অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে বিদ্যামান কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম দিকে অধ্যাপক জাফর ইকবাল সমর্থন দিলেও পরে তিনি পল্টি মেরেছেন। ছাত্রদের আন্দোলনে সমর্থন প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে তিনি বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরেছেন। তার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ঢাকা শহরের রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করায় সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে শাহবাগে গুরুত্বপূর্ণ একটি হাসপাতাল থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চরম ভোগান্তির বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেছেন।
দাবি আদায়ের জন্য রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলনের জন্য সাধারণ মানুষ ও রোগীদের কষ্ট হয় বলে জাফর ইকবাল দাবি করলেও পেছনের দিকে তাকালে প্রমাণিত হয় তার এ দাবি সম্পূর্ণ ভাওতাবাজি।
কারণ, ২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধের বিতর্কিত বিচারে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী আব্দুল কাদের মোল্লাকে সরকারের গৃহপালিত ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় না দেয়ার প্রতিবাদে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইমরানকে দিয়ে সরকার শাহবাগে একটি মজমা বসায়। যার নাম দেয়া হয় গণজাগরণ মঞ্চ। ঢাকাস্থ ভারতের হাইকমিশন থেকে সাপ্লাই দেয়া বিরিয়ানি খেয়ে শাহবাগ মোড়ে বসে তারা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। শাহবাগে বসে তারা আন্দোলনের নামে বিতর্কিত সব কর্মকাণ্ড শুরু করে। ইচ্ছেমত আজ একে তো কাল ওকে রাজাকার বানিয়ে স্লোগান তোলা হয় সেখান থেকে।
রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকাটি দখল করে গুরুত্বপূর্ণ সব সড়ক বন্ধ করে দীর্ঘদিন আন্দোলন করায় রাজধানীবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিশেষ করে পিজি হাসপাতাল ও বারডেম হাসপাতালের রোগীদের কষ্ট ছিল সীমাহীন।
দেখা গেছে, ওই সময় এই জাফর ইকবালরাও এখানে এসে ভারতীয় হাইকমিশনের দেয়া বিরিয়ানি খেয়েছেন। ছাত্রলীগ ও ধর্মবিদ্ধেষী বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে জামায়াত নেতাদের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিয়েছেন। কিন্তু, মানুষের সীমাহীন কষ্টের কথাটা একবারও উচ্চারণ করেননি। একবারও ভেবে দেখেন নি গুরুত্বপূর্ণ দুইটি হাসপাতালের রোগীদের সীমাহীন কষ্ট ও হয়রানির বিষয়টি। বরং জাফর ইকবালের দাবি ছিল ওই সময় শাহবাগে নাকি মুক্তিযুদ্ধের কথিত চেতনা ফিরে এসেছিল। শাহবাগে এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি তখন ইমরানদেরকে উৎসাহ দিয়েছেন।
অথচ, সেই জাফর ইকবাল আজ বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলছেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনের কারণে নাকি রাজধানীর মানুষের কষ্ট হচ্ছে। রোগীরা নাকি হাসপাতালে আসতে পারেনি। এর চেয়ে দ্বিমুখি চরিত্র আর কী হতে পারে?