অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখিত একটা লেখার আংশিক বিকৃত করেছে তথ্যমন্ত্রণালয়। অভিযোগ উঠেছে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর তত্ত্বাবধানে এই বিকৃতি করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া নিজের লেখা বিকৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে আজ বিভিন্ন পত্রিকায় একটি ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংবাদপত্রে একটি ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছিলো। সেই ক্রোড়পত্রে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
‘ইতিহাসের সৃষ্টি, ইতিহাসের স্রষ্টা’ শিরোনামে প্রকাশিত তার লেখাটির একটি বাক্যাংশ “এবং সংবিধান সংশোধন করে একদলীয় সরকারব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়” এর স্থলে বিকৃত করে লেখা হয়েছে “এবং সরকার ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়”। বাক্যাংশের এমন পরিবর্তনের জন্য লেখক আনিসুজ্জামানের কাছে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত আনিসুজ্জামানের ব্যাখ্যাটি অ্যানালাইসিস বিডির পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংবাদপত্রে যে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে, সেই ক্রোড়পত্রে তাঁর লেখা একটি লেখার একাংশের ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। ব্যাখ্যায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘যে ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে আমার লেখার একটি বাক্যাংশ এভাবে মুদ্রিত হয়েছে: “এবং সরকার ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়।” মূল বাক্যাংশটি ছিল: “এবং সংবিধান সংশোধন করে একদলীয় সরকারব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়।” এই পরিবর্তন সাধনে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর আমার অনুমতি নেয়নি, আমার সঙ্গে আলোচনারও প্রয়োজন বোধ করেনি। সবার অবগতির জন্য বিষয়টি আমি জানাতে চাই।’
তথ্যমন্ত্রণালয় কর্তৃক একজন সম্মানিত ইমেরিটাস অধ্যাপকের লেখা তার অনুমতি ছাড়া এভাবে বিকৃত করায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। তথ্যমন্ত্রণালয় ইতিহাসের জ্বলন্ত একটি সত্যকে বিকৃত করে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্লেষকরা।
দেশের শীর্ষ ও সম্মানিত একজন বুদ্ধিজীবির বক্তব্যকে সরকার এভাবে বিকৃত করে উপস্থাপন করতে পারলে, সাধারণ মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে, সেটা ভেবেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বুদ্ধিজীবি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।