে সরকারের দুইজন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সেক্রেটারির উপস্থিতি সচেতন সাংবাদিকরা ভালভাবে নেয়নি। নির্বাচনে একটি প্রভাব সৃষ্টির জন্যই মূলত আওয়ামীপন্থী সাংবাদিকরা তাদেরকে এনেছিল।
আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় ছিল, নির্বাচনের আগে আওয়ামীপন্থী সাংবাদিকদের স্লোগান ছিল-ডিআরইউ থেকে বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাংবাদিকদের হটিয়ে দেওয়া। বিএনপি-জামায়াতের সাংবাদিকদেরকে ডিআরইউ থেকে বের করে দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীদের বিজয়ী করতে হবে।
বিশেষ করে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার ক্ষমতাসীনদের দালাল হিসেবে পরিচিত ফরাজী আজম হোসেন প্রতিদিন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে উস্কানি মূলক পোস্ট করতেন। ডিআরইউতে বিএনপি-জামায়াতের সাংবাদিকদেরকে ঢুকতে দেবেন না বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়নি। চেতনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ফরাজী আজমলরা নিজেরাই অচেতন হয়ে গেছে। আর ফরাজী আজমল ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি প্রেসক্লাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতে লাথি দিয়েছিলেন।
এছাড়া, আওয়ামীপন্থী অন্য সাংবাদিকরাও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়াসহ বিভিন্নভাবে বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাংবাদিকদেরকে ডিআরইউ থেকে বিদায় করার জন্য প্রচার প্রচারণা চালিয়েছে। কিন্তু, তাদের অপপ্রচারে সচেতন সাংবাদিকরা সাড়া দেয়নি। তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আওয়ামী চেতনাকে গভীর পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছে।
ডিআরইউর নবনির্বাচিত কমিটি:
সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সহ সভাপতি নজরুল কবীর, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক হেলিমুল আলম বিপ্লব, অর্থ সম্পাদক জিয়াউল হক সবুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাবীবুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক জাফর ইকবাল, নারীবিষয়ক সম্পাদক রীতা নাহার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুর রহমান রুবেল, তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিজান চৌধুরী, আপ্যায়ন সম্পাদক এমএইচ আখতার, কল্যাণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ।
কার্যনির্বাহী সদস্য মাইনুল আহসান, এসএম মিজান আহমেদ মুশফিকা নাজনীন, কামরুজ্জামান বাবলু, ইমরান মজুমদার, মুরাদ হোসেন, সায়ীদ আবদুল মালিক।
এবার এক হাজার ৬৩৫ ভোটারের মধ্যে এক হাজার ৩২৯ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে ২১ পদে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০২০ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটি আগামী এক বছর ডিআরইউর নেতৃত্বে থাকবেন।