অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচন বয়কট করেছিল বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন প্রধান বিরোধী জোট। এছাড়া ছোটখাট আরও অনেক রাজনৈতিক দলও বিনাভোটের এই নির্বাচন বয়কট করেছিল।
আর নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের জাতীয় পার্টিও। কিন্তু, সরাসরি ভারতের নির্দেশে শেখ হাসিনা তার বাহিনী দিয়ে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে এরশাদকে অসুস্থ বানিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করে।
ডিজিএফআইয়ের চাপের মুখে এরশাদ হাসপাতাল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিতে বাধ্য হন। জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণে নির্বাচনে ভোটের আগেই ১৫৩ জন এমপি বিনাভোটে নির্বাচিত হন। এজন্য সরকারের বৈধতার প্রশ্নটি এখনো রয়েছে। অনেক আইনজ্ঞই মনে করেন, বর্তমান সংসদের কোনো বৈধতা নেই। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে এমপি-মন্ত্রী যারা আছেন সবাই অবৈধ। যেহেতু জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাই অবৈধ।
এদিকে, শেখ হাসিনা বিনাভোটে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে এরশাদের জাতীয় পার্টিকে বসালেন প্রধান বিরোধীদলের আসনে। আর বিনাভোটের নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য পুরষ্কার হিসেবে জাতীয় পার্টিকে ৩টি মন্ত্রণালয় এবং এরশাদকে নিজের বিশেষ দূত বানালেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পেয়ে মহা খুশী এরশাদও।
তবে, সরকারের সাড়ে চার বছর পর এসে জানা গেছে, আজ পর্যন্ত এরশাদকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। বিনা প্রজ্ঞাপনেই নিজেকে বিশেষ দূত হিসেবে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন এরশাদ।
আর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি, তাই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত পরিচয় দেয়া এরশাদের জন্য বৈধ নয়। তার এ পদ অবৈধ।
অপরদিকে, টিআইবির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ দূত হিসেবে এরশাদের পেছনে প্রতিমাসে রাষ্ট্রে ব্যয় হচ্ছে ৫ লাখ টাকা। এ হিসেবে এরশাদ প্রতি বছর সরকারি কোষাগার থেকে ৬০ লাখ টাকা নিচ্ছেন। বর্তমান সরকারের ৪ বছর ৫ মাস সময়ে সরকারি কোষাগার থেকে মোট ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন।
আইনজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু এরশাদ অবৈধ বিশেষ দূত। তাই রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এখন পর্যন্ত এরশাদ যত টাকা নিয়েছেন সবই অবৈধ। আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এটা এক প্রকার দুর্নীতি। বিশেষ দূত হিসেবে প্রজ্ঞাপন না হওয়ায়, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে সমুদয় টাকা এরশাদকে ফেরত দিতে হবে। কেউ বলছেন এরশাদকে হরেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর অবৈধ বিশেষ দূত।