অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের মানুষের কাছে আওয়ামী লীগ একটি সেক্যুলার ধর্মবিদ্বেষী দল হিসেবেই পরিচিত। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এদেশে কুরআন-সুন্নাহ, ইসলামি আদর্শ, ইসলামি সংস্কৃতি, ইসলামি বিধি-বিধান ও হুকুম-আহকাম, মাদরাসা-মসজিদ, ইসলামি শিক্ষা, ইসলামি দল ও আলেম সমাজের ওপর যত আঘাত এসেছে, প্রায় সবই হয়েছে আওয়ামী লীগের শাসনামলে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে তার দলের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশে ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও ক্ষমতার স্বার্থে তারা ধর্মকে বেশি ব্যবহার করছে। জাতীয় নির্বাচন আসলেই তাদের মুখ থেকে ধর্মের বাণী শোনা যায়। যদিও ক্ষমতায় গিয়ে পরে প্রথম আঘাতটাই করে ধর্মের ওপর।
১৯৭৫ সালের পর থেকে দীর্ঘ ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল আওয়ামী লীগ। দলটির অতীত অপকর্মের কারণে ৯১ সালের নির্বাচনে জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। এরপর ৯৬ সালের নির্বাচনের আগে সৌদি গিয়ে ওমরা পালন করে শেখ হাসিনা দেশে এসে ধর্মীয় লেবাস ধরলেন। মাথায় পট্টি আর হাতে তসবিহ নিয়েই যোগ দিতেন নির্বাচনী জনসভায়। ওই সময় প্রতিটি সভা-সমাবেশেই চোখের পানি ফেলে অতীত ভুলের জন্য মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতেন। মাথায় পট্টি আর হাতে তসবিহ দেখে মানুষ মনে করেছিল হয়তো আওয়ামী লীগ ভাল হয়ে গেছে।
কিন্তু, ৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেই আস্তে আস্তে খোলস পাল্টাতে থাকনে শেখ হাসিনা। নিজের মাথার পট্টি আর হাতের তসবিহ ফেলে দিয়ে এদেশের ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষের ওপর শুরু করেন নির্যাতনের স্টিমরোলার। সংসদে পাস করা হয় কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন। ৭৪‘র স্টাইলে শুরু করে দেশের বিশিষ্ট আলেম ওলামাদের ওপর নির্যাতন। এমনকি কুকুরের মাথায় টুপি দিয়েও পোস্টার টানানো হয়েছিল শেখ হাসিনার সেই আমলে।
এরপর ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে আবারও ওমরা করে ধর্মী লেবাস পরেন শেখ হাসিনা। তবে, সেইবার জনগণ আর তাকে বিশ্বাস করেনি। শেখ হাসিনার নৌকার চরম ভরাডুবি হয়।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম আঘাতটাই হানে ইসলামের ওপর। শেখ হাসিনার বিগত ৯ বছর শাসনামলে ইসলামের এমন কোনো দিক বাদ নেই যার ওপর আঘাত করা হয়নি। বলা যায় বাংলাদেশে ইসলাম এখন ডানা কাটা পাখির মতো পঙ্গু। বিগত কয়েক বছরে এদেশের আলেম ওলামা, ইসলামি সংগঠনের নেতাকর্মী ও ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষকে জঙ্গি আখ্যাদিয়ে তাদের ওপর সীমাহীন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। দেশের মসজিদ-মাদরাসাগুলোতে এখন কুরআন-হাদীসের আলোচনা করা যায় না। এমনকি কারো হাতে কুরআন-হাদীসের বই দেখলেই তাকে জঙ্গি বলে গ্রেফতার করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার বাংলাদেশ থেকে ধর্মের নাম নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।
কিন্তু, নির্বাচন যখন আসছে, তখন আবারো ধর্মের দোহাই দিয়ে ভোট চাচ্ছেন শেখ হাসিনা। রোববার চাঁদপুরে জনসভায় বলেছেন, নূহ (আ.) এর নৌকার মতো নাকি তার নৌকা মানুষকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবে।
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবখানেই বইছে সমালোচনার ঝড়। মানুষ বলছে, শেখ হাসিনা এবার যতই মুখে ধর্মের বাণী শোনাক না কেন কাজ হবে না। আগামী নির্বাচনে তার নৌকা আর ভাসবে না। শেখ হাসিনা ধর্মের নামে ভন্ডামি করে এবার আর পার পাবে না।